মঙ্গলবার, ১৯শে মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থায় আগামী জুলাই থেকে যোগ দেওয়া চাকুরেদের সর্বজনীন পেনশনে যুক্ত হওয়া বাধ্যতামূলক করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তারা বিদ্যমান পেনশনের বদলে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির ‘প্রত্যয়’ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হবেন। তবে সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে প্রয়োজনে তারা আন্দোলনে যাবেন।

এ ব্যাপারে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনতেই সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এ উদ্দেশ্যেই কাজ করছে সরকার। সার্বিকভাবে বৃহত্তর স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্টরা এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা থেকে সরে আসবেন বলে আশা করছি।

অর্থ মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং এদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে আগামী ১ জুলাই থেকে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকার পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করল। একই দিন সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা সংশোধন করে আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর ১ জুলাইয়ের পর থেকে ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাধ্যতামূলক। বিদ্যমান প্রগতি, প্রবাস, সুরক্ষা ও সমতা– এই চার পেনশন কর্মসূচি ঐচ্ছিক হলেও নতুন স্কিম বাধ্যতামূলক।

‘প্রত্যয়’ স্কিমে চাঁদার বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মূল বেতনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা– এ দুয়ের মধ্যে যেটি কম, সংশ্লিষ্ট সংস্থা তা চাকরিজীবীর বেতন থেকে কেটে রাখবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংস্থা দেবে। দুই অঙ্ক একত্রে চাকরিজীবীর পেনশন আইডির (পরিচয় নম্বর) বিপরীতে সর্বজনীন পেনশন তহবিলে জমা করবে। যেদিন প্রতি মাসের বেতন দেওয়া হয়, তার পরের কর্মদিবসের মধ্যেই কাজটি করতে হবে। এ জমা অর্থের পরিমাণ ও মেয়াদের ভিত্তিতে অবসরকালীন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী পেনশন ভোগ করবেন।

নতুন এ সিদ্ধান্তে স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষুব্ধ হলেও চাকরির ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হয়েছেন সরব। বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার এসআরওর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা বলছেন, এ প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হবেন। একই বেতন স্কেলের আওতাধীন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য সরকারের ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। তারা প্রয়োজনে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য আন্দোলনে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিগুলো এরই মধ্যে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিবৃতিতে দিয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১৯/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে চতুর্থ দফায় ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন। এ তালিকার মধ্যে শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, ইমাম, যাজক, পুরোহিত, অভিনেতা, রাজনীতিবিদ, নারীনেত্রী, সমাজসেবক প্রাধান্য পেয়েছেন। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বীকৃতি প্রদান-সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই কমিটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সুপারিশ করা নামের তালিকা আগামী সপ্তাহে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তারা প্রত্যেকেই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সময় হত্যার শিকার হন।

তালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, স্বীকৃতির সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন ৪৭ শিক্ষক, স্থানীয় ১৭ রাজনীতিবিদ ও ১৩ চিকিৎসক। ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী তালিকা প্রণয়নে প্রথম কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১৯১ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের ২২ মে ১৪৩ জনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর পর দেড় বছর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা-সংক্রান্ত সভা হয়নি।

অবশেষে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ১০৮ জনকে (একজনের নাম দুইবার) দেওয়া হয় শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি। সব মিলে এ পর্যন্ত শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছে ৪৪২ জনের নাম। চতুর্থ দফায় সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়ে মোট স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৫৬০-এ।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্বীকৃতি প্রদান-সংক্রান্ত বাছাই কমিটির সদস্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘আমরা তালিকা চূড়ান্ত করেছি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরলে তালিকা হস্তান্তর করা হবে। আগামী ২৪ মার্চ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তালিকা প্রকাশের কথা রয়েছে।’

কমিটির অপর সদস্য অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সমাজের প্রতিটি শ্রেণিরই অবদান রয়েছে, যেটা শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় উঠে এসেছে। তালিকায় শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, ইমাম, যাজক, পুরোহিত, নাট্যাভিনেতা, নারীনেত্রী, সমাজসেবক প্রাধান্য পেয়েছেন।’

