৬১ জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ সম্পন্ন, স্থগিত প্রশিক্ষণ
নিজস্ব সংবাদদাতা ।।
দেশের ৬১ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। আদালতের মামলা-জটিলতা নিরসন হওয়ায় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের যোগদান ও পদায়ন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। তবে করোনা ভাইরাস আতঙ্কের কারণে সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয়ের আইন শাখা থেকে জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে স্থগিতাদেশ বাতিল করায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ৩২ জেলায় সহকারি শিক্ষক যোগদান, পদায়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করা হয়। আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় বাকি ২৯ জেলায় শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত থাকে। এরপর ১ মার্চে ৫টি জেলায়, ৫ মার্চ ১০টি জেলা, ৮ মার্চ ঢাকাসহ ৫টি জেলা, ৯ মার্চ ৫টি জেলা এবং ১২ মার্চ চারটি জেলার স্থগিতাদেশ বাতিল করা হয়। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে নির্দেশনা জারি করে এসব জেলায় নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম আল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত কর আজ গণমাধ্যমকে জানান, আদালতের স্থগিতাদেশ বাতিল করতে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। এতে করে পর্যাক্রমে দেশের সকল জেলার নিয়োগের স্থাগিতাদেশ আদালত থেকে বাতিল করা হলে সকল জেলায় শিক্ষক নিয়োগ ও পদায়ন দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সর্বশেষ গাইবান্ধা, মানিকগঞ্জ, পিরোজপুর, পঞ্চগড় ও নরসিংদী জেলায় নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ছিল। গত ১২ মার্চে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে স্থগিতাদেশ বাতিল হওয়ায় সর্বশেষ এই ৫ জেলায় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তবে ২৬ ডিসেম্বরের পরে যেসকল শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের যোগদান পদায়ন শেষ করা হলেও দেশে করোনা ভাইরাসের বিস্তারের আশঙ্কা থাকায় তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবির হলে এ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। পরে ওই বছরের ১ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ পাঁচজন প্রার্থী আবেদন করেন। গত বছর সারাদেশে প্রথম ধাপে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মে, তৃতীয় ধাপে ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপে ২৮ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেপ্টেম্বরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ লিখিত পরীক্ষায় ৫৫ হাজার ২৯৫ জন পাস করেন। গত ৬ অক্টোবর থেকে নিয়োগ পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাসব্যাপী সারাদেশের সব জেলায় মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। সবশেষে গত ২৪ ডিসেম্বর এ পরীক্ষায় ৬১ জেলায় ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করে ফলাফল প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ দিকে করোনা ভাইরাসে বাংলাদেশে নতুন করে আরও তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী এবং তারা একই পরিবারের সদস্য। এ নিয়ে দেশে এখন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জনে দাঁড়াল। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ ২০২০) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি। গতকালই প্রথম বাংলাদেশে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। আর এই করোনা ভাইরাসের পাদুর্ভাবের ফলে প্রাথমিক স্তরের সকল প্রশিক্ষক অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।