তানজিদ শাহ জালাল ইমন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম দেবশ্রী রায়। কক্ষের দরজা ভেঙে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছে। দেবশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷গত রবিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে দেবশ্রীর স্বামীর কর্মস্থলের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।তার স্বামী বরগুনার গার্লস স্কুলের সহকারী শিক্ষক কঙ্কন রয়।
বরগুনা থানা সূত্রে জানা যায়, দেবশ্রী রায় তার স্বামীর সাথে বরগুনার সদরে থাকতেন। সেখানে কক্ষে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশ দেবশ্রীকে উদ্ধার করে।প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সে আত্মহত্যা করেছে।দেবশ্রীর মৃত্যুতে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট বোঝা যাবে বলে জানানো হয়।মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল বারেক। দেবশ্রীর গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার তালা উপজেলায়।শশুরবাড়ি খুলনায়।তার স্বামীর চাকরি সূত্রে তিনি বরগুনায় থাকতেন।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে তার এক সহপাঠী জানান, দেবশ্রী ছিলো শান্তশিষ্ট। আসলে কি কারণে আত্মহত্যা করল তা জানা নেই।তবে পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসল ঘটনা কি।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন বলেন, তার বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তার লাশ গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তার ক্লাস প্রতিনিধি আমাকে জানিয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৯/০৩/২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
পথশিশুদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পথশিশুদের পরিস্থিতি বিষয়ক গবেষণাপত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, যারা পথে থাকে তাদের নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে। তদের অসহায়ত্ব অনেক বেশি। তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়, অনেক রকমের নির্যাতনেরও শিকার হয়।
রাতের অন্ধকারে খুবই অনিরাপদ একটা অবস্থার মধ্যে থাকে। আর যারা রাতে পরিবারের কাছে ফিরে, এদেরও থাকে নানা সমস্যা। নানা কারণে পথশিশু হয়। পরিবার ভেঙে যাওয়া, অতিদারিদ্র্য ও নানাবিধ সমস্যার কারণে শিশুরা পথে থাকে।
মন্ত্রী পথশিশুদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেওয়ার বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, পথ চলতি মানুষ কীভাবে তাদের সঙ্গে আচরণ করে তার প্রভাব তাদের ওপরে পড়ে। আমাদের প্রত্যেককে তাদের প্রতি সিমপ্যাথি দেখাতে হবে।
আমরা কতজন এ শিশুদের একবার ভালো করে দেখি? আমরা হয়তো জীবন বদলে ফেলতে পারবো না, কিন্তু যে কয়েক সেকেন্ডের জন্য তাদের সাথে আমাদের একটা যোগাযোগ ঘটলো, সেই কয়েকটা সেকেন্ডে তাদের প্রতি যদি আমাদের সহমর্মিতা থাকে, তার প্রতি আচরণে, আমাদের কথায় তার জীবনে একটা পরিবর্তন এনে দিতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা যদি এই বাচ্চাগুলোকে স্বপ্ন দেখাতে পারি, তাহলে তারা স্বপ্নের দিকে নিজেদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। যদি তাদের প্রতি আচরণটাই সেই রকম ইতিবাচক না হয়, তাহলে কিন্তু তারা স্বপ্ন দেখতে সক্ষম হবে না।
মন্ত্রী সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও পথশিশুদের সমাজের মূলধারায় আনতে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পথশিশুদের আশ্রয়, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনে অনেক কাজ চলমান রয়েছে।
তারপরও এ গবেষণায় তাদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গেলো যা ভবিষ্যতে নীতি নির্ধারণী বিষয়ে কাজ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হেসেন (রিমি) বলেন, এ গবেষণা ভবিষ্যতে পথশিশুদের জন্য কাজ করতে সহায়তা করবে। শিশুদের জন্য একটি সহনশীল সমাজ করতে হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১৮/০৩/২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ঢাকা: পবিত্র রমজান উপলক্ষে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক, খিলক্ষেত ও কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য মাসব্যাপী ইফতারের ব্যবস্থা করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।
এই উদ্যোগের ফলে এসব এলাকার ৩৫টি মাদরাসার সাড়ে সাত হাজারের বেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রতিদিন তৃপ্তিসহকারে ইফতারের সুযোগ পাচ্ছেন।
এতে সন্তোষ জানিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা।
সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে আসরের নামাজের আগ মুহূর্তে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার শাইখ যাকারিয়া ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে ২০০ জনের জন্য পাঠানো ইফতার মাদরাসায় এসে পৌঁছেছে।
যেখানে ছিল ইফতারের অতি পরিচিত পদ ছোলা ভুনা, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, জিলাপি, নানা রকমের ফলসহ বাহারি বিভিন্ন পদ। এই ইফতার পেয়ে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।
শাইখ যাকারিয়া ইসলামি রিসার্চ সেন্টারের শিক্ষা পরিচালক মুফতি শরীফ মালিক বলেন, এই মাদরাসায় ৩৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী আছেন, আর শিক্ষক আছেন ২৪ জনের মতো। রমজান উপলক্ষে কিছু শিক্ষার্থী ছুটিতে। কুড়িল ও কাউলার দুই ক্যাম্পাস মিলিয়ে বর্তমানে ২৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী আছেন। যাদের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপ খাবারের ব্যবস্থা করেছে। এতে আলহামদুলিল্লাহ সবার খুব ভালোভাবেই হয়ে যায়।
মাদরাসার আবাসন সচিব মুফতি বেলাল আহমেদ বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের জন্য যে খাবার পাঠায় তা আলহামদুলিল্লাহ সবার ভালো মতো হয়ে যায়। ।
জানা গেছে, বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে চলতি রমজানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দৈনিক ১৮ থেকে ২০ হাজার মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসা, নূরের চালার মাদানিয়া নূরিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা, বাড্ডার স্বাধীনতা সরণির দারুল ফুরকান মাদরাসা, খিলক্ষেত এলাকার কুড়িল চৌরাস্তার মাদরাসাতুস সুন্নাহ, কুড়িল জোয়ারসাহারা মহিলা মাদরাসা, খিলক্ষেতের ইসাতুস সুন্নাহ মাদরাসা, মারকাজুল কুরআন ইসলামিয়া মাদরাসা খিলক্ষেত, জামিয়া ইসলামিয়া আবাবিয়া খিলক্ষেত বাজার, হাজি আবদুল মালেক মাদরাসা খিলক্ষেত, জামিয়া আশরাফিয়া বায়তুল কুরআন খিলক্ষেত, জামিয়া কাশেমুল উলুম মাদরাসা কাওলা, দারুল উলুম দর্জিপাড়া মাদরাসা বোট ঘাট, জান্নাতুল বানাত মহিলা মাদরাসা খিলক্ষেত, এমদাদিয়া নূরানিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা খিলক্ষেত, তাজিবুল বানাত আদর্শ বালিকা মাদরাসা খিলক্ষেত, বাইতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা নামাপাড়া, এসলাহুল উম্মাহ মাদরাসা বটতলা খিলক্ষেত, আবদুল আজিজ রুস্তম আলী নূরানি হাফিজিয়া মাদরাসা, রুস্তম আলী ওবাইয়দিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা খিলক্ষেত, এহদাউল উম্মাহ মাদিনাতুল উলুম মাদরাসা, আশকোনা সুন্নিয়া মাদরাসা, শায়খ যাকারিয়া ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার কুড়িল, বসুন্ধরার মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ, মাদরাসা মদিনাতুল উলুম, মাদরাসা দারুস সুন্নাহ, হাজি কোমর উদ্দীন মাদরাসা, মাদরাসা সওতুল কুরআন, তালিমুল কুরআন মাদরাসা, শামসুল উলুম মাদরাসা, দারুল এহসান হাফিজুল কুরআন মাদরাসা মিরপুর, আলহাজ আবদুল মালেক মাদরাসা খিলক্ষেতসহ মানিকগঞ্জ, রংপুর, কেরাণীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় এবং ছিন্নমূল মানুষের মাঝে মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১৮/০৩/২০২৪
যশোরঃ জেলায় অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্ধেকেই প্রধান শিক্ষক নেই। সেসব বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সহকারী শিক্ষকরা সঠিকভাবে পাঠদান করতে পারছেন না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস মতে, যশোরের আটটি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের মোট পদ রয়েছে এক হাজার ২৮৯টি। এরমধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ৬৮৬ জন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক ৩৩২ জন। এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ২৭১ জন। অভয়নগরে প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১১৭টি। কর্মরত রয়েছেন ৫৭ জন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ২৯ জন। আর ৩১ জন ভারপ্রাপ্ত। কেশবপুরে প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১৫৮টি। কর্মরত রয়েছেন ৯৯ জন। চলতি দায়িত্বে রয়েছেন ৪২ জন। আর ১৭ জন রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত। চৌগাছায় প্রধান শিক্ষকের পদ ১৩৯টি। কর্মরত রয়েছেন ৭৩ জন। চলতি দায়িত্বে ৩২ জন। আর ৩৪ জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ঝিকরগাছায় প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১৩১ টি। কর্মরত রয়েছেন ৬৯ জন। ৩১ জন চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন ৩১ জন। বাঘারপাড়ায় প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১০২ টি। কর্মরত রয়েছেন ৫০ জন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক ৩২ জন। ২০ জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। মণিরামপুরে প্রধান শিক্ষকের মোট পদসংখ্যা ২৬৭। কর্মরত রয়েছেন ১২৯ জন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক ৭৭ জন। ৬১ জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। শার্শায় প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১২৫টি। ৫৮ জন কর্মরত রয়েছেন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ৩৫ জন। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করছেন ৩২ জন। এবং সদর উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ২৫০টি। কর্মরত রয়েছেন ১৫১ জন। চলতি দায়িত্বে রয়েছেন ৫৪ জন। আর ৪৫ জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদরের দত্তপাড়া সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুর জব্বার জানান, যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই সেখানে বাধ্যতামূলক একজন সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এজন্য তিনি বাড়তি শ্রম দেন। তাকে বিভিন্ন কাজে উপজেলা সদরেও যেতে হয়। আবার নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাতে হয়। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শ্রেণিকক্ষে আগের মতো সময় দিতে পারেন না।
এদিকে কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, যারা চলতি দায়িত্ব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন তাদের বেশিরভাগ কাজের প্রতি আন্তরিক না। তাদের একটাই চিন্তা-পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক আসলে তাদেরতো চেয়ার ছেড়ে দিতে হবে। তাহলে খামাখা কেন বেশি কাজ করতে যাবেন! ফলে, সহকারী শিক্ষকরা ইচ্ছেমতো চলাফেরা করেন। আবার সহকারী শিক্ষকদের কোনোকিছু বলতে গেলে অনেকেই তা আমলে নিতে চান না। তাদের মানসিকতা, সবাইতো সহকারী শিক্ষক! তাহলে কেন চলতি দায়িত্ব কিংবা ভারপ্রাপ্তের কথায় তারা চলতে যাবেন।
আবার অনেক ক্ষেত্রে চলতি দায়িত্ব কিংবা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়েই অনেকেই সহকারী শিক্ষকদের ওপর ইচ্ছেমতো ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করেন। আর তখনই বাধে বিপত্তি। অনেক সহকারী শিক্ষক এই ছড়ি ঘোরানো পছন্দ করেন না।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইসমাইল হোসেন বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক যেভাবে স্কুল চালাতেন ভারপ্রাপ্তরা সেভাবে চালাতে পারেন না। প্রধান শিক্ষক না থাকায় পাঠদানে কিছুটা বিঘ্ন হওয়াটা স্বাভাবিক। কারণ ভারপ্রাপ্তদের অতিরিক্ত করতে হচ্ছে। ফলে, তারা অনেক কাজই ঠিকমতো করতে পারছেন না। স্কুলের জন্য প্রধান শিক্ষক খুবই জরুরি।
যশোর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হান্নান বলেন, প্রতি বছরই অনেক প্রধান শিক্ষক অবসরে যান। কিন্তু প্রতি বছর তো প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় না। এজন্য পদ শূন্য থেকেই যায়। তবে শূন্য পদ পূরণে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, ফেনীঃ জেলার কলেজ শিক্ষক সমিতির আয়োজনে শতভাগ উৎসব বোনাসের দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।কর্মসূচিতে জেলার এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অংশ গ্রহণ করে তাদের বঞ্চিত হাওয়ায় বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেছেন।
সোমবার ফেনীর শহীদ মিনারে মানবন্ধন থেকে এ দাবি করেন তারা।
সংগঠনের সভাপতি ফারুক আহমাদ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ হোসেন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কে ১০০% উৎসব বোনাস দিতে হবে।
দীর্ঘ ২১ বছর ২৫% বোনাস দিয়ে শিক্ষকদের সাথে টালবাহানা করা হয়েছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা নিয়ে চলা খুবই কষ্টকর।
সারাদেশে প্রায় ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বেসিক বেতনের পুরো অংশ সরকার দিলেও দুই ঈদে মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা দেয়া হয়। ফলে চাকরিতে প্রবেশের পর একজন শিক্ষক উৎসব ভাতা পান তিন থেকে চার হাজার টাকা। কলেজের শিক্ষক পান সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা।
বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি, মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বর্তমান বাজারে এই সামান্য টাকায় কোনোভাবেই প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়। ফলে পাঁচ লাখ শিক্ষকের মনে নেই উৎসব আনন্দ। তাই শতভাগ বোনাসের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পন্ন করার জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
