২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ দেয় এনটিআরসিএ। সে অনুযায়ী এবার চতুর্থ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে তারা। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ মার্চ এনটিআরসিএ ৫৪ হাজার ৩০৪টি শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল।
এনটিআরসিএর নিয়োগ শাখা থেকে জানা গেছে, এ বছরের শুরুতে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় কত লোকবল প্রয়োজন, তা জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়। শূন্য পদের সংখ্যা কত, তা এবারই প্রথম অনলাইনে পূরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানেরা সেই তালিকা পূরণ করার পর তা যাচাই-বাছাই করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও পরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অনুমোদন দেন। সেটিও এবার অনলাইনে করা হয়েছে।
নিয়োগ শাখার কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি জেলার শূন্য পদের চাহিদা আসার পর তা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। সে অনুযায়ী এবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ৭০ হাজার শূন্য পদ রয়েছে। এসব পদের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হলে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের যেকোনো দিন চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান বলেন, ‘আমরা শূন্য পদের সংখ্যা পেয়েছি। গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য সব বিভাগে কাজ চলছে। এখানে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রয়োজন আছে।’
অনলাইনে আবেদন, কমছে ফি
এনটিআরসিএর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদন করার ক্ষেত্রে দুই দফায় টাকা নেওয়া হয়। একটি হচ্ছে সনদ পাওয়ার জন্য। এ জন্য আবেদনের শুরুতে ৩৫০ টাকা নেওয়া হয়। আরেকটি হচ্ছে পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে সনদ পাওয়ার পর পছন্দের প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সময়। সে সময় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের জন্য ১০০ টাকা করে ফি নেওয়া হতো। চাকরিপ্রার্থী যত ইচ্ছা তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারতেন। কেউ ৫০টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলে তাঁকে দিতে হতো পাঁচ হাজার টাকা।
তবে এবার এনটিআরসিএ সনদ পাওয়ার পর চাকরিপ্রার্থীদের পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনের নিয়মে কিছুটা বদলের সুপারিশ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এবার একজন প্রার্থী সনদ পাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবেন। আগের নিয়মে এ জন্য তাঁর খরচ হওয়ার কথা ছিল চার হাজার টাকা।
কিন্তু এবার তা কমিয়ে এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। আবেদনের নিচে লেখা থাকবে—‘পছন্দের ৪০টি প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে মেধার ভিত্তিতে যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ পান, তাহলে যোগ দেবেন কি না?’ সেখানে প্রার্থী ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বাছাই করতে পারবেন।
এ বিষয়ে এনটিআরসিএ নিয়োগ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, চাকরিপ্রার্থীদের খরচ কমাতে এবারই প্রথম অনলাইনে প্রার্থীরা পছন্দের ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করার সুযোগ পাচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে সুযোগ না পেলে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ রাখা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই এসব নিয়ম কার্যকর করা যাবে।
নতুন এ নিয়মকে সাধুবাদ জানিয়েছে এনটিআরসিএর সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরাম।