ঢাকা: কোটা বিরোধী আন্দোলনে দিন দিন উত্তপ্ত হচ্ছে ঢাকা। চতুর্থ দিনের মতো আজও (শনিবার) শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে কর্মসূচির পর ইডেন, বুয়েটসহ ঢাবি ক্যাম্পাসে ব্যাপক শোডাউন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
কোটা বিরোধী এই আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। আন্দোলনের শুরুতে তুলনামূলক কম উপস্থিতি থাকলেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ। বিশেষ করে ঢাবির বিভিন্ন হলের নারী শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চতুর্থ দিনের শাহবাগ অবরোধে কয়েক শত নারী শিক্ষার্থী অংশ নেন। ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে ব্যানার ফেস্টুন সহকারে আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হন তারা।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থী আফরিন জাহান বলেন, আমি একজন নারী কিন্তু আমার নারী কোটার দরকার নেই। কোটা সিস্টেমটাই বৈষম্যের সৃষ্টি করে। আর তা যদি থাকতেই হয় সেটা ৫% কিংবা ১০%। আমরা আমাদের দাবি আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ থেকে সরব না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুননাহার হলের শিক্ষার্থী স্মৃতি আফরোজ সুমি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, চাকরিতে নিয়োগ ও অন্য সব প্রতিযোগিতার জায়গায় আমরা মেধার শতভাগ মূল্যায়ন চাই। নৈতিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা আন্দোলনে এসেছি। সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমরা মেধার মূল্যায়ন চাই।
কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের বোনেরা আন্দোলনের প্রথম সারিতেই থাকেন। তাদের উপস্থিতি আমাদের সাহস বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের হল থেকে শত শত শিক্ষার্থী আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই সমন্বিত আন্দোলন চলবে।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের আন্দোলন করে। টানা আন্দোলনের জেরে পরিপত্রের মাধ্যমে সরকার সংস্কার না করে পুরো কোটা ব্যবস্থাই বাতিল করে দেয়। সম্প্রতি সেই সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে রিট হলে উচ্চ আদালত সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটার অংশটি বাতিল করে দেয়। এরপর আবারো শিক্ষার্থীরা তা পুনর্বহালের দাবিতে মাঠে নামেন। কয়েকদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৬/০৭/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.