এই সময় বক্তব্য রাখেন চাঁদগাজী কলেজের সহকারী অধ্যাপক সাইফুল্লাহ ভুঁইয়া, আবদুল হক চৌধুরি ডিগ্রি কলেজের মনির উজ জামান, সামছুল করিম কলেজের প্রভাষক শিরীন রহমান, বক্তার মুন্সী শেখ শহীদুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের বিবি রহিমা, রাজাপুর কলেজের আব্দুল হাইয়ুম জুয়েল, ফুলগাজী মহিলা কলেজের সাইদুল হক, নাসিম কলজের লোকমান হোসেন সুমন। পেশাজীবী সংগঠন এর পক্ষ থেকে এডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরি, এডভোকেট সমীর কর।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪
ঢাকাঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক। ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে ড. মো. আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, এখনও কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। প্রজ্ঞাপন জারির আগে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ৪ বছরের জন্য ইউজিসিতে যোগদান করেন। এর আগে তিনি চবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেছেন। অধ্যাপক তাহের ডেপুটেশনে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং লিয়েনে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জীবন বীমা কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও কর্পোরেশনের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অধ্যাপক আবু তাহেরের জন্মস্থান চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। সেখানকার বাবুনগর প্রাইমারী স্কুলে প্রাথমিক, কাঞ্চনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসির পর চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনহা বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা সম্পন্ন করেন তিনি।
কর্মজীবনের শুরুতে ১৯৮৫ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কমার্স কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন আবু তাহের। ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৪ সালে তিনি ওই বিভাগের অধ্যাপক হন। তার রচিত ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ক ১৭টি বই অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠ্য হিসেবে বিবেচিত। দেশে বিদেশে তার প্রকাশিত প্রবন্ধের সংখ্যা ১০৭ এর বেশি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪
শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ ঈদের আগেই বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেওয়া এবং একই সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের দাবি জানায় বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, একমুখী, সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষাব্যবস্থা চালুর মধ্য দিয়েই শিক্ষাক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিফলন সম্ভব।
শিক্ষক নেতারা আরো উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে সবার আগে শিক্ষকদের আর্থিক সমস্যার সমাধান ও সামাজিক মর্যাদা সুনিশ্চিত করতে হবে।
আরো জানানো হয়, বেসরকারি শিক্ষকদের সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অনুরূপ বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা দিতে হবে। এছাড়া এনটিআরসি-এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা বন্ধের জন্য পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে ‘প্যানেল’ গঠন করা ও পদ শূন্য হওয়ার সঙ্গে- সঙ্গে নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪
ঢাকাঃ শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের ওপর। আর তাকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বিভাগটির চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের ওপর। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম।
সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পরে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের ওই শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘২০২১ সালে আমার বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত শিক্ষক আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিতে থাকে। এতে আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়। অনার্সের ফাইনালের ভাইভায় আমাকে ফেল করানো হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারছি না, আমাকে একঘরে করা হয়েছে। কখন আমাকে মেরে ফেলা হয় সেটা জানি না। শুধু আমি না, আমার পরিবারকেও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে এবং হেনস্তা করছে। বর্তমান এ অবস্থা থেকে বাঁচতে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ডিবি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এর আগে এ ছাত্রী বিভিন্ন জায়গায় বিচার দিয়েছেন। কিন্তু তিনি বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। মিমের অভিযোগ পেয়েছি। তার নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা নিশ্চিতের চেষ্টা করবো। তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে ডিবির সাইবার টিম।’
