লক্ষ্মীপুরঃ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খানের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।
রবিবার ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। তবে যে সব শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়েছে- তাদের বেশিরভাগই জানতো না আন্দোলনের উদ্দেশ্য। এনিয়ে উপজেলাব্যাপী আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। আন্দোলনরত একজন শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করলে সে বলে,আমরা আন্দোলনে এসেছি এটা কি অপরাধ? আমাদেরকে আসতে বলেছে তাই এসেছি। কে আসতে বলেছে এমন প্রশ্ন করলে তারা এড়িয়ে যায়।
জানা গেছে, গত ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের এক চিঠির মাধ্যমে জানা যায় ইউএনও ইমরানকে বান্দরবান সদর উপজেলায় বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু গতকাল রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বদলির আদেশ প্রত্যাহার ও কর্মস্থলে পুনর্বহালের দাবিতে রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের থানা সংলগ্ন ট্রাফিক মোড় ( শহীদ ওসমান চত্বর ) প্রায় তিন ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সভা করেছেন রায়পুরের সাধারণ ছাত্র জনতার ব্যানারে সরকারি মার্চেন্টস একাডেমি, বালিকা, এলএম বিদ্যালয়সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
পরে সেনাবাহিনী উপস্থিত হওয়া মাত্রই সরে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তবে এসব নিয়ে রায়পুর সরকারি মার্চ্চেন্টস একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোস্তফা ফারুকী বলেন, কয়েকজন সমন্বয়ক পরিচয়ে এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গেছে। সরকারি কর্মকর্তারা বদলি হবে এটি স্বাভাবিক। আমাদের শিক্ষার্থীরা না জেনে গেছে। আমরা সামনে আরো সর্তক হবো।
একই জবাব দিয়ে রায়পুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিশ্বায়লয়ের প্রধান শিক্ষক জয়দেব বলেন, এটি আসলে অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। কয়েকজন এসে আমাকে বললো একটি মানববন্ধন হবে, সেখানে মার্চ্চেন্টস ও এলএম স্কুলের শিক্ষার্থীরা আসবে।
আমাদের একজন ছাত্রী দেন। আমাদের প্রতিষ্ঠান থানার সামনে হওয়া মাঝে মধ্যে মানবিক কারণে আমরা বিভিন্ন মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের পাঠাই। কিন্তু বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন হবে এটি আমার জানা ছিলো না এবং আমাদের শিক্ষার্থীরাও প্রথমে জানে না। পরে যখন জানতে পারি আমাদের শিক্ষক পাঠিয়ে ছাত্রীদের নিয়ে আসা হয়।
এদিকে অবরোধ কর্মসূচিতে উপজেলা ছাত্রদলের কয়েকজনকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। আন্দোলনরতদের মধ্যে যারা নেতৃত্বে ছিলেন, তারা বলেন, ইউএনও ইমরান খানকে তার দায়িত্বে পুনর্বহালের দাবিতে আমরা সড়কে নেমেছি। এটি যৌক্তিক দাবি। এবং তারা লক্ষ্মীপুর জেলাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারিও দেয়।
অন্যদিকে রায়পুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা বিষয়টিকে দেখছেন অন্যভাবে। প্রতিনিধি আবদুল মোতালেব গণমাধ্যমকে বলেন, সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে কে বা কারা অবরোধের আয়োজন করেছে, তা জানা নেই।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আকিব বলেন, গতকাল আন্দোলন চলাকালীন সময়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের বক্তব্য নিতে গেলে আমাকে কয়েকজন বাঁধা প্রদান করে এবং আমাকে তাদের বক্তব্য নিতে বারণ করে। কিন্তু যখন বক্তব্য নিতে যাই তখনই আমাকে তারা হেনস্তা ও মারার হুমকিও দেয়। আমি থানায় একটি জিডি করেছি।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, গতকালই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদ আরমান ও সেনাবাহিনী পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কর্মসূচি কারা করেছে তাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, ১৫ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সকালে ইউএনও ইমরানকে অপসারণ চেয়ে ও বিকেলে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করা হয়। সাধারণ ছাত্র-জনতার ব্যানারে ওইদিন দুটি কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ওইদিন জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/১২/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.