যাদের নাম শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে, তারা হলেন– হবিগঞ্জের শিক্ষক অনিল চন্দ্র দেব, সত্যরঞ্জন অধিকারী, হরিপদ গোস্বামী, হরিদাস সাহা, শফিকুর রহমান, পল্লিচিকিৎসক অবিনাশ রায়, শিক্ষক কালীচরণ নমঃশূদ্র, হারুনর রশীদ, হোসেন সিদ্দিক, জগৎজ্যোতি দাস (বীরপ্রতীক), মানিকগঞ্জের ডা. অজিত কুমার চক্রবর্তী, ডা. সন্তোষ রঞ্জন কুমার বসাক, ডা. নিবারণ চন্দ্র সাহা, হীরালাল সরকার, রাজনীতিবিদ সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায়চৌধুরী, নারীনেত্রী যোগমায়া চৌধুরী কালী, রাজনীতিবিদ ব্রজেন্দ্র কুমার সাহা, রামলাল সাহা, মোহিনীকান্ত গুহ রায়, সমাজসেবী নীহাররঞ্জন রায়, পৃথ্বীশচন্দ্র সাহা, নৃপেন্দ্রকান্ত রায়চৌধুরী, নরেন্দ্রনাথ কুণ্ডু, শিক্ষক নিতাই চন্দ্র বসাক, স্বদেশচন্দ্র বসু মজুমদার, প্রবন্ধ কুমার নাগ, নারায়ণ চক্রবর্তী, গণসংগীত শিল্পী জগবন্ধু সাহা, সমাজসেবক অবনী কুমার রায়, অভিনয়শিল্পী অতুল কৃষ্ণ সাহা, আবু ইলিয়াস মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, লোকসংগীত শিল্পী আবুল বাশার খান, রাজনীতিক আবদুল হামিদ শেখ, সমাজেসেবী উমেশ চন্দ্র সাহা, এজেডএম জিয়াউদ্দিন, আইনজীবী চিত্ররঞ্জন বসু, শিক্ষক কালীপ্রসন্ন রায়, ডা. চিত্তরঞ্জন সাহা, ডা. বিজয়রত্ন রায়, সুধীর কুমার রায়, ইমাম ও শিক্ষক মাওলানা হারুন অর রশীদ; যশোরের নাট্যাভিনেতা অমল কৃষ্ণ সোম, অরুণ কৃষ্ণ সোম, রাজনীতিবিদ মো. আসাদুজ্জামান, লুৎফর রহমান, সংস্কৃতিকর্মী শেখ ওয়াহিদুর রহমান চারু, সমাজসেবী শহীদ উদ্দিন আহম্মেদ, প্রকৌশলী শামস-উল-হুদা, পল্লিচিকিৎসক তফেল উদ্দিন আহম্মাদ, শিক্ষক কাজী আইয়ূব হোসেন, সিদ্দিকুর রহামান, সিরাজুল ইসলাম, গোবিন্দ, নওয়াব আলী বিশ্বাস, প্রবোধ কুমার নাগ, গণসংগীত শিল্পী সাবুদেব কুমার দত্ত বাচ্চু, লেখক ইয়াকুব আলী, চাকরিজীবী মহিউদ্দীন আহমেদ বিশ্বাস, শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম টিপু, আইনজীবী সুশীল কুমার রায়, সৈয়দ আমির আলী, ইমাম মাওলানা হাবিবুর রহমান; সিরাজগঞ্জের ডা. প্রকাশ প্রামাণিক মিন্টু, শিক্ষক জয়নাল আবেদীন, শাহেদ আলী, মহাদেব চন্দ্র সাহা, নূরুল ইসলাম, ননীগোপাল বসাক, গোলাম মোস্তফা, চিত্রশিল্পী গোবিন্দ চন্দ্র দাস, ইঞ্জিনিয়ার আহসান-উল-হাবীব, শিক্ষক আব্দুল হামিদ, আবেদ আলী, সংস্কৃতিকর্মী ওয়ালিউর রহমান পারু, শিক্ষক ইয়ার মোহাম্মদ; পাবনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, রাজনীতিক আব্দুর রহমান খান কাশেম, ভাষাসংগ্রামী আব্দুর রহিম, ইমাম ও সমাজসেবী মাওলানা আব্দুল আজিজ, শিক্ষক আব্দুল গফুর বিশ্বাস, সংস্কৃতিকর্মী আব্দুল জব্বার, চিত্রশিল্পী আব্দুল লতিফ খান, রাজনীতিক আব্দুল হামিদ, রাজনীতিক ও সংগঠক আহসান উদ্দিন মানিক, দিনাজপুরের শিক্ষক আবুল হোসেন, শাহ মো. সোলাইমান, হোমিও চিকিৎসক আবু বক্কর আকন্দ, শিক্ষক আছাব উদ্দীন সরকার, মফিজ উদ্দীন সরকার, সংগীতশিল্পী আমিরুল হুদা জিন্না, শিক্ষক আব্দুল খালেক, নেত্রকোনার শিক্ষক কামিনী কুমার চক্রবর্তী, নওগাঁর আইয়ুব হোসেন, প্রকৌশলী প্রশান্ত পাল, শিক্ষক খাজা আব্দুস ছাত্তার, জয়নাল আবেদিন, কুমিল্লার মাওলানা আবদুল লতিফ, বরিশালের ইমাম ও স্কুলশিক্ষক মুনশি আলী আজিম খান, কিশোরগঞ্জের শিক্ষক আব্দুল আজিজ ভূঁইয়া, মহিউদ্দিন আহমেদ, নীরদ রঞ্জন গিরী, সংগীতশিল্পী ভূপতিনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী, ময়মনসিংহের ইমাম ও শিক্ষক মাওলানা ছফির উদ্দিন মুনশী, নীলফামারীর অভিনেতা নূর মোহাম্মদ, মুন্সীগঞ্জের ডা. সুরেন্দ্র চন্দ্র সাহা, সিলেটের পুরোহিত স্বামী পরমানন্দ গিরী, ইমাম ও শিক্ষক মাওলানা মকদ্দস আলী, ইতালির নাগরিক ফাদার মারিও ভেরোনেসি, গোপালগঞ্জের শিক্ষক মাওলানা হাবিবুর রহমান ও চট্টগ্রামের শিক্ষক সুমতি রঞ্জন বড়ুয়া।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১৯/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান ঝলককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সলিমাবাদ মধ্যপাড়া মসজিদের সামনে তাকে হত্যা করা হয়।

