দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
১০ মাধ্যমিক স্কুল নির্মাণ: ব্যয় বাড়ছে, বাড়ছে মেয়াদও
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ ঢাকার আশপাশে ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পে বিরাজ করছে ধীরগতি। প্রকল্প গ্রহণের সাড়ে পাঁচ বছরের বেশি সময় পার হলেও ভৌত অগ্রগতি ৪৭ দশমিক ০৯ শতাংশ। এছাড়া ১৮২ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় হলেও আর্থিক অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। সেই সঙ্গে মামলাজনিত জটিলতায় তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে একটি বিদ্যালয়ের নাম। বাকি ৯টির কাজ এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম সংশোধন হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এসেছে পরিকল্পনা কমিশনে। এতে একদিকে যেমন ব্যয় বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে মেয়াদও। ফলে তিন বছরের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময় যাবে সাড়ে সাত বছর-খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হলে ব্যয় বাড়বেই। যদিও অনেক ক্ষেত্রে বলা হয়, ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কিন্তু কথাটা ঠিক নয়। কারণ, প্রকল্প থাকলে কিছু খরচ চলমান থাকে। আমরা সব সময় প্রকল্প সংশোধনের বিপক্ষে। কিন্তু বাস্তবতা অস্বীকার করা যায় না। যৌক্তিক কারণ থাকলেই কেবল সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।
সূত্র জানায়, মূল অনুমোদিত ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) ১০টি বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে জমি চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন করে বিভিন্ন দিক বিবেচনায় ১০টি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে। এগুলো হলো-নবীনগর, আশুলিয়া, ধামরাই, হেমায়েতপুর, সাতারকুল, কেরানীগঞ্জ পশ্চিমদী, জোয়ারসাহারা, সাইনবোর্ড, পূর্বাচল এবং চিটাগাং রোড। কিন্তু ঢাকার খিলক্ষেত থানার জোয়ারসাহারা মৌজায় নির্বাচিত জমিটি মামলা জটিলতায় পড়ে। এছাড়া ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে দেখা দেয় দীর্ঘসূত্রতা। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগের এডিপি সভায় জোয়ারসাহারার জমিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। বাকি নয়টি স্থান চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, আপাতত আমরা ৯টি বিদ্যালয়ের বিষয়ে কাজ করছি। প্রকল্পে প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে মেয়াদ বাড়ানো হলে পরবর্তী সময়ে হয়তো বাদ পড়াটি অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ আছে। তিনি আরও জানান, জোয়ারসাহারায় জমি নিয়ে জটিলতায় মামলা আছে। এছাড়া আশুলিয়ায় জমি নিয়েও চলছে জটিলতা। সেখানে আমরা যে জমির চাহিদা দিয়েছি, সেখানে বড় বড় শিল্পকারখানা আছে। এর ফলে সেই জমির পরিবর্তে জেলা প্রশাসকের কাছে নতুনভাবে জমি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সে প্রক্রিয়াও দীর্ঘমেয়দি। প্রকল্পে ধীরগতির কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকল্পটির বাস্তবায়ন দেরি হওয়ার প্রধান কারণ হলো দুটি। জমি অধিগ্রহণ এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ডিজাইন পরিবর্তন করা।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর জানায়, প্রকল্পটির মূল অনুমোদনের মেয়াদ ধরা ছিল তিন বছর (২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন)। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এনইসির (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ) নির্দেশনা মেনে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এক বছর মেয়াদ বাড়ায় পরিকল্পনা কমিশন। পরবর্তী সময়ে ব্যয় ছাড়া ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত আরও এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এতেও শেষ হয়নি কাজ। এবার প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ২ বছর ৬ মাস বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৬৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এখন ৭৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৭৫০ কোটি ৪০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি সংশোধনের ক্ষেত্রে আটটি কারণ তুলে ধরেছেন সংশ্লিষ্টরা। এগুলো হলো-প্রকল্প এলাকা ও বিবরণ সংশোধন করা হয়েছে। এছাড়া নির্মিতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ড্রইং ও ডিজাইন সংশোধন। নির্মাণ ও পূর্তকাজের ২০১৪ সালের রেট শিডিউল পরিবর্তন করে ২০২২ সালে রেট শিডিউল যুক্ত করা হয়েছে। নির্মাণ ও পূর্তকাজের প্যাকেজ সংশোধন। কিছু কাজের ব্যয়বৃদ্ধি বা কমে যাওয়া এবং কোড সংশোধন। আইসিটি ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম সামগ্রীর তালিকা পরিমার্জন। প্রকল্প থেকে প্রধান শিক্ষকের বাসভবন বাদ দেওয়া এবং জিমনেশিয়াম ও ভোকেশনাল ট্রেড কোর্স যুক্ত করা হয়। এসব কারণে মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রকল্প সংশোধনী প্রস্তাবে।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, জোয়ারসাহারা বিদ্যালয়ের স্থান নিয়ে মামলার নিষ্পত্তি না হলে কিছুই করা যাবে না। এক্ষেত্রে পুরো প্রকল্পটির বাস্তবায়ন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য এটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমাদের কাছে তাদের ব্যাখ্যা যুক্তসংগত মনে হওয়ায় আমরা একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করেছি। সুত্রঃ দৈনিক যুগান্তর
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২০/০২/২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে পেজে লাইক দিয়ে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
এই বিভাগের আরও খবর