১৮০০ টাকার হল ফি ২৮০০, জানে না প্রশাসন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ চলতি বছর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিভিন্ন আবাসিক হলের ফি বাড়ানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে গতকাল রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ‘হল সংযুক্তি ফি’ আদায় স্থগিত করেছে প্রশাসন।
এর আগে হলের সব খাত মিলিয়ে ফি নেওয়া হতো এক হাজার ৮০০ টাকা। কিন্তু নতুন শিক্ষাবর্ষে অতিরিক্ত হল সংযুক্তি ফি বাবদ এক হাজার টাকা বাড়িয়ে মোট দুই হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করেছে হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। তবে ফি বাড়ানোর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ‘আবাসিক হলগুলোতে ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাঁরা অবগত ছিলেন না। তবে হলে যৌক্তিকভাবে কোনো ফি বাড়ানোর প্রয়োজন হলে সেটি প্রাধ্যক্ষ পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবে। কেননা অর্থনৈতিক যেকোনো বিষয় প্রশাসনকে না জানিয়ে কেউ করতে পারে না। এটি অনেক বড় অন্যায় এবং প্রক্রিয়াগতভাবেও ভুল।’
শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম আন্তর্জাতিক ডরমেটরির ওয়ার্ডেন অধ্যাপক আতাউর রহমান রাজু বলেন, ‘যেকোনো পরিবর্তন হুট করে বাঞ্ছনীয় নয়। এটি একটি ক্রমবিবর্তন ও ধারাবাহিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে হলে সেটির প্রতিক্রিয়া এমন আসত না।’
শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক সুজন সেন জানান, শিক্ষার্থীদের সেবা প্রদানের জন্যই এ ফি বাড়ানো হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ যৌক্তিক। যাঁরা এটা নিয়ে কথা বলছেন, তাঁরা এর যথাযথ ব্যাখ্যা না জেনেই বলছেন।
তিনি আরো জানান, তিনি প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক থাকাকালে হল সংযুক্তি ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগে হল ফি বাবদ নেওয়া হতো এক হাজার ৫০০ টাকা। এর সঙ্গে দুটি তহবিলের জন্য ১০০ টাকা ও ২০০ টাকা যোগ করে এক হাজার ৮০০ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া হলের বিভিন্ন কাজের জন্য হল সংযুক্তি ফি বাবদ এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হল ফি বাবদ যে টাকা আদায় করা হচ্ছে এর মধ্যে ৮০০ টাকা ইন্টারনেট, গ্রন্থাগার, হল বার্ষিক ফি, হল সমাপনী, হল কার্ড, বঙ্গবন্ধু কর্নার, পত্রিকা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ফিসহ অন্যান্য ফি বাবদ আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়া হল সংযুক্তি ফি বাবদ আদায় করা হয়েছে অতিরিক্ত এক হাজার টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে যে অর্থ জমা হয়, সেটির কোনো পরিবর্তন প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হয়নি। হলের নিজস্ব কতগুলো বিষয় আছে, তা হল থেকে নির্ধারণ করা হয়। এখন তারা কোন কোন খাতে কত টাকা বাড়িয়েছে, সে বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হুমায়ন কবীর বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে কোনো কিছু বর্ধিত করা যাবে না। বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে আমাদের জানানোর জন্য প্রভোস্ট কাউন্সিলকে বলা হয়েছে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৬/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়