২৬৫ স্কুল বন্ধ রেখে প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বৌভাতে অংশ নেয়ায় নিন্দা
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুড়িগ্রামের তিন উপজেলায় ২৬৫টি বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের ছেলের বৌভাতে অংশ নিয়েছেন শিক্ষকরা। একইসঙ্গে তারা জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে বাধ্যতামূলক চাঁদা তুলে সোনার আংটি, রেফ্রিজারেটর ও ওয়াশিং মেশিন উপহার দেন এবং প্রতিমন্ত্রী তা গ্রহণও করেন। এ ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ উদ্বেগ জানায় সংস্থাটি। এ ঘটনাকে প্রতিমন্ত্রীর ‘নির্দেশনামূলক নিমন্ত্রণ’ বলে উল্লেখ করেছে তারা।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের যোগসাজসে বিদ্যালয় বন্ধ রেখে সোৎসাহে বা বাধ্য হয়ে বৌভাতে অংশগ্রহণের এ ঘটনাকে দেশের শিক্ষাখাতকে দলীয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ধ্বংস করার ভয়াবহ দৃষ্টান্ত বলছে টিআইবি। এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তারা।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, গত রোববার কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলার সব বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে শিক্ষকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বৌভাতে অংশ নেন। বিষয়টিকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের পেশাদারিত্ব ও শিক্ষার্থীদের প্রতি নৈতিক দায়বদ্ধতার অরুচিকর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকবৃন্দের কেউ এর দায় এড়াতে পারেন না।
টিআইবি মনে করে, প্রধান শিক্ষকরা নিজেদের সংরক্ষিত তিনদিনের ছুটির সুযোগ নিয়ে ব্যক্তিগত আমন্ত্রণের বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতির জন্য সংরক্ষিত এ ছুটি এ ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহারের সুযোগ আছে কিনা সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ব্যাখার প্রয়োজন রয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এতগুলো বিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়ে কারো ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও বাধ্যতামূলক চাঁদা সংগ্রহ করে উপহার দেয়ার এ ঘটনা জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সক্রিয় যোগসাজস না থাকলে কোনো অবস্থাতেই ঘটতে পারতো না, তাও খুব সহজেই বোধগম্য। প্রতিমন্ত্রী ও তার পরিবার এ উপহার গ্রহণ করে যে ন্যাক্কারজনক মানসিকতার পরিচয় দিলেন, তার ব্যাখা কী? আর এই পুরো ঘটনার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যতই বা কী?