সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে? ইসরায়েল না ইরান
অনলাইন ডেস্ক ||
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। দেশ দুটির নীতিনির্ধারকদের বক্তব্য শুনলে মনে হয়, যুদ্ধ এখন সময়ের ব্যাপার। শক্তি-সামর্থ্যে দেশ দুটি বেশ কাছাকাছি। ফলে, যুদ্ধ বাঁধলে কে জিতবে এটা এককথায় বলা সহজ নয়। তাছাড়া, অভ্যন্তরীণ সামর্থ্যই যুদ্ধের ফল নির্ধারণ করে না। রণকৌশল, কূটনীতি, শক্তির যথাযথ প্রয়োগ ইত্যাদি বিষয়ও নির্ভর করে। তার চেয়েও বড় ব্যাপার হলো- যুদ্ধ বাঁধলে পরাশক্তিগুলো কে কার পক্ষে থাকবে, কে কাকে কত সমরাস্ত্র ও অর্থ দেবে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বাঁধলে এগিয়ে থাকবে ইরান
তবে, সম্ভাব্য যুদ্ধে দেশ দুটি যদি শুধু অভ্যন্তরীণ সম্পদ ব্যবহার করে, এগিয়ে থাকবে ইরান। বিশ্বব্যাপী সামরিক সামর্থ্য পর্যবেক্ষণকারী ‘গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার’-এর সর্বশেষ হিসাব সে কথাই বলছে।
তাদের ২০২১ সালের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ১৩৯টি দেশের মধ্যে ইরানের সামরিক অবস্থান ১৪। তাদের সেনাসদস্য প্রায় ১৯ লাখ ২৫ হাজার। সক্রিয় সেনাসদস্য ৫ লাখ ২৫ হাজার। রিজার্ভ সদস্য ৩ লাখ ৫০ হাজার। প্যারামিলিটারি রয়েছে ১০ লাখ ৫০ হাজার।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের অবস্থান ২০। তাদের সেনাসদস্য প্রায় ৬ লাখ ৪৩ হাজার। সক্রিয় সেনাসদস্য ১ লাখ ৭০ হাজার। রিজার্ভ সদস্য ৪ লাখ ৬৫ হাজার। প্যারামিলিটারি রয়েছে মাত্র ৮ হাজার।
ইরানের মোট আকাশযান ৫১৬। ফাইটার ১৬১। ডেডিকেটেড অ্যাটাক ২৩। ট্রান্সপোর্ট ৮৫। ট্রেইনার ৯৬। স্পেশাল মিশন ৯। ট্যাঙ্কার ফ্লিট ৬। হেলিকপ্টার ৯৯। অ্যাটাক হেলিকপ্টার ১২।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের মোট আকাশযান ৫৯৫। ফাইটার ২৪১। ডেডিকেটেড অ্যাটাক ২৩। ট্রান্সপোর্ট ১৫। ট্রেইনার ১৫৪। স্পেশাল মিশন ২৩। ট্যাঙ্কার ফ্লিট ১১। হেলিকপ্টার ১২৮। অ্যাটাক হেলিকপ্টার ৪৮।
ইরানের স্থলবাহিনীতে ট্যাঙ্ক রয়েছে ৩ হাজার ৭০৯। আর্মার্ড ভেহিকেল ৮ হাজার ৫০০। সেলফ প্রোপেলড আর্টিলারি ৭৭০। টাওয়েড আর্টিলারি ২ হাজার ১০৮। রকেট প্রজেক্টর ২ হাজার ৪৭৫।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের স্থলবাহিনীতে ট্যাঙ্ক রয়েছে ১ হাজার ৬৫০। আর্মার্ড ভেহিকেল ৭ হাজার ৫০০। সেলফ প্রোপেলড আর্টিলারি ৬৫০। টাওয়েড আর্টিলারি ৩০০। রকেট প্রজেক্টর ১০০।
