নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনাঃ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে বিদেশ নির্ভরতা কমাতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। আর স্বনির্ভরতা অর্জনে তিনি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম বা যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ও প্রমাণক ব্যবস্থাপনা এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের খসড়া কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা ও ফিডব্যাক প্রদানসংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সভাকক্ষে মঙ্গলবার (১৪ মে) ইউজিসির আয়োজনে দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার। এ ছাড়াও কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন কুয়েটের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. সোবহান মিয়া। অনুষ্ঠানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান এপিএ বাস্তবায়নে নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
ইউজিসি এপিএ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আলমগীর বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হলে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিদেশ নির্ভরতা কমাতে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কিন্তু, এখনো তাদের পণ্যে বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের মাধ্যমে শিল্প সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে বলে তিনি জানান।
এ ছাড়া তিনি দেশে বেকার সমস্যার সমাধানে শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক শ্রমবাজার উপযোগী করে গড়ে তোলা, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাঠ্যক্রম হালনাগাদ করাসহ উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের পরামর্শ দেন। ইন্টারনেটের সুবিধা নিয়ে শুধু লাইক, কমেন্টস ও শেয়ারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের সক্ষমতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন।
ইউজিসির অতিরিক্ত পরিচালক ও এপিএর ফোকাল পয়েন্ট বিষ্ণু মল্লিক- এর সঞ্চালনায় কর্মশালায় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল কাসেম চৌধুরী, কুয়েটের আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. নরোত্তম কুমার রায়, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিসুর রহমান ভূঁইয়া, কম্পট্রোলার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মনিরুল হক খান, ইউজিসির অতিরিক্ত পরিচালক জেসমিন পারভীন, উপসচিব মো. আসাদুজ্জামান, সিস্টেম এনালিস্ট দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র দাসসহ ইউজিসি, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের ৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিএর আহ্বায়ক, ফোকাল পয়েন্ট/ বিকল্প ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তারা কর্মশালায় অংশ নেন।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মিহির রঞ্জন হালদার বলেন, এপিএ চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতামূলক কাজের পরিবেশ তৈরি এবং ভালো কাজের পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ ছাড়া তিনি আগামী অর্থবছরে কুয়েট এপিএতে ভালো করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, উচ্চশিক্ষায় গুণগত পরিবর্তনে ইউজিসি এপিএ বাস্তবায়নে অর্থ বিনিয়োগ ও সময় ব্যয় করছে। এপিএর লক্ষ্য নির্বাচনে সক্ষমতা বিবেচনা করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় গুণগত পরিবর্তন সাধন এবং সহজ বাস্তবায়নযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করার পরামর্শ প্রদান করেন। এ ছাড়া এপিএ ও উচ্চশিক্ষার কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইউজিসি পারফরমেন্স বাজেট বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বলে তিনি জানান।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৪/০৫/২০২৪
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.