ঢাকাঃ প্রতিষ্ঠাকালীন বরাদ্দ পাওয়া জমি উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ১১টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয়টির শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, প্রতিষ্ঠাকালীন বরাদ্দ পাওয়া জমিতে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠ করা হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দ পাওয়া জমি ফেরত দিতে হবে।
জানা যায়, ১৯২০ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার কলকাতা গেজেটের মাধ্যমে ২৯৮.৫ একর জায়গায় ‘দ্যা বেঙ্গল এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করে। দেশ ভাগের পর যা ‘পূর্ব পাকিস্তান এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট’ এবং স্বাধীনতার পর ‘বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট’ হিসাবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে ২০০১ সালে তৎকালীন সরকার এটিকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করে।
দীর্ঘ ঘটনা প্রবাহের মধ্যদিয়ে বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ করা জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল হাসপাতাল, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র এবং আলোচিত বাণিজ্য মেলার মাঠসহ সংশ্লিষ্ট এলাকা অন্তর্ভুক্ত করে।
আন্দোলনকারীরা জানান, ১৯৩৮ সালে (বিএআই) কার্যক্রম শুরু হওয়ার সময় এই এলাকার (বিএআই) আওতায় ছিল। এরশাদ সরকারের আমলে তৎকালীন কৃষি কলেজের মাঠটি পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠের জন্য নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শেকৃবি শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসের গবেষণার জায়গা খুবই অপ্রতুল। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এ জায়গাটা আমাদের ছিল, যা আশির দশকে জোরপূর্বক নিয়ে নেওয়া হয়। যেহেতু এখানে আর বাণিজ্য মেলা হয় না এবং বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে, তাই সব মিলিয়ে জায়গাটা আমাদের প্রয়োজন। কৃষিতে উন্নত গবেষণা করার জন্যই প্রয়োজন। গণভবনের নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে মাঠ আমাদের এতদিন বঞ্চিত করা হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমলজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রজব আলী বলেন, স্বৈরাচার এরশাদ কেড়ে নিয়েছিল তৎকালীন কৃষি কলেজের মাঠটি। ওখানেই কাজী নজরুল ইসলাম হলটি টিন শ্যাড আকারে ছিল, মসজিদ, স্টাফ কোয়ার্টার , ওয়ার্ক, পোলট্রি খামার ইত্যাদি ছিল। ১৯৩৮ সালের প্রতিষ্ঠালগ্নে তৎকালীন বিএআইর আয়তন ছিল ৩৬০ একর। আজকের ফার্মগেট তৎকালীন কৃষি ফার্মের নামানুসারেই হয়েছিল।
প্লান্ট প্যাথোলজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বাণিজ্য মেলার জায়গাটি যেহেতু অব্যবহৃত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মাঠের কলেবর বৃদ্ধি খুব জরুরি, তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে জায়গাটি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এক্ষেত্রে কলকাতা গেজেটসহ প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টস আমাদের কাছে আছে।
এর আগে গত সোমবার পরিত্যক্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মাঠ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্থায়ীভাবে ব্যবহারের জন্য অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করা হয়।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০১/১০/২০২৪