১১০জন শিক্ষা ছুটিতে
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক আছেন ৩১৪ জন। এর মধ্যে শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন ১১০ জন। এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষক না থাকায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ ভেদে ১০ থেকে ৭০ ভাগ পর্যন্ত শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৪ শিক্ষকের মধ্যে ১৫ শিক্ষক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৬ শিক্ষকের মধ্যে তিনজন, রসায়ন বিভাগের ১২ শিক্ষকের মধ্যে ৮, মার্কেটিং বিভাগের ৮ শিক্ষকের মধ্যে ৬, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১০ শিক্ষকের মধ্যে ৫, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ৮ শিক্ষকের মধ্যে ৪, ফার্মেসি বিভাগের ১২ শিক্ষকের মধ্যে ৬, পরিবেশবিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৭ শিক্ষকের মধ্যে ৪, পরিসংখ্যান বিভাগের ১৪ শিক্ষকের মধ্যে ৭ এবং অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১২ শিক্ষকের মধ্যে ৬ শিক্ষক ছুটিতে রয়েছেন। এর মধ্যে অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নুরুন্নবী, পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পিয়ার হোসেন, ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উম্মে হাফসা আশা ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুল আনোয়ার ইতোমধ্যে নিজেদের চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ছুটির নিয়মে এক বিভাগের শতকরা ৪০ ভাগ শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে থাকার নিয়ম ছিল। বর্তমানে এ বিষয়ে কোনো বিধিবিধান নেই। তবে চাকরিতে যোগদানের দুই বছর শেষে পিএইচডি ও এমফিল করতে শিক্ষা ছুটি পাওয়ার বিধান বর্তমানে কার্যকর রয়েছে। এতে পিএইচডি করার জন্য পাঁচ বছর ও এমফিল বা স্নাতকোত্তর করার জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। সময়সীমা শেষে বিদেশ থেকে ফিরছেন না অনেক শিক্ষক। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান শিক্ষক নিজেদের নির্ধারিত ক্লাস নিচ্ছেন। পাশাপাশি তাদের নিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ক্লাস। এতে একাধিক বিভাগে শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৪টি বিভাগে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আন্তর্জাতিক গড় অনুপাতের মানদণ্ড ধরা হয় ১: ২০। সেখানে বশেমুরবিপ্রবিতে বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাত ১: ৫০। অর্থাৎ প্রতি পঞ্চাশ শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র একজন শিক্ষক রয়েছেন।
রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, শিক্ষা ছুটিতে থাকা শিক্ষকদের অনেকেরই ছুটি শেষ হয়েছে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। তারা যোগদান না করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে কেউ কেউ অব্যাহতির আবেদন করেছেন। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দেনাপাওনা মেটানোর পর অব্যাহতি দেওয়া হবে।
বিশ্বদ্যিালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব বলেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পরই শিক্ষক সংকট সমাধানের চেষ্টা করে আসছেন। ইতোমধ্যে ইউজিসি ও রিজেন্ট বোর্ডে আলোচনা করে বেশ কয়েকটি বিভাগে স্থায়ী ও খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। শিক্ষক সংকট কাটাতে আরও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। শিক্ষক সংকট কাটিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান নিশ্চিত করবেন বলে জানান তিনি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৯.০৩.২৪