জানা যায়, উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের সলিমাবাদ মধ্যপাড়া এলাকার ছামিনুর রহমানের ছেলে ঝলক।

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম জসিম উদ্দিন জানান, ঝলক তারাবির নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। এসময় মাঠের কাছে ফাঁকা একটি জায়গায় আসলে পূর্ব থেকেই ওত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিম হোসেন রতন বলেন, ঝলক উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এই হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই। দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই প্রশাসনের কাছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১৯/০৩/২০২৪

তানজিদ শাহ জালাল ইমন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম দেবশ্রী রায়। কক্ষের দরজা ভেঙে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছে। দেবশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন।

বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷গত রবিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে দেবশ্রীর স্বামীর কর্মস্থলের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।তার স্বামী বরগুনার গার্লস স্কুলের সহকারী শিক্ষক কঙ্কন রয়।

বরগুনা থানা সূত্রে জানা যায়, দেবশ্রী রায় তার স্বামীর সাথে বরগুনার সদরে থাকতেন। সেখানে কক্ষে ঝুলে থাকা অবস্থায় পুলিশ দেবশ্রীকে উদ্ধার করে।প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সে আত্মহত্যা করেছে।দেবশ্রীর মৃত্যুতে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট বোঝা যাবে বলে জানানো হয়।মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল বারেক। দেবশ্রীর গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার তালা উপজেলায়।শশুরবাড়ি খুলনায়।তার স্বামীর চাকরি সূত্রে তিনি বরগুনায় থাকতেন।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে তার এক সহপাঠী জানান, দেবশ্রী ছিলো শান্তশিষ্ট। আসলে কি কারণে আত্মহত্যা করল তা জানা নেই।তবে পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসল ঘটনা কি।

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন বলেন, তার বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তার লাশ গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তার ক্লাস প্রতিনিধি আমাকে জানিয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৯/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

পথশিশুদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পথশিশুদের পরিস্থিতি বিষয়ক গবেষণাপত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, যারা পথে থাকে তাদের নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে। তদের অসহায়ত্ব অনেক বেশি। তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়, অনেক রকমের নির্যাতনেরও শিকার হয়।

রাতের অন্ধকারে খুবই অনিরাপদ একটা অবস্থার মধ্যে থাকে। আর যারা রাতে পরিবারের কাছে ফিরে, এদেরও থাকে নানা সমস্যা। নানা কারণে পথশিশু হয়। পরিবার ভেঙে যাওয়া, অতিদারিদ্র্য ও নানাবিধ সমস্যার কারণে শিশুরা পথে থাকে।