তিনি জানান, ‘আরও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা ছাত্রকর্তৃক যৌন হয়রারির শিকার হলে ডিবিতে লিখিত অভিযোগ দিতে পারেন।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪
ঢাকাঃ সাম্প্রতিক বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ। গত কয়েকদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে দিনব্যাপী অবরোধসহ লাগাতার আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত সপ্তাহের বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম ১৮ মার্চের মধ্যে প্রক্টরের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন অথবা উপাচার্য তার ক্ষমতাবলে অব্যাহতি দিবেন বলে আশ্বাস দেন। এছাড়া দায়িত্ব পালনকালে আ স ম ফিরোজ উল হাসান নানা সময় বিতর্কে জড়ানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও ছাত্র শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণী এই পদে নতুন কাউকে দায়িত্ব প্রদানের কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও।
এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ইতোমধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। নতুন প্রক্টর নিয়োগের বিষয়টি সামনে আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহলে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কে হচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রক্টর? এমন প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মুখে মুখে। ইতোমধ্যে নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাব্য তালিকায় উঠে এসেছে বেশ কয়েকজন শিক্ষকের নাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এই পদের দৌড়ে এগিয়ে আছেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইখতিয়ার উদ্দিন ভুঁইয়া। বর্তমানে তিনি সহকারী প্রক্টর ও আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের ওয়ার্ডেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি সিওয়াইবি, টিআইবি ইয়েস গ্রুপ ও ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত ভর্তি পরীক্ষায় সহকারী প্রক্টর হিসেবে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থেকে চমক দেখিয়েছিলেন তিনি।
প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়নে কী ধরনের পদক্ষেপ নিবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজগুলো করি সেগুলো অব্যাহত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটির প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই কাজ করি। আমি কাউকে খুশি করার জন্য কাজ করিনা। একজন শিক্ষক ও দেশের নাগরিক হিসেবে আমার কমিউনিটির প্রতি সম্পূর্ণ দায়বদ্ধতা আছে। এই সেন্স থেকেই আমি কাজগুলো করি। তাই আমি যেহেতু দায়িত্বে আছি সেগুলো বাস্তবায়ন করা আমার পবিত্র দায়িত্ব। আমি যেখানেই থাকি বা যে ফর্মেই থাকি আমার কাজ অব্যাহত থাকবে।
সূত্র মতে, সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তপন কুমার সাহা। তিনি ইতঃপূর্বেও এই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটকালীন এই সময়ে এ শিক্ষককে পছন্দের তালিকায় রেখেছেন অনেকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের সঙ্গে দূরত্ব থাকায় প্রক্টর হওয়ার দৌড়ে তিনি কিছুটা পিছিয়ে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।
আলোচনায় আছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান। তিনি ইতোমধ্যে সফলতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও পরিবহণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া তিনি সম্প্রতি সিনেটের শিক্ষক প্রতিনিধিও নির্বাচিত হয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে, গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ পেতে অনেকে দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। এ তালিকায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড ডাটা সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক আলমগীর কবির। গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ পেতে চালাচ্ছেন জোর প্রচেষ্টা। সম্প্রতি নিয়মিত উপস্থিত থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় সকল অনুষ্ঠানে। এই অধ্যাপক ইতঃপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে শহীদ তাজউদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষের পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া প্রক্টর হওয়ার জন্য পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক তাজউদ্দীন সিকদার, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সিকদার জুলকারনাইন, নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিবুর রৌফ শৈবাল প্রমুখও জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে উপাচার্যের কার্যালয়ের বেশ কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধান রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ এই পদটিতে যোগ্য ব্যক্তিদেরই প্রত্যাশা করছেন অংশীজনরা। