স্বাক্ষর জাল করে দুই জনকে এমপিওভুক্ত করলেন সভাপতি-প্রধান শিক্ষক
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের সিল, প্যাড ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে চতুর্থ শ্রেণির দুইজন কর্মচারীকে নিয়োগের পর এমপিওভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদ কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।ম
মঙ্গলবার বিকেলে ইউএনওর কাছে তথ্য প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই চেয়ারম্যান।
অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষকের নাম মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর ওই বিদ্যালয়ের সভাপতির নাম মো. আজিজুল হক।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জোতমোড়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক ও সভাপতি মো. আজিজুল হক গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ওই বছরের ১ অক্টোবর বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক পদে মো. মেহেদী হাসান শান্তকে ও পরিছন্নতা কর্মী পদে জোসনা বেগমকে নিয়োগ দেন। নিয়োগ প্রাপ্তদের ওই বছরের ৪ অক্টোরব বিদ্যালয়ে যোগদান দেখানো হলেও গত নভেম্বর পর্যন্ত হাজিরা খাতায় তাদের নাম ও উপস্থিতি স্বাক্ষর নেই।
লিখিত অভিযোগে আরও জানা যায়, নিয়ম বহির্ভূতভাবে যোগদান করা ওই দুই কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করতে বিদ্যালয়ের অবস্থানগত প্রত্যয়নের জন্য গত ২৫ সেপ্টেম্বর যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের ( ইউপি) যে প্যাড ও সিল ব্যবহার করা হয়েছে, তা জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা। এতে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। প্যাডে নেই স্মারক নম্বরও।
এ বিষয়ে যদুবয়রা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান জানান, অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে তার প্যাড, সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দুই কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করেছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। নিয়োগ বাতিল ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে ইউএনও স্যারের কাছে তথ্য ও প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
চেয়ারম্যানের অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, এমপিওভুক্ত করার জন্য চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নের প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি তার বিদ্যালয়ের পাসওয়ার্ড কয়েকবার হ্যাক হয়েছে। কেউ ষড়যন্ত্র করে চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন জাল করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে তিনি দাবি করেন।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. আজিজুল হকের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে একটি চক্র ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সার বলেন, এমপিওভুক্ত করার জন্য চেয়ারম্যানের অবস্থানগত প্রত্যয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ পেপার। প্রধান শিক্ষকের পাঠানো কাগজপত্রের মধ্যে চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নটি জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপক্ষে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।