মন্ত্রী পথশিশুদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেওয়ার বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, পথ চলতি মানুষ কীভাবে তাদের সঙ্গে আচরণ করে তার প্রভাব তাদের ওপরে পড়ে। আমাদের প্রত্যেককে তাদের প্রতি সিমপ্যাথি দেখাতে হবে।

আমরা কতজন এ শিশুদের একবার ভালো করে দেখি? আমরা হয়তো জীবন বদলে ফেলতে পারবো না, কিন্তু যে কয়েক সেকেন্ডের জন্য তাদের সাথে আমাদের একটা যোগাযোগ ঘটলো, সেই কয়েকটা সেকেন্ডে তাদের প্রতি যদি আমাদের সহমর্মিতা থাকে, তার প্রতি আচরণে, আমাদের কথায় তার জীবনে একটা পরিবর্তন এনে দিতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা যদি এই বাচ্চাগুলোকে স্বপ্ন দেখাতে পারি, তাহলে তারা স্বপ্নের দিকে নিজেদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। যদি তাদের প্রতি আচরণটাই সেই রকম ইতিবাচক না হয়, তাহলে কিন্তু তারা স্বপ্ন দেখতে সক্ষম হবে না।

মন্ত্রী সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও পথশিশুদের সমাজের মূলধারায় আনতে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পথশিশুদের আশ্রয়, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনে অনেক কাজ চলমান রয়েছে।

তারপরও এ গবেষণায় তাদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গেলো যা ভবিষ্যতে নীতি নির্ধারণী বিষয়ে কাজ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হেসেন (রিমি) বলেন, এ গবেষণা ভবিষ্যতে পথশিশুদের জন্য কাজ করতে সহায়তা করবে। শিশুদের জন্য একটি সহনশীল সমাজ করতে হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১৮/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

ঢাকা: পবিত্র রমজান উপলক্ষে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক, খিলক্ষেত ও কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য মাসব্যাপী ইফতারের ব্যবস্থা করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।

এই উদ্যোগের ফলে এসব এলাকার ৩৫টি মাদরাসার সাড়ে সাত হাজারের বেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী প্রতিদিন তৃপ্তিসহকারে ইফতারের সুযোগ পাচ্ছেন।

এতে সন্তোষ জানিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা।
সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে আসরের নামাজের আগ মুহূর্তে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার শাইখ যাকারিয়া ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে ২০০ জনের জন্য পাঠানো ইফতার মাদরাসায় এসে পৌঁছেছে।

যেখানে ছিল ইফতারের অতি পরিচিত পদ ছোলা ভুনা, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, জিলাপি, নানা রকমের ফলসহ বাহারি বিভিন্ন পদ। এই ইফতার পেয়ে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।

শাইখ যাকারিয়া ইসলামি রিসার্চ সেন্টারের শিক্ষা পরিচালক মুফতি শরীফ মালিক বলেন, এই মাদরাসায় ৩৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী আছেন, আর শিক্ষক আছেন ২৪ জনের মতো। রমজান উপলক্ষে কিছু শিক্ষার্থী ছুটিতে। কুড়িল ও কাউলার দুই ক্যাম্পাস মিলিয়ে বর্তমানে ২৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী আছেন। যাদের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপ খাবারের ব্যবস্থা করেছে। এতে আলহামদুলিল্লাহ সবার খুব ভালোভাবেই হয়ে যায়।

মাদরাসার আবাসন সচিব মুফতি বেলাল আহমেদ  বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের জন্য যে খাবার পাঠায় তা আলহামদুলিল্লাহ সবার ভালো মতো হয়ে যায়। ।

জানা গেছে, বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে চলতি রমজানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দৈনিক ১৮ থেকে ২০ হাজার মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে।

