ঢাকাঃ সাত কলেজের ২ লাখ ৬৭ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে পড়ছে এবং নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সেজন্য আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করতে এবং নতুন কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার বিকেল সোয়া ৩টায় ঢাবির মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাবির আরবি বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন বলেন, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের বিষয়টা আজকের নয়। আমরা ২০১৯ সাল থেকে আন্দোলন করছি। সেসময় অধিভুক্তি বাতিলের আন্দোলনে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলামও অংশ নিয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে সাত কলেজের জন্য আলাদাভাবে ভবন নির্মাণ করা হবে। এটি একটি অযৌক্তিক বিষয়। তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী। এই ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার এবং প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যর্থ। সেখানে আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাত কলেজের প্রায় ২ লাখ ৬৭ হাজার শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নিচ্ছে। এর ফলে আমরা প্রতিনিয়ত নানারকম সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি।
এ শিক্ষার্থী বলেন, অধিভুক্তির ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক কার্যক্রমে বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকরা সাত কলেজের খাতা মূল্যায়ন, কারিকুলাম, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, ব্যবহারিক পরীক্ষা ও ভাইভা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবহেলার শিকার হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এবং ফল প্রকাশেও বিলম্ব হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে সাত কলেজের জন্য ভবন নির্মাণের বিরোধিতা করে মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তীব্র সিট সংকট থাকার পরও সাত কলেজের জন্য ভবন নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক র্যাংকিং গণনার ক্ষেত্রেও অধিভুক্ত সাত কলেজকে বিবেচনা করা হয় বিধায় ঢাবির অবস্থান নিম্নমুখী হচ্ছে। তাই আমরা অন্তর্র্বতী সরকারসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাই, যেন দ্রুত সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করা হয়।
এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দেরি করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে নাফিউর রহমান রাকিব নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন নতুন করে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি না করেন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা কেউ চাই না সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত থাকুক। এরপরও যদি আমাদের এ দাবি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৮/১১/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.