হোসেনপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ: দুই সিনিয়রকে ডিঙিয়ে পদোন্নতি

কিশোরগঞ্জঃ জেলার হোসেনপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি (অনার্স) কলেজে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ‘সহকারী অধ্যাপক’ পদে পদোন্নতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কলেজটিতে দুইজন জ্যেষ্ঠ প্রভাষককে ডিঙিয়ে ইসলামী শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মুহাম্মদ মাহফুজুল হককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে পদোন্নতি বঞ্চিত ইংরেজি বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মোছা. ঝুমা আক্তার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার ও গুরুদয়াল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছেন।

এসব আবেদনে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মোছা. ঝুমা আক্তার উল্লেখ করেছেন, গত ২৩শে আগস্ট অনুষ্ঠিত বেসরকারি কলেজ পর্যায়ের পদোন্নতি সংক্রান্ত সভায় কাম্য যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও মোছা. ঝুমা আক্তারকে বাদ দিয়ে ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যা এ কলেজের ইতিহাসে নজিরবিহীন। ভুক্তভোগী প্রভাষক মোছা. ঝুমা আক্তারের অভিযোগ, হোসেনপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডিও তার পদোন্নতি সংক্রান্ত রেজুলেশনে তাকে প্রথম হিসেবে সুপারিশ করেছে।

পরে ৩ জনের নাম জেলা পদোন্নতি বাছাই কমিটির কাছে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিনি পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও মর্মাহত হয়ে পদোন্নতির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। এদিকে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হোসেনপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি (অনার্স) কলেজে কর্মরত প্রভাষকদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র মো. মোস্তফা কামাল ও মোছা. ঝুমা আক্তার। উভয়েই প্রভাষক পদে ২০১১ সালের পহেলা নভেম্বর যোগদান করেন।

তাদের মধ্যে মো. মোস্তফা কামাল সাচিবিক বিদ্যা বিষয়ের প্রভাষক। বর্তমানে পাঠ্যসূচিতে সাচিবিক বিদ্যা নামে কোনো বিষয় নেই। ফলে তার শ্রেণি কার্যক্রমও নেই। অন্যদিকে মোছা. ঝুমা আক্তার ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক। এদিকে ইসলামী শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক পদে মুহাম্মদ মাহফুজুল হক ২০১২ সালের ২৬শে জানুয়ারি যোগদান করেছেন। তবে মো. মোস্তফা কামাল, মোছা. ঝুমা আক্তার ও মুহাম্মদ মাহফুজুল হক ৩ জনেরই এমপিও হয়েছে ২০১২ সালের পহেলা নভেম্বর একই তারিখে। এ পরিস্থিতিতে গত ৫ই জুন হোসেনপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোছলেহ উদ্দিন খান এই ৩ জন প্রভাষকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদিসহ কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পদোন্নতি বাছাই কমিটির আহ্বায়কের কাছে পাঠানো সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির প্রস্তাব প্রেরণ করেন।

কিন্তু পদোন্নতি বাছাই কমিটি দুইজন জ্যেষ্ঠ প্রভাষককে ডিঙিয়ে মুহাম্মদ মাহফুজুল হককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রদান করে।

পদোন্নতি কমিটির সদস্য ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোছলেহ উদ্দিন খান বলেন, ৩ জনের নামাল্লেখসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঝুমা আক্তারের নাম সুপারিশ করলেও জেলা পদোন্নতি কমিটি সার্বিক দিক পর্যালোচনায় ইসলামী শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক মাহফুজুল হককে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছে। এতে এককভাবে তার কিছুই করার সুযোগ নেই। তবে আগামীতে পদ সৃষ্টি হলে ঝুমা আক্তারের পদোন্নতির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার ও পদোন্নতি বাছাই কমিটির সদস্য সচিব শামছুন্নাহার মাকছুদা বলেন, জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ হয় মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও) প্রাপ্তি থেকে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে ওই কলেজে শিক্ষকতা করছেন বলেই তাকে যে সিনিয়রিটি দিতে হবে এমনটি না।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ঝুমা আক্তারের পদোন্নতি সংক্রান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদনটি পেয়েছি। এ বিষয়ে কোথাও কোনো নীতিমালার লঙ্ঘন হয়েছে কিনা তা তদন্তপূর্বক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/০৯/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.