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসা, নূরের চালার মাদানিয়া নূরিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা, বাড্ডার স্বাধীনতা সরণির দারুল ফুরকান মাদরাসা, খিলক্ষেত এলাকার কুড়িল চৌরাস্তার মাদরাসাতুস সুন্নাহ, কুড়িল জোয়ারসাহারা মহিলা মাদরাসা, খিলক্ষেতের ইসাতুস সুন্নাহ মাদরাসা, মারকাজুল কুরআন ইসলামিয়া মাদরাসা খিলক্ষেত, জামিয়া ইসলামিয়া আবাবিয়া খিলক্ষেত বাজার, হাজি আবদুল মালেক মাদরাসা খিলক্ষেত, জামিয়া আশরাফিয়া বায়তুল কুরআন খিলক্ষেত, জামিয়া কাশেমুল উলুম মাদরাসা কাওলা, দারুল উলুম দর্জিপাড়া মাদরাসা বোট ঘাট, জান্নাতুল বানাত মহিলা মাদরাসা খিলক্ষেত, এমদাদিয়া নূরানিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা খিলক্ষেত, তাজিবুল বানাত আদর্শ বালিকা মাদরাসা খিলক্ষেত, বাইতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা নামাপাড়া, এসলাহুল উম্মাহ মাদরাসা বটতলা খিলক্ষেত, আবদুল আজিজ রুস্তম আলী নূরানি হাফিজিয়া মাদরাসা, রুস্তম আলী ওবাইয়দিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা খিলক্ষেত, এহদাউল উম্মাহ মাদিনাতুল উলুম মাদরাসা, আশকোনা সুন্নিয়া মাদরাসা, শায়খ যাকারিয়া ইসলামিয়া রিসার্চ সেন্টার কুড়িল, বসুন্ধরার মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ, মাদরাসা মদিনাতুল উলুম, মাদরাসা দারুস সুন্নাহ, হাজি কোমর উদ্দীন মাদরাসা, মাদরাসা সওতুল কুরআন, তালিমুল কুরআন মাদরাসা, শামসুল উলুম মাদরাসা, দারুল এহসান হাফিজুল কুরআন মাদরাসা মিরপুর, আলহাজ আবদুল মালেক মাদরাসা খিলক্ষেতসহ মানিকগঞ্জ, রংপুর, কেরাণীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় এবং ছিন্নমূল মানুষের মাঝে মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ করা হচ্ছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/১৮/০৩/২০২৪

যশোরঃ জেলায় অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্ধেকেই প্রধান শিক্ষক নেই। সেসব বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সহকারী শিক্ষকরা সঠিকভাবে পাঠদান করতে পারছেন না।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস মতে, যশোরের আটটি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের মোট পদ রয়েছে এক হাজার ২৮৯টি। এরমধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ৬৮৬ জন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক ৩৩২ জন। এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ২৭১ জন। অভয়নগরে প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১১৭টি। কর্মরত রয়েছেন ৫৭ জন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ২৯ জন। আর ৩১ জন ভারপ্রাপ্ত। কেশবপুরে প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১৫৮টি। কর্মরত রয়েছেন ৯৯ জন। চলতি দায়িত্বে রয়েছেন ৪২ জন। আর ১৭ জন রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত। চৌগাছায় প্রধান শিক্ষকের পদ ১৩৯টি। কর্মরত রয়েছেন ৭৩ জন। চলতি দায়িত্বে ৩২ জন। আর ৩৪ জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ঝিকরগাছায় প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১৩১ টি। কর্মরত রয়েছেন ৬৯ জন। ৩১ জন চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন ৩১ জন। বাঘারপাড়ায় প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১০২ টি। কর্মরত রয়েছেন ৫০ জন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক ৩২ জন। ২০ জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। মণিরামপুরে প্রধান শিক্ষকের মোট পদসংখ্যা ২৬৭। কর্মরত রয়েছেন ১২৯ জন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক ৭৭ জন। ৬১ জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। শার্শায় প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ১২৫টি। ৫৮ জন কর্মরত রয়েছেন। চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ৩৫ জন। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করছেন ৩২ জন। এবং সদর উপজেলায় প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ২৫০টি। কর্মরত রয়েছেন ১৫১ জন। চলতি দায়িত্বে রয়েছেন ৫৪ জন। আর ৪৫ জন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন।

যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদরের দত্তপাড়া সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুর জব্বার জানান, যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই সেখানে বাধ্যতামূলক একজন সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এজন্য তিনি বাড়তি শ্রম দেন। তাকে বিভিন্ন কাজে উপজেলা সদরেও যেতে হয়। আবার নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাতে হয়। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শ্রেণিকক্ষে আগের মতো সময় দিতে পারেন না।

এদিকে কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, যারা চলতি দায়িত্ব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন তাদের বেশিরভাগ কাজের প্রতি আন্তরিক না। তাদের একটাই চিন্তা-পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক আসলে তাদেরতো চেয়ার ছেড়ে দিতে হবে। তাহলে খামাখা কেন বেশি কাজ করতে যাবেন! ফলে, সহকারী শিক্ষকরা ইচ্ছেমতো চলাফেরা করেন। আবার সহকারী শিক্ষকদের কোনোকিছু বলতে গেলে অনেকেই তা আমলে নিতে চান না। তাদের মানসিকতা, সবাইতো সহকারী শিক্ষক! তাহলে কেন চলতি দায়িত্ব কিংবা ভারপ্রাপ্তের কথায় তারা চলতে যাবেন।

আবার অনেক ক্ষেত্রে চলতি দায়িত্ব কিংবা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়েই অনেকেই সহকারী শিক্ষকদের ওপর ইচ্ছেমতো ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করেন। আর তখনই বাধে বিপত্তি। অনেক সহকারী শিক্ষক এই ছড়ি ঘোরানো পছন্দ করেন না।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইসমাইল হোসেন বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক যেভাবে স্কুল চালাতেন ভারপ্রাপ্তরা সেভাবে চালাতে পারেন না। প্রধান শিক্ষক না থাকায় পাঠদানে কিছুটা বিঘ্ন হওয়াটা স্বাভাবিক। কারণ ভারপ্রাপ্তদের অতিরিক্ত করতে হচ্ছে। ফলে, তারা অনেক কাজই ঠিকমতো করতে পারছেন না। স্কুলের জন্য প্রধান শিক্ষক খুবই জরুরি।

যশোর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হান্নান বলেন, প্রতি বছরই অনেক প্রধান শিক্ষক অবসরে যান। কিন্তু প্রতি বছর তো প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় না। এজন্য পদ শূন্য থেকেই যায়। তবে শূন্য পদ পূরণে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফেনীঃ জেলার কলেজ শিক্ষক সমিতির আয়োজনে শতভাগ উৎসব বোনাসের দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।কর্মসূচিতে জেলার এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অংশ গ্রহণ করে তাদের বঞ্চিত হাওয়ায় বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেছেন।

সোমবার ফেনীর শহীদ মিনারে মানবন্ধন থেকে এ দাবি করেন তারা।

সংগঠনের সভাপতি ফারুক আহমাদ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ হোসেন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কে ১০০% উৎসব বোনাস দিতে হবে।

দীর্ঘ ২১ বছর ২৫% বোনাস দিয়ে শিক্ষকদের সাথে টালবাহানা করা হয়েছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা নিয়ে চলা খুবই কষ্টকর।

সারাদেশে প্রায় ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বেসিক বেতনের পুরো অংশ সরকার দিলেও দুই ঈদে মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা দেয়া হয়। ফলে চাকরিতে প্রবেশের পর একজন শিক্ষক উৎসব ভাতা পান তিন থেকে চার হাজার টাকা। কলেজের শিক্ষক পান সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা।

বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি, মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বর্তমান বাজারে এই সামান্য টাকায় কোনোভাবেই প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়। ফলে পাঁচ লাখ শিক্ষকের মনে নেই উৎসব আনন্দ। তাই শতভাগ বোনাসের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পন্ন করার জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

এই সময় বক্তব্য রাখেন চাঁদগাজী কলেজের সহকারী অধ্যাপক সাইফুল্লাহ ভুঁইয়া, আবদুল হক চৌধুরি ডিগ্রি কলেজের মনির উজ জামান, সামছুল করিম কলেজের প্রভাষক শিরীন রহমান, বক্তার মুন্সী শেখ শহীদুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের বিবি রহিমা, রাজাপুর কলেজের আব্দুল হাইয়ুম জুয়েল, ফুলগাজী মহিলা কলেজের সাইদুল হক, নাসিম কলজের লোকমান হোসেন সুমন। পেশাজীবী সংগঠন এর পক্ষ থেকে এডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরি, এডভোকেট সমীর কর।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক। ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে ড. মো. আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, এখনও কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। প্রজ্ঞাপন জারির আগে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ৪ বছরের জন্য ইউজিসিতে যোগদান করেন। এর আগে তিনি চবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেছেন। অধ্যাপক তাহের ডেপুটেশনে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং লিয়েনে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জীবন বীমা কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও কর্পোরেশনের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক আবু তাহেরের জন্মস্থান চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। সেখানকার বাবুনগর প্রাইমারী স্কুলে প্রাথমিক, কাঞ্চনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসির পর চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনহা বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা সম্পন্ন করেন তিনি।