ইরানের নৌবাহিনীর মোট সম্পদ ৩৯৮। এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার নেই। হেলিকপ্টার ক্যারিয়ার নেই। ডেস্ট্রয়ার নেই। ফ্রিগেট ৬। করভেট ৩। সাবমেরিন ২৯। প্যাট্রল ২০। মাইন ওয়ারফেয়ার নেই।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর মোট সম্পদ ৬৫। তাদেরও এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার নেই। হেলিকপ্টার ক্যারিয়ার নেই। ডেস্ট্রয়ার নেই। ফ্রিগেটও নেই। করভেট ৪। সাবমেরিন ৫। প্যাট্রল ৪৮। মাইন ওয়ারফেয়ার তাদেরও নেই।
ইরানের প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে আছে- তেল উৎপাদন ৪,২৫০,০০০ বিবিএল। তেল কনজাম্পশন ২,০০০,০০০ বিবিএল। প্রোভেন অয়েল রিজার্ভ ১৫৭,২০০,০০০,০০০ বিবিএল।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে আছে- তেল উৎপাদন ৪০০ বিবিএল। তেল কনজাম্পশন ২৫০,০০০ বিবিএল। প্রোভেন অয়েল রিজার্ভ ১২,৭৩০,০০০ বিবিএল।
ইরানের লজিস্টিকসে রয়েছে- লেবার ফোর্স ৩০,৫০০,০০০। মার্চেন্ট মেরিন স্ট্রেংথ ৭৮৫। পোর্ট ও টার্মিনাল ৪। রোডওয়ে কাভারেজ ১৭২,৯২৭। রেলওয়ে কাভারেজ ৮,৪৪২। সার্ভিসেবল এয়ারপোর্ট ৩১৯।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের লজিস্টিকসে রয়েছে- লেবার ফোর্স ৩,৮৯৩,০০০। মার্চেন্ট মেরিন স্ট্রেংথ ৪০। পোর্ট ও টার্মিনাল ৫। রোডওয়ে কাভারেজ ১৮,২৯০। রেলওয়ে কাভারেজ ৯৭৫। সার্ভিসেবল এয়ারপোর্ট ৪২।
ইরানের অর্থনৈতিক সামর্থ্য- ডিফেন্স বাজেট ১৪,১০০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার। এক্সটারনাল ঋণ ৭,৯৯৫,০০০,০০০ মার্কিন ডলার। ফরেন এক্সচেঞ্জ/স্বর্ণ রিজার্ভ ১২০,৬০০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার। পার্চেইজিং পাওয়ার প্যারিটি ১,৭৫৭,৫০০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের অর্থনৈতিক সামর্থ্য- ডিফেন্স বাজেট ১৬,৬০০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার। এক্সটারনাল ঋণ ৮৮,৬৬০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার। ফরেন এক্সচেঞ্জ/স্বর্ণ রিজার্ভ ১১৩,০০০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার। পার্চেইজিং পাওয়ার প্যারিটি ৩২৮,০০০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার।
ইরানের ভৌগলিক সামর্থ্য- স্কয়ার ল্যান্ড এরিয়া ১,৬৪৮,১৯৫ কিমি। কোস্টলাইন কাভারেজ ২,৪৪০ কিমি। শেয়ার্ড বর্ডার ৫,৮৯৪ কিমি। ব্যবহারযোগ্য ওয়াটারওয়ে ৮৫০ কিমি।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের ভৌগলিক সামর্থ্য- স্কয়ার ল্যান্ড এরিয়া ২০,৭৭০ কিমি। কোস্টলাইন কাভারেজ ২৭৩ কিমি। শেয়ার্ড বর্ডার ১,০৬৮ কিমি। ব্যবহারযোগ্য ওয়াটারওয়ে নেই তাদের।
ইরানের মোট জনসংখ্যা ৮৪,৯২৩,৩১৪। এভেইলেবল ম্যানপাওয়ার ৪৭,৫৫৭,০৫৬। ফিট-ফর সার্ভিস ৩৯,৯৪৭,৯২৭। বছরে সামরিক বয়সপ্রাপ্ত ১,৩৯৮,১১৭।
ইসরায়েলের মোট জনসংখ্যা ৮,৬৭৫,৪৭৫। এভেইলেবল ম্যানপাওয়ার ৩,৬৪৩,৭০০। ফিট-ফর সার্ভিস ৩,০২৪,২৭১। বছরে সামরিক বয়সপ্রাপ্ত ১২০,৯৭১।