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা বিধানের মূল দায়িত্ব প্রক্টরের। যেকোনো আন্দোলন, সংগ্রামের মোকাবিলায় জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে প্রক্টরকে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে দায়িত্বশীল ও বিচক্ষণ কাউকে এ পদে নিযুক্ত করা হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ। এই মঞ্চের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজুল ইসলাম মেঘ বলেন, ‘আমরা এমন একজনকে প্রক্টর হিসেবে চাই যিনি ক্লিন ইমেজের। ফিরোজ স্যারের মতো প্রক্টর হওয়ার আগে জেল খাটা ও প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের অভিযুক্ত কাউকে নয়। আমরা এমন একজনকে চাই যিনি সৎ ও সাহসী। যিনি যেকোনো চাপে ভয় পায় না এরকম মানুষ আমরা চাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রথমত যিনি ছাত্রবান্ধব, ছাত্রদের বিষয়গুলো ভালোভাবে দেখবেন এমন ব্যক্তি প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত ক্যাম্পাস মাদকে ভরে গেছে। প্রক্টর ভাইটাল পদ। তিনি নানাভাবে মাদকমুক্ত করতে পারেন। সেরকম একটি ব্যক্তি প্রয়োজন, যিনি ক্যাম্পাসটাকে ভালো রাখবেন। আমি নিজেও প্রক্টর ছিলাম। ক্যাম্পাসে যা কিছুই ঘটে তা প্রক্টরের নজরে আসে। প্রক্টর চাইলে ক্যাম্পাসটাকে সুষ্ঠু রাখতে পারে। যারা ইয়াং, অনেস্ট, ডায়নামিক ও ক্যাম্পাসটাকে ভালোবাসে এমন ব্যক্তিকে চাইলেই এই পদে নিয়োগ দেওয়া যায়। এমন ব্যক্তি আছেও। এক্ষেত্রে স্টুডেন্টদেরকেও তাকে সহযোগিতা করার মনোভাব থাকতে হবে।’
একই বিষয়ে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নুহু আলম বলেন, ‘আমি চাই পুরোপুরি শিক্ষার্থী বান্ধব একজন শিক্ষক প্রক্টর হবেন। আমরা চাই না আমাদের নিয়ে কোনো নেতিবাচক সংবাদ হোক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে চাই। যিনি শিক্ষার্থীকে দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে শিক্ষার্থী হিসেবেই বিবেচনা করবে এমন একজন প্রক্টর হলে ভালো হয়। যেকোনো সমস্যা-সংকটে শিক্ষক-শিক্ষার্থী একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা, সহানুভূতি থাকবে এমন প্রক্টর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমার চাওয়া।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪
কুমিল্লাঃ সাত দফা দাবি না মানায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি আবারও সেমিস্টার পরীক্ষা ব্যতীত সাত দিনের জন্য সকল শ্রেণি কার্যক্রম বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সোমবার জরুরি সাধারণ সভা শেষে সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের একটি সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, 'আমাদের পূর্বের যে দাবিগুলো ছিল সেগুলো উপাচার্য মানেন নি। তাই আমরা পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল ১৯ মার্চ (মঙ্গলবার) থেকে ২৭ মার্চ (বুধবার) পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করছি।'
তাদের এই ক্লাস বর্জন প্রক্রিয়ায় মিডটার্ম, অ্যাসাইনমেন্ট এগুলো অন্তর্ভুক্ত কি না এই প্রশ্নের জবাবে সভাপতি ড. আবু তাহের বলেন, 'চূড়ান্ত পরীক্ষা (সেমিস্টার) হবে, তবে বাকি মিডটার্ম বা প্রেজেন্টেশন অ্যাসাইনমেন্ট সকল বিষয় এর অন্তর্ভুক্ত।'
সরেজমিন দেখা যায়, দুপুরের পরে শিক্ষক লাউঞ্জে জরুরি সাধারণ সভা ডাকে শিক্ষক সমিতি ৷ ওই সভা শেষে তারা তাদের পূর্বের সিদ্ধান্ত এবং দাবি দাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য দপ্তরে যান। উপাচার্যের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলে সেখান থেকে সংক্ষুব্ধ অবস্থায় বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে। পরে বিকাল বেলা সংবাদ সম্মেলনের আহ্বান করে শিক্ষক সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক ড. মাহমুদুল হাসান বলেন, 'উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সংকট দেখছেন না বলছেন ৷ উনি বলছেন এই সংকট শিক্ষক সমিতির, উনার নয়।
আমাদের পূর্বের যে সিদ্ধান্ত এবং দাবিসমূহ নিয়ে একটি চিঠি দিয়েছিলাম সেটি তিনি পড়েও দেখেন নি ৷ আমরা চাই বাংলাদেশ সরকার এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সংকটে হস্তক্ষেপ করুক, এই প্রশাসন থেকে আমরা সংকটের সমাধান পাওয়ার আশা করছি না।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, 'আমি উনাদের বলেছি, শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলতে ৷ কিন্তু উনারা আমার রুমে এসে নিজেরা নিজেরা গোলযোগ করেন ৷ কথা বলার কোনো পরিবেশ রাখেন না তারা। তাদের বলেছি আপনাদের আইনসিদ্ধ যেকোনো দাবি অবশ্যই কার্যকর করব। শুধু শুধু শিক্ষার্থীদের জিম্মি করবেন না।'
এর আগে ১২ মার্চ (মঙ্গলবার) এক জরুরি সাধারণ সভায় সাত দফা দাবি ও তিন সিদ্ধান্ত পেশ করা হয়। শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবিগুলো হলো- গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য কার্যালয়ে উপাচার্যের উপস্থিতিতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা, বহিরাগত সন্ত্রাসী ও কিছু অছাত্র কর্তৃক শিক্ষকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলায় নেতৃত্ব দানকারী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের সাময়িক বহিষ্কারপূর্বক সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার ও জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ এবং হামলায় মদদদানকারী প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ, ঢাকাস্থ গেস্টহাউস শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা, অধ্যাপক গ্রেড-১ ও অধ্যাপক গ্রেড-২ পদে পদোন্নতির জন্য আবেদনকৃত শিক্ষকদের অবিলম্বে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মোতাবেক বিভিন্ন বিভাগে বিভাগীয় প্রধান ও অনুষদসমূহের ডিন নিয়োগ এবং ইতোমধ্যে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে যে সকল বিভাগে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের প্রত্যাহার করা, শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রে আইন বহির্ভূত অবৈধ শর্ত আরোপ করে জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্ন করার মাধ্যমে যে সীমাহীন বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে দ্রুততম সময়ে সেসবের নিষ্পত্তিকরণ, ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত বিতর্কিত শিক্ষাছুটি নীতিমালা রহিত করে পূর্বের নীতিমালা বহাল রাখা, ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪
লক্ষীপুরঃ জেলার রামগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার্থী মোহনা আক্তারকে নিয়ে উধাও হয়েছেন সাহাদাৎ হোসেন বিপুল নামে এক সহকারী শিক্ষক।
গত বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রামগঞ্জ এম ইউ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষক সাহাদাৎ হোসেন বিপুল রামগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়ালপুর গ্রামের জমদ্ধার বাড়ির খসরু মিয়ার ছেলে এবং তিনি শাহজকি উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
এ ঘটনায় সহযোগিতার সন্দেহে লোকজন নিয়ে শনিবার (১৬ মার্চ) পরীক্ষার কেন্দ্রের মাঠে প্রীতি আক্তার নামে আরেক পরীক্ষার্থীকে মারধর করেন মোহনার মা তাহমিনা ও বড়বোন তারিন আক্তার মীম। পরে রোববার (১৭ মার্চ) প্রীতির মা পারভিন বেগম বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ।
জানা যায়, উপজেলার শাহজকি উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাহাদাৎ হোসেন বিপুলের সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোহনা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষক বিপুল প্রেমিকা মোহনাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। অন্যদিকে মোহনাকে পালিয়ে যাওয়ায় সহযোগিতায় সন্দেহে মোহনার মা তাহমিনা ও বড়বোন তারিন আক্তার মীম লোকজন নিয়ে শনিবার (১৬ মার্চ) পরীক্ষার কেন্দ্রের ভেতর মাঠের মধ্যে প্রীতি আক্তার নামে আরেক পরীক্ষার্থীকে মারধর করেন। মোহনা ও প্রীতি একই বিদ্যালয়ের ছাত্রী একই পরীক্ষা হলের পরীক্ষার্থী ছিলেন।
প্রীতির মা পারভিন জানান, মোহনা ও প্রীতি একই বাড়ির হওয়ায় মোহনা ও আমার মেয়ের এক সঙ্গে স্কুলে যেত। শিক্ষকের সঙ্গে মোহনার সম্পর্ক ছিল এটা প্রীতি জানতো না। মোহনার মা ও বোন অন্যায় ভাবে আমার মেয়েকে পরীক্ষার হলে গিয়ে পিটিয়েছে। আমার মেয়ে প্রীতির ওপর হামলার বিচার চাই।
পালিয়ে যাওয়া ওই ছাত্রী মোহনার মা তাহমিনা আক্তার জানান, ওরা দুইজনে এক সঙ্গে কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যায়। লম্পট শিক্ষক আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি মোহনার বান্ধবী প্রীতি জানতো। কিন্তু আমাদেরকে কিছুই জানাইনি। এজন্য আমরা মনের দুঃখে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রীতিকে পরীক্ষা হলে হালকা পাতলা উত্তম মধ্যম দিয়েছি।
রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা এবং সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরেক ছাত্রীর ওপর হামলার ঘটনায় মোট দুটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/০৩/২০২৪