কর্মজীবনের শুরুতে ১৯৮৫ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কমার্স কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন আবু তাহের। ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৪ সালে তিনি ওই বিভাগের অধ্যাপক হন। তার রচিত ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ক ১৭টি বই অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠ্য হিসেবে বিবেচিত। দেশে বিদেশে তার প্রকাশিত প্রবন্ধের সংখ্যা ১০৭ এর বেশি।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪

শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ ঈদের আগেই বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেওয়া এবং একই সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের দাবি জানায় বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)।

সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, একমুখী, সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষাব্যবস্থা চালুর মধ্য দিয়েই শিক্ষাক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিফলন সম্ভব।

শিক্ষক নেতারা আরো উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে সবার আগে শিক্ষকদের আর্থিক সমস্যার সমাধান ও সামাজিক মর্যাদা সুনিশ্চিত করতে হবে।

আরো জানানো হয়, বেসরকারি শিক্ষকদের সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অনুরূপ বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা দিতে হবে। এছাড়া এনটিআরসি-এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা বন্ধের জন্য পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে ‘প্যানেল’ গঠন করা ও পদ শূন্য হওয়ার সঙ্গে- সঙ্গে নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের ওপর। আর তাকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বিভাগটির চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের ওপর। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পরে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের ওই শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘২০২১ সালে আমার বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এ অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত শিক্ষক আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিতে থাকে। এতে আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়। অনার্সের ফাইনালের ভাইভায় আমাকে ফেল করানো হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারছি না, আমাকে একঘরে করা হয়েছে। কখন আমাকে মেরে ফেলা হয় সেটা জানি না। শুধু আমি না, আমার পরিবারকেও নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে এবং হেনস্তা করছে। বর্তমান এ অবস্থা থেকে বাঁচতে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছি।’

এ বিষয়ে ডিবি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এর আগে এ ছাত্রী বিভিন্ন জায়গায় বিচার দিয়েছেন। কিন্তু তিনি বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। মিমের অভিযোগ পেয়েছি। তার নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা নিশ্চিতের চেষ্টা করবো। তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে ডিবির সাইবার টিম।’

তিনি জানান, ‘আরও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা ছাত্রকর্তৃক যৌন হয়রারির শিকার হলে ডিবিতে লিখিত অভিযোগ দিতে পারেন।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ সাম্প্রতিক বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ। গত কয়েকদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে দিনব্যাপী অবরোধসহ লাগাতার আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত সপ্তাহের বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম ১৮ মার্চের মধ্যে প্রক্টরের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন অথবা উপাচার্য তার ক্ষমতাবলে অব্যাহতি দিবেন বলে আশ্বাস দেন। এছাড়া দায়িত্ব পালনকালে আ স ম ফিরোজ উল হাসান নানা সময় বিতর্কে জড়ানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও ছাত্র শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণী এই পদে নতুন কাউকে দায়িত্ব প্রদানের কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও।

এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ইতোমধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। নতুন প্রক্টর নিয়োগের বিষয়টি সামনে আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহলে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কে হচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রক্টর? এমন প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মুখে মুখে। ইতোমধ্যে নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাব্য তালিকায় উঠে এসেছে বেশ কয়েকজন শিক্ষকের নাম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এই পদের দৌড়ে এগিয়ে আছেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইখতিয়ার উদ্দিন ভুঁইয়া। বর্তমানে তিনি সহকারী প্রক্টর ও আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের ওয়ার্ডেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি সিওয়াইবি, টিআইবি ইয়েস গ্রুপ ও ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত ভর্তি পরীক্ষায় সহকারী প্রক্টর হিসেবে শৃঙ্খলার দায়িত্বে থেকে চমক দেখিয়েছিলেন তিনি।

প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়নে কী ধরনের পদক্ষেপ নিবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজগুলো করি সেগুলো অব্যাহত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটির প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই কাজ করি। আমি কাউকে খুশি করার জন্য কাজ করিনা। একজন শিক্ষক ও দেশের নাগরিক হিসেবে আমার কমিউনিটির প্রতি সম্পূর্ণ দায়বদ্ধতা আছে। এই সেন্স থেকেই আমি কাজগুলো করি। তাই আমি যেহেতু দায়িত্বে আছি সেগুলো বাস্তবায়ন করা আমার পবিত্র দায়িত্ব। আমি যেখানেই থাকি বা যে ফর্মেই থাকি আমার কাজ অব্যাহত থাকবে।

