সয়াবিন তেল শরীরের জন্য ক্ষতিকরঃ বাণিজ্য মন্ত্রী
সয়াবিনের চেয়ে রাইস ব্র্যান ভালো তাই সবার সয়াবিন না খেয়ে রাইস ব্র্যান খাওয়া উচিৎ।
বুধবার (১৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির দ্বিতীয় সভা শেষে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে সাত লাখ টন রাইস ব্র্যান তেল উৎপাদন সম্ভব। তাই আমদানির ওপর নির্ভরশীল না থেকে সরকার রাইস ব্র্যান তেলের উৎপাদনের দিকে নজর দিচ্ছে। সেটা হলে ২৫ শতাংশ তেলের চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে।
মন্ত্রী বলেন, লেখা আছেই সয়াবিন, পাম ওয়েল খেলে শরীরে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যখন ক্রাইসিস হয় তখন ব্যবহারেও সাশ্রয়ী হওয়া দরকার। গ্লোবাল এই ক্রাইসিস আমাদের মিলিতভাবে ফেস করতে হবে। আমরা ক্যানোলার কথা বলেছি, এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এটা কানাডা থেকে আসে। দাম একটু বেশি পড়বে হয়তো আমরা সেটাও লক্ষ রাখছি। প্রকৃত দাম বের করার চেষ্টা করছি, যদি ডিউটি স্ট্রাকচারে কিছু করা যায়। তাতে বিকল্প একটা সোর্স হলো এবং শরীরের জন্য উপকারী একটা তেল পাওয়া গেল।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু বলেন, কয়েক দিন ধরে একটি কথা বাতাসে বাতাসে উড়ছে ভারত অন্য দেশে গম রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। আমাদের আমদানিকৃত গমের প্রায় ৬৪ শতাংশ ভারত থেকে আসে। যে কারণে এ কথা শোনার পরে বাজারে দামের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। কথাটা একেবারে ঠিক না আমাদের জন্য। ভারত রপ্তানি বন্ধ করেছে অন্যান্য দেশে কিন্তু জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) বন্ধ করা হয়নি, যত খুশি আনা যাবে। এমনকি প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যারা ভারত থেকে আমদানি করে তারা চাইলে চিঠি দিয়ে পারমিশন করে নিতে হবে। সেই পারমিশনের শতভাগ আমদানিতে কোনো বাধা নেই। যার জন্য ভারত থেকে যে নিষেধাজ্ঞা তা কোনোভাবেই আমাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মেঘ দেখলেই বলে ঝড় এসেই গেল। তাছাড়া আমাদের দেশে এই মুহূর্তে যে পরিমাণ মজুত আছে আমরা তাতে কোনো ভয়ের আশঙ্কা করি না।
তিনি বলেন, দেশে গম আমদানির ৬৪ শতাংশ আসে ভারত থেকে। দেশটি গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও তা বাংলাদেশের জন্য পুরোপুরি প্রযোজ্য হবে না। তা ছাড়া এ মুহূর্ত দেশে গমের যে মজুত, তাতে ভয়ের কিছু নেই। নিত্যপণ্যের দাম কবে নাগাদ মানুষের নাগালে আসবে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই, এটির উত্তর জানতে হলে আমাকে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলে যেতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম না কমা পর্যন্ত আমরা কিছুই করতে পারব না।
ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে দুই আড়াই বছর আমদানি বন্ধ ছিল। এখন স্বাভাবিক হওয়ায় প্রচুর ক্যাপিটাল মেশিনারিজের ওপর চাপ পড়েছে। যার ফলে দুই বছরের চাপ একবারে পড়েছে, সেই প্রভাব পড়েছে। জ্বালানিতে তেলের দাম বেড়েছে, সেটার প্রভাব পড়েছে। সবকিছু মিলে প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি দামও বেড়েছে।
বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর চাপ পড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত দুই বছর আমদানি-রপ্তানি কম ছিল। ফলে রিজার্ভ বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছিল। এখন যখন চাপ পড়েছে তখন রিজার্ভ কমে ৪০ বা ৪১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যেটা বেড়েছিলো সেটা বিশেষ কারণে। এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
আমাদের দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ অনেক শক্তিশালী জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তো শ্রীলঙ্কাকে প্রয়োজনে সাহায্য দিয়েছি। কোনো না কোনো কারণে কেউ না কেউ কোনো একটা সুযোগ পেলেই আমাদের ডিফেন্স করতে হয়। আমাদের ঘাবড়ানোর কোনো কিছু নেই। ক্রাইসিস বৈশ্বিক, এটা মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। একটু সাশ্রয়ী হতে হবে। পরিস্থিতি এমন থাকবে না, আমরা পার হয়ে যাবো।