এইমাত্র পাওয়া

জমে উঠেছে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার সমিতির নির্বাচন, আলোচনায় যারা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতির নির্বাচন জুনের ০৯ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কলেজে প্যানেলভিত্তিক প্রার্থীদের চলছে ব্যাপক প্রচারণা। থেমে নেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও । শিক্ষা ক্যাডার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রুপে রাতভর বিরামহীনভাবে চলছে প্রচারণা। একে অপরকে ঘায়েল করবার স্টেটাসে ফেসবুক সয়লাব। কেউ কেউ আবার হোয়াটসআপে গ্রুপ খুলেও চালাচ্ছে তাদের প্রচারণা।

এবারের নির্বাচনে তিনটি প্যানেল ও দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছে। তন্মধ্যে ‘ক’ নামক প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছে রুহুল কাদির-হুমায়রা-কামাল। এ প্যানেল হতে গত নির্বাচনেও অধিকসংখ্যক প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিল। তাদের নেতৃত্বে ছিল শওকত হোসাইন মোল্লা। ‘নো বিসিএস, নো ক্যাডার আন্দোলন’ এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে তরুন ভোটাররা গতনির্বাচনে তাদের সাথে ছিল। কিন্তু গত নির্বাচনে অধিকসংখ্যক প্রার্থী বিজয়ী হলেও তারা শিক্ষা ক্যাডার উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। নিজেদের মধ্যে বিভক্তির কারণে এবারের নির্বাচনে ‘ক’ প্যানেলের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা গতবারের জনসমর্থন হারিয়েছে। তাদের পক্ষে গতবারের তারুণ্যের সেই সমর্থন নেই । দপ্তর বা কলেজে তাদের প্রচারণা একটু কম দেখা যাচ্ছে। ফেসবুকেই তারা বেশি প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের প্যানেল হতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোন পদে নির্বাচিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা এ নির্বাচনে নেই এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

মামুন- জিয়া- নাসির এর নেতৃত্বে রয়েছে ‘খ’ নামক প্যানেলটির । এই প্যানেলটি ‘ক’ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী। নিজেদের সমিতির মূলধারা হিসেবে দপ্তর বা কলেজে বেশ জোরেশোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন। খোঁজ  নিয়ে জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত সমিতির সাবেক নেতাদের কেউ কেউ এই প্যানেলের হয়ে কাজ করছেন। শিক্ষা ক্যাডার সমিতির কয়েকজন সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায়, সভাপতি পদে মামুনউল হকের সাথে শাহেদুলের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে। মামুনউল হকও গত কমিটির নির্বাচিত সহ-সভাপতি ছিল। গত সমিতিতে তেমন কোনো ভূমিকা না রাখতে পারলেও এবারের নির্বাচনে প্রচারণায় নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। এক সময়ে নায়েমে চাকুরী করার সুবাদে তার পরিচিতিও রয়েছে বেশ। এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের অবস্থা বেশ নাজুক। তবে কয়েকটি বিভাগে তাদের নির্বাহী সদস্য জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাচভিত্তিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারুণ্যের ভোট এবার তানভীর হাসানের পক্ষে তথা ‘গ’ নামক প্যানলকেই তারা বেছে নিয়েছেন।

‘গ’ নামক প্যানেলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন শাহেদ- তানভীর- মোস্তাফিজ । দুই প্যানেলের নানাবিধ সমালোচনা উপেক্ষা করে শিক্ষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই প্যানেলটি। সাধারণ ভোটাররা বিশ্বাস করে শিক্ষা ক্যাডারের কোনো কিছু অর্জন হলে তা ‘গ’ প্যানেলের মাধ্যমেই সম্ভব। এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদে তানভীর হাসান বেশ জনপ্রিয়। সকল পর্যায়ের ভোটারগণ তার সোজাসাপ্টা কথার উপরে বিশ্বাস রাখতে চাচ্ছে। তারুণ্যের বেশিরভাগ সদস্যই তানভীর হাসানের পক্ষে। বিপুল ভোটে তানভীর হাসান শিক্ষা ক্যাডার সমিতির নির্বাচনে সর্বকণিষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছেন এমনটাই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

সমিতির নির্বাচন নিয়ে নায়েমের সাবেক মহাপরিচালক বর্তমান কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নিজামুল করিম বলেন, আমার ৩০ বছরের পেশাগত জীবন ও এসোসিয়েশনের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু বলতে পারি শিক্ষা ক্যাডার এখন সংকটের সন্নিকটে। নবসরকারিকৃত শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র রুখতে আসন্ন বিসিএস এডুকেশন ক্যাডার এসোসিয়েশনের নির্বাচনে ‘শাহেদ-তানভীর-মোস্তাফিজ’ -এর ‘গ’ প্যানেলের বিকল্প নেই।

এই প্যানেলের কোষাধ্যক্ষ পদে সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান লিখন চব্বিশ ব্যাচের দুইবারের নির্বাচিত সভাপতি। তিনিও বেশ জনপ্রিয়।তিনিই কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হবেন এমনটাই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে শওকত হোসেন মোল্লাও বেশ শক্তিশালী প্রার্থী। তবে গতবারের মতো এবার তারুন্য তার পাশে নেই। তবে তিনি তার ব্যাচে বেশ সংখ্যক ভোট পাবেন। সিনিয়রদের মধ্যেও তার বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।এ নির্বাচনে তানভীর হাসানের সাথে তাকেই প্রতিদ্বন্ধী ভাবছেন অনেকেই।

ঢাকা মহানগর ও জেলা শহুরের বড় বড় কয়েকটি কলেজ হতে প্রাপ্ত তথ্যে এবারের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের  দ্বার প্রান্তে শাহেদ- তানভীর- লিখন প্যানেল। সব ঠিক থাকলে আগামী ০৯ জুন আঞ্চলিক নির্বাইী সদস্য ব্যতীত প্রায় সকল পদে ‘গ’ প্যানেল বিজয়ী হবে।

উল্লেখ্য, শিক্ষা ক্যাডারের নানাবিধ সঙ্কট ও সমস্যা নিয়ে আন্দোলন করেছেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার সমিতি। আর এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী। শিক্ষা ক্যাডারদের দাবি পূরণের আন্দোলনে শাহেদুল খবিরের নেতৃত্ব প্রশংসা কুড়িয়েছে। ফলে শাহেদুল খবির চৌধুরীর প্যানেল শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে একটা আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০১/০৬/২০২৪


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.