সূত্র মতে, সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তপন কুমার সাহা। তিনি ইতঃপূর্বেও এই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটকালীন এই সময়ে এ শিক্ষককে পছন্দের তালিকায় রেখেছেন অনেকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের সঙ্গে দূরত্ব থাকায় প্রক্টর হওয়ার দৌড়ে তিনি কিছুটা পিছিয়ে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।

আলোচনায় আছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান। তিনি ইতোমধ্যে সফলতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও পরিবহণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়া তিনি সম্প্রতি সিনেটের শিক্ষক প্রতিনিধিও নির্বাচিত হয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে, গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ পেতে অনেকে দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। এ তালিকায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড ডাটা সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক আলমগীর কবির। গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ পেতে চালাচ্ছেন জোর প্রচেষ্টা। সম্প্রতি নিয়মিত উপস্থিত থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় সকল অনুষ্ঠানে। এই অধ্যাপক ইতঃপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে শহীদ তাজউদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষের পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়া প্রক্টর হওয়ার জন্য পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক তাজউদ্দীন সিকদার, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সিকদার জুলকারনাইন, নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিবুর রৌফ শৈবাল প্রমুখও জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে উপাচার্যের কার্যালয়ের বেশ কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধান রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ এই পদটিতে যোগ্য ব্যক্তিদেরই প্রত্যাশা করছেন অংশীজনরা। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা বিধানের মূল দায়িত্ব প্রক্টরের। যেকোনো আন্দোলন, সংগ্রামের মোকাবিলায় জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে প্রক্টরকে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে দায়িত্বশীল ও বিচক্ষণ কাউকে এ পদে নিযুক্ত করা হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ। এই মঞ্চের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজুল ইসলাম মেঘ বলেন, ‘আমরা এমন একজনকে প্রক্টর হিসেবে চাই যিনি ক্লিন ইমেজের। ফিরোজ স্যারের মতো প্রক্টর হওয়ার আগে জেল খাটা ও প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের অভিযুক্ত কাউকে নয়। আমরা এমন একজনকে চাই যিনি সৎ ও সাহসী। যিনি যেকোনো চাপে ভয় পায় না এরকম মানুষ আমরা চাই।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রথমত যিনি ছাত্রবান্ধব, ছাত্রদের বিষয়গুলো ভালোভাবে দেখবেন এমন ব্যক্তি প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত ক্যাম্পাস মাদকে ভরে গেছে। প্রক্টর ভাইটাল পদ। তিনি নানাভাবে মাদকমুক্ত করতে পারেন। সেরকম একটি ব্যক্তি প্রয়োজন, যিনি ক্যাম্পাসটাকে ভালো রাখবেন। আমি নিজেও প্রক্টর ছিলাম। ক্যাম্পাসে যা কিছুই ঘটে তা প্রক্টরের নজরে আসে। প্রক্টর চাইলে ক্যাম্পাসটাকে সুষ্ঠু রাখতে পারে। যারা ইয়াং, অনেস্ট, ডায়নামিক ও ক্যাম্পাসটাকে ভালোবাসে এমন ব্যক্তিকে চাইলেই এই পদে নিয়োগ দেওয়া যায়। এমন ব্যক্তি আছেও। এক্ষেত্রে স্টুডেন্টদেরকেও তাকে সহযোগিতা করার মনোভাব থাকতে হবে।’

একই বিষয়ে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নুহু আলম বলেন, ‘আমি চাই পুরোপুরি শিক্ষার্থী বান্ধব একজন শিক্ষক প্রক্টর হবেন। আমরা চাই না আমাদের নিয়ে কোনো নেতিবাচক সংবাদ হোক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে চাই। যিনি শিক্ষার্থীকে দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে শিক্ষার্থী হিসেবেই বিবেচনা করবে এমন একজন প্রক্টর হলে ভালো হয়। যেকোনো সমস্যা-সংকটে শিক্ষক-শিক্ষার্থী একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা, সহানুভূতি থাকবে এমন প্রক্টর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমার চাওয়া।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৩/২০২৪

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram