২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। বর্তমানে ইসির হাতে যে পরিমাণ ইভিএম সংরক্ষিত আছে, তা দিয়ে প্রায় ১০০ আসনে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে ৩০০ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে, সেই প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য ইসির হাতে এখন পর্যাপ্ত সময় রয়েছে। বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৬টি আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সূচনা হয়।
ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশে ভোট কেন্দ্র ছিল ৪০ হাজার ১৮৩টি। ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি। ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য প্রত্যেক ভোটকক্ষের জন্য একটি ইভিএম প্রয়োজন হয় এবং যান্ত্রিক ত্রুটি বিবেচনায় রেখে প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রের জন্য মোট কক্ষের অর্ধেক সংখ্যক ইভিএম অতিরিক্ত সংরক্ষণ করা হয়। সেই হিসাবে ৩ লাখ ১০ হাজার ৯৬৮টি ইভিএম প্রয়োজন হবে ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি ভোটকক্ষের জন্য। তবে প্রত্যেক বছরে ২.৫ শতাংশ হারে দেশে ভোটার বাড়ছে এবং পাঁচ বছরের প্রায় ১২.৫০ শতাংশ ভোটার বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে ভোট কেন্দ্র ও ভোটকক্ষের সংখ্যাও বাড়বে আগামী সংসদ নির্বাচনে। ইসির প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে পুরোপুরি ইভিএমে ভোট গ্রহণের জন্য ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ ইভিএমের প্রয়োজন হবে। কিন্তু বর্তমানে ইসির হাতে সংরক্ষিত আছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫৩৫টি ইভিএম।
ইসিকে সাহসী ও নিরপেক্ষ হতে বললেন রাষ্ট্রপতি :
নির্বাচন কমিশনকে সাহসিকতার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গতকাল সন্ধ্যায় নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা বঙ্গভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে এ আহ্বান আসে। নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হাবিবুল আউয়াল ও অন্য চার কমিশনার শপথ নেন। আইনের মাধ্যমে এবারই প্রথম নির্বাচন কমিশনার গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি। নিয়োগ পাওয়ার দুই সপ্তাহ পার করে রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনারদের অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাই মুখ্য।
দায়িত্ব পালনের সঙ্গে ক্ষমতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য ক্ষমতার যথাযথ প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রপতি আশা করেন নতুন নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে জাতীয় নির্বাচনসহ সব নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। নির্বাচন কমিশন সবার সহযোগিতায় দায়িত্ব পালনে সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপ্রধান।
তিনি বলেন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল, নির্বাহী বিভাগসহ সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সাক্ষাতের সময় নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনাররা দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনা কামনা করেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন, সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এবং নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. হুমায়ন কবিব।