কাকন রেজাঃ একজন মেয়ে শিক্ষার্থী একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে অনার্সে ফেল করানো হয়েছে। তার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে শিক্ষকদের অত্যাচারে। অবন্তিকার আত্মহত্যার কথা বিষয়ে বলতে গিয়ে সে বলেছে, অবন্তিকা সাহসী বলেই পেরেছে, সে সাহসী নয় বলেই আত্মহত্যা করতে পারছে না। কী ভয়াবহ কথা। শিক্ষকের নামে এরা কারা। এদের পরিচয় কী, এরা কোথা থেকে এসেছে। এদের সাহসের উৎসটা কোথায়। না, এসব বিস্ময়কর কোনো প্রশ্ন নয়। এসব সবই আমরা জানি, আমাদের জানা।
অবন্তিকার হত্যা, হ্যাঁ হত্যাই, তাকে বাধ্য করা হয়েছে আত্মহননের জন্য। সেই হত্যাকারী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর এবং একজন শিক্ষার্থী। তাদের শক্তির উৎস একই। গণমাধ্যমে একজন লিখেছেনে সেই প্রক্টরের যে যোগ্যতা, তাতে সে একজন পিয়নের চাকরি জোটাতে সক্ষম নন, কিন্তু শুধুমাত্র ক্ষমতার আয়নাবাজিতে তিনি একজন সহকারী প্রক্টর। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রক্টরবাজির কাহিনী আমাদের জানা। অনেক সুবেশী শিক্ষকদের কাহিনীও অজানা নয়। এদের ক্ষমতার উৎসও বলেছি জানা। কিন্তু করার কিছু নেই।
অধ্যাপক ফাহমিদুল হক সামাজিকমাধ্যমে লিখেছেন, এদের রুখে দেয়ার কথা। তিনি অবন্তিকার আত্মহত্যাকে, হত্যা বলেছেন এবং সত্যিকার অর্থেই এটা হত্যা। বিচার চেয়ে, প্রতিকার না পেয়ে নিজেকে হত্যা করতে বাধ্য হয়েছে অবন্তিকা। এই হত্যার প্রকৃতি অন্যান্য হত্যার মতই। সেই শিক্ষক, অবন্তিকার সহপাঠী এরা মূলত হত্যার নির্দেশদাতা। হন্তারক ও হত্যার নির্দেশদাতা সমানদোষী। কিন্তু এক্ষেত্রে হত্যার নির্দেশদাতারা দ্বিগুন দোষী, যারা একজন শিক্ষার্থীকে বাধ্য করেছে নিজেকে হত্যা করতে। এ ঘটনায় হন্তারক ও হত্যার নির্দেশদাতা একই। কিন্তু এদের রুখে দেবে কে, এই প্রশ্নের উত্তর দেননি ফাহমিদুল হক। তিনি শিক্ষার্থীদের ক্ষমতাহীন বলেছেন কিন্তু শিক্ষক ও সহপাঠীর ক্ষমতার উৎস কোথায় সে কথা বলেননি। সমাধানের আগে সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। নাহলে বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে, যেখানে বেড়ালরাই ক্ষমতাবান!
অবন্তিকার আত্মহননের পর কথা উঠছে। টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে যে মেয়েটি বলেছে তার প্রতি অবিচারের কথা, তাকে অনার্সে ফেল করিয়ে দেবার কথা, এমন অসংখ্য কথা অব্যক্ত রয়ে গেছে। শুধু মেয়েরাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে ছেলেরাও শিক্ষকদের অবিচারের শিকার হন। যাকে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা- এমন চিন্তার অনেক শিক্ষকই রয়েছেন দেশের বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। গত দেড় দশকে দেশের শিক্ষার পরিবেশ, মান নিচে নামতে নামতে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আর শিক্ষকদের মান নিয়ে তো কথাই নেই। শিক্ষকদের মান এই জায়গা ঠেকেছে শুধুমাত্র ক্ষমতার আয়নাবাজির জন্য। অ্যাস্টাব্লিশমেন্টের পক্ষে থাকলেই হলো। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সেই পক্ষে থাকা প্রমাণ করেছেন একটি ছবির মাধ্যমে। অবন্তিকার আত্মহননের সাথে সাদি মহম্মদের মৃত্যুর একটা অন্তর্নিহিত মিল রয়েছে। সাদি মহম্মদও অবিচারের শিকার। পুরস্কারের ক্ষেত্রে শুভ্রদেব আর সাদি মহম্মদের তুলনা করলেই সেই মিলটা চোখে পড়ে। চোখে পড়ে আয়নাবাজির লুকায়িত সেই দৃশ্যও।
প্রসঙ্গটা অন্যদিকে নিয়ে যাই। পরে হয়তো বিস্তারিত লিখবো এ বিষয়ে, কিন্তু এ লেখায় একটু সতর্ক করে দিয়ে যাই। দেশে একটা সাম্প্রদায়িক পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে এবং তা শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষকদের মাধ্যমেই। ইফতার মাহফিল নিষিদ্ধের আলাপ, কোরআন তেলাওয়াতকারীদের শাস্তির আওতায় আনার কথা, এসব তারই আলামত। এ বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে, এটা ইচ্ছাকৃত ফ্যাসাদ বাঁধানোর চেষ্টা এবং সম্ভবত পরিকল্পিতও। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাং কিংয়ে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ শিক্ষকদের অনেকেই এখন নিজ ব্যর্থতা ঢাকতে আয়নাবাজির উপর ভর করছেন। এই আয়নাবাজি জাতিকে একটা ভয়াবহ ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একটু চিন্তা করলেই ভবিষ্যতের সেই ভয়াবহ দৃশ্যটা আপনি দেখতে পাবেন।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
মতামত ও সাক্ষাৎকার কলামে প্রকাশিত নিবন্ধ লেখকের নিজস্ব। শিক্ষাবার্তা’র সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে মতামত ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক ও আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের;- শিক্ষাবার্তা কর্তৃপক্ষের নয়।”
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