সাক্ষরতা ধর্মশিক্ষা ক্যাডেট ও কেজি
আতিয়ার রহমান।।
গ্রাম বা পাড়াভিত্তিক মক্তবশিক্ষা চালু থাকলে বয়স্ক মহিলারা সাক্ষরতা, গণশিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষায় অবসর সময়ে অংশ নিতে পারে।
দিবা ও নৈশকালীন মসজিদে পাঠদান চালু রাখলে যেসব ছেলেমেয়ে শিশুশ্রমের জন্য দিবা ভাগে স্কুলে যেতে পারে না, তারা এবং বয়স্ক লোকরা মসজিদ পাঠাগারে সাক্ষরতা ও ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। এই উভয়বিধ ব্যবস্থায় সরকারের সাক্ষরতা কর্মসূচি বহুলাংশে বাস্তবায়িত হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের এবং মক্তব পাঠাগারের জন্য মহিলা শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের জন্য মাসিক বেতন-ভাতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। দেশে প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন এনজিও শিক্ষাক্রম চালু আছে। বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষা দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার।
এই অধিকার সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের অপারগতায় এনজিও কার্যক্রম বা বেসরকারি শিক্ষাক্রম চলতে পারে। তবে তা হতে হবে সরকার নিয়ন্ত্রিত জাতীয় ও ধর্মীয় নীতিমালার মধ্যেই। ধর্মবর্জিত এনজিও শিক্ষাপ্রক্রিয়া কোনোভাবেই চলতে দেয়া যাবে না।
এ দিকে সরকারের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।দেশে কত এতিমখানা মাদরাসা আছে তার সঠিক হিসাব সরকারের কাছে আছে কি না জানা নেই। তবে যেগুলো সরকারের অনুদান পায় সেগুলোর সঠিক হিসাব নিশ্চয়ই আছে। এগুলোর নাম দেয়া হয় এতিমখানা, হাফিজিয়া ফোরকানিয়া মাদরাসা।
এর কার্যক্রম শুরু হয় মূলত বেসরকারি পর্যায়ে প্রধানত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উদ্যোগে। সরাসরি সরকারের পরিচালনাধীন কিছু এতিমখানা আছে। এলাকার কিছু ধর্মপ্রাণ সমাজসেবী মসজিদসংলগ্ন অথবা অন্যত্র একটা এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করাকে দ্বীনের বিরাট খেদমত বলে মনে করেন।
নিঃসন্দেহে এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু এটাকে তারা বেশি দিন বেসরকারি পর্যায়ে ধরে রাখতে পারেন না। কারণ সরকারি অনুদান প্রাপ্তির প্রচেষ্টা চলতে থাকে এবং এক সময়ে তা পেয়েও যান। এভাবে অগণিত এতিমখানা গড়ে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে প্রায় সবগুলো ছেলেদের এতিমখানা।
খুব কমই মেয়েদের এতিমখানা থাকতে পারে। সমাজে ছেলে ও মেয়ে উভয় এতিম রয়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হয় না। সমাজের একটা কমন আইডিয়া প্রচলিত আছে। তা হচ্ছে- এতিম হলেই তারা নিঃস্ব। আসলে এটি ঠিক নয়। অনেক সম্পদশালী এতিমও আছে।
নিরপেক্ষ জরিপ করলে দেখা যাবে, অধিক সংখ্যক এতিমখানা ও মাদরাসায় এতিম ও অএতিম মিলে বসবাস করে। অবশ্য অএতিমরা গরিব ঘরের সন্তান। কিন্তু সরকারি যে অনুদান বরাদ্দ করা হয় তা মূলত এতিমদের নামে দেয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি অনুদান প্রাপ্তির জন্য পর্যাপ্ত এতিম না থাকায় অএতিমদের ‘এতিম’ সাজানো হয়। এই প্রক্রিয়া একটা দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের জন্য অশোভন।
১. এতিমখানা, মাদরাসাগুলোকে এতিম ও দুস্থ শিশু পুনর্বাসন মাদরাসা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে নামকরণ করতে হবে। সে হিসাবে সরকারি বরাদ্দের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এগুলো সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হতে হবে।
হাফিজিয়া ফোরকানিয়া ও সাক্ষরতা পাঠদান প্রক্রিয়ার সাথে সাথে কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে; শিক্ষা সমাপনান্তে এতিম ও অএতিমরা যেন স্বনির্ভর পেশাজীবী হিসেবে সমাজে বসবাস করতে পারে এবং সমাজের কাছে তারা যেন বোঝা হিসেবে বিবেচিত না হয় এবং অসহায় পরমুখাপেক্ষী দুর্বিষহ বেকার জীবন তাদের যাপন করতে না হয়। প্রয়োজনবোধে তাদের জন্য সরকারের আর্থিক সাহায্য সহযোগিতার ব্যবস্থা থাকবে।
২. সরকারি অনুদান এতিম ও দুস্থ শিশু পুনর্বাসন প্রকল্পের আনুকূল্যে বরাদ্দ করা হলে অএতিমদের আর এতিম সাজাতে হবে না। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এই গ্লানি থেকে রেহাই পাবে এবং পক্ষান্তরে অএতিম ছেলেরা অসত্য বলার অপরাধবোধ থেকে তাদের শিশুমণ মুক্ত থাকবে। ৩. প্রকল্পগুলো সরাসরি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হবে।
প্রয়োজনবোধে চাহিদা মোতাবেক বড় বড় শহরে, জেলা শহরে, থানা সদরে, এমনকি ইউনিয়নপর্যায়ে প্রকল্পগুলো চালু রাখা উচিত। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীপর্যায়ে এ ধরনের জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান চালু করতে চাইলে সরকারি অনুদান ছাড়াই পরিচালনা করতে হবে। ব্যাঙের ছাতার মতো এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়তে দেয়া যায় না। মূলত এগুলো কর্মবিমুখ বেকার ও সামাজিক বোঝা তৈরির কারখানা। ৪. ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্য প্রয়োজনমাফিক এতিম ও দুস্থ শিশু পুনর্বাসন প্রকল্প চালু রাখতে হবে।
উভয়ই সমাজের সমান অংশ। ৫. প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সরকারের সাক্ষরতা কর্মসূচি বাস্তবায়নের পক্ষে বিরাট ইতিবাচক। কেননা, প্রকল্পের আওতাধীন শিশুরা সমাজের একটা বিরাট অংশ। তাদের কর্মসূচির আওতায় না আনতে পারলে নিরক্ষতার অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করা সম্ভব নয়।
বিশেষ ব্যবস্থাধীন শিক্ষাব্যবস্থা : এগুলো হচ্ছে- ১. সরকার পরিচালিত ক্যাডেট কলেজ; ২. এনজিও কর্তৃক পরিচালিত প্রাথমিক স্কুল ও ৩. বেসরকারিভাবে পরিচালিত কিন্ডারগার্টেন এবং ক্যাডেট ও প্রিক্যাডেট স্কুল ও কলেজ। বেসরকারি ক্যাডেট এবং প্রি-ক্যাডেট স্কুল ও কলেজ হচ্ছে সরকারি ব্যবস্থাধীন স্কুল ও কলেজের ‘প্রতিপক্ষ’ শিক্ষাব্যবস্থা।
এগুলো চলে ব্যক্তিমালিকানায়। এগুলোর অবস্থান শহরাঞ্চলে। থানা সদর এবং কিছু বড় বাজার এলাকায়ও এগুলো ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারি অবৈতনিক স্কুল থাকা সত্ত্বে¡ও ব্যয়বহুল এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিযোগিতামূলকভাবে উচ্চহারে মাসিক ছাত্র ফি প্রদানের ব্যবস্থাধীনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ হারে ডোনেশন দিয়েও ভর্তি করা হয়।
এ বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জনসাধারণের কাছে বিশেষ করে অর্থশালী মানুষের কাছে এত আকর্ষণীয় কেন? সরকারি ও বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্যপুস্তক, সিলেবাস ও শিক্ষাক্রম সরকার নিয়ন্ত্রিত একই ব্যবস্থাধীনে পরিচালিত হয়। বাইরে বাড়তি বইপুস্তক তাদের পাঠ্যক্রমে সংযুক্ত থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।
তথাপি দেখা যায়, তারা কিছু কিছু বাড়তি বইপুস্তক তাদের পাঠ্যক্রমে রাখে। এটাও একটা বৈষম্য সৃষ্টির প্রক্রিয়া। মনে হয়, শিক্ষাদান প্রক্রিয়া, পাঠ্যপুস্তক নির্বাচন, প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-শৃঙ্খলা এবং সর্বোপরি শিক্ষকদের জবাবদিহিতার কঠোর ব্যবস্থায় সমতা আনতে পারলে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে শিক্ষাব্যবস্থা তথা কিন্ডারগার্টেন এবং ক্যাডেট ও প্রি-ক্যাডেট স্কুল ও কলেজের উচ্চ চাহিদা অনেক কমে আসত। এগুলো হচ্ছে সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি।
বিশেষ শ্রেণীর লোকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা, পক্ষান্তরে দেশের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত। সুতরাং এই প্রবণতা জাতীয় নীতি হতে পারে না। এ পদ্ধতি অচিরেই শক্ত হাতে বন্ধ করতে হবে।
ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি : অশান্ত শিক্ষাঙ্গনের মূল কারণ হিসেবে দলীয় রাজনীতির সমর্থনপুষ্ট সক্রিয় ছাত্র-শিক্ষক রাজনৈতিক তৎপরতা মূল কারণ বলে মনে করা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তির রাজনীতিতে অংশ নেয়ার অধিকার আছে। ছাত্র-শিক্ষকরা দেশের সচেতন নাগরিক।
সুতরাং তাদেরও রাজনীতিতে অংশ নেয়া প্রয়োজন। ছাত্র-শিক্ষকরা দলীয় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় সমর্থক হিসেবে ভূমিকা পালন করলে নাগরিক অধিকার বজায় এবং শিক্ষাঙ্গনের পবিত্রতাও নিশ্চিত থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার বয়সসীমা ধরা হয়েছে ১৮ বছর। মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপন পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা উল্লিখিত বয়সসীমার মধ্যেই সাধারণত সীমাবদ্ধ। কাজেই মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপন না করা পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয়, কোনোভাবেই দলীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া উচিত নয়।
সর্বোপরি বিশ্বের অন্যান্য দেশের দলীয় রাজনীতির সাথে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতির ধারা বা সম্পর্ক কিরূপ তা বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। মূলত মুষ্টিমেয় কিছু স্বল্প মেধার ছাত্র দলীয় সাহায্যপুষ্ট হয়ে বিশেষ করে সঙ্কীর্ণস্বার্থে বা দলীয় আধিপত্য বিস্তারের জন্য ছাত্রছাত্রীদের জিম্মি করে ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাসের বেড়াজালে আবদ্ধ করে অশান্ত করে তোলে। এটা কাম্য হতে পারে না।
মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে শুধু উচ্চ ও মধ্য মেধার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নিশ্চিত করতে পারলে উচ্ছৃঙ্খলতা বহুলাংশে কমে যাবে। কারণ মেধাবী ছাত্ররা শান্তিপূর্ণভাবে লেখাপড়া করতে চায়।
দলীয় রাজনৈতিক মহল জাগ্রত হলেই শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসতে পারে।শিক্ষকদের উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে সক্রিয়ভাবে দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িয়ে না পড়া। শিক্ষাদান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে দলীয় প্রভাবমুক্ত হওয়া উচিত। নিষ্ক্রিয়ভাবে দলীয় রাজনীতির প্রতি আনুগত্য রাখার ব্যাপারে বাধা নেই।
শিক্ষিতসমাজ হিসেবে এটা নাগরিক অধিকার। তবে সক্রিয়ভাবে দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়লে শিক্ষকরা চিহ্নিত হয়ে পড়েন এবং সমর্থনপুষ্ট দলীয় সরকারের পতনের ফলে তাদের ভাবমর্যাদা বিঘ্নিত হয়ে থাকে। কাজেই কোনো শিক্ষকেরই এটা করা উচিত নয়।
তা ছাড়া দলীয় রাজনীতির মাধ্যমে সরকারি খবরদারিও চিরস্থায়ী হয় না। সুতরাং ছাত্র-শিক্ষক উভয়ই দলীয় রাজনীতির বড়জোর নিষ্ক্রিয় সমর্থক হলেই শিক্ষাঙ্গন দলীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত থাকবে, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত হবে, শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে, অভিভাবক মহলে আস্থা ও প্রশান্তি নিশ্চিত হবে এবং সর্বোপরি ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক পরস্পর সম্মানজনক হবে।
লেখাটি উপস্থাপন করার পেছনে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে- ১. দেশে প্রচলিত দ্বিমুখী শিক্ষাব্যবস্থা যথা- আধুনিক শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষা আমাদের কী উপহার দিচ্ছে? দ্বিমুখী শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহমর্মিতা, বন্ধুত্ব ও সহাবস্থানের পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। পক্ষান্তরে তাদের মধ্যে বিরাট দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে, সাংঘর্ষিক পরিবেশ তৈরি হচ্ছে এবং সর্বোপরি নীতি-নৈতিকতার ক্ষেত্রে দ্বিকেন্দ্রীভূত হচ্ছে।
এমন কি সহোদর ভাইয়ের মধ্যে একজন যদি আধুনিক শিক্ষায় এবং অন্যজন যদি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হয় তাহলে এসব ক্ষেত্রে বিরাট ব্যবধান লক্ষ করা যায়। শিক্ষা সমাপন শেষে আদর্শিক দ্বিভাজন তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শিক্ষাপদ্ধতির মধ্যে উপযুক্ত সমন্বয় করে একই শিক্ষাঙ্গনে আমাদের ছেলে সন্তানদের একই পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ করার পথ মুক্ত করতে কি পারি না?
অভিভাবক মহলের কারো আপত্তি থাকার কথা নয় যে, আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনান্তে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করে নামাজসহ ধর্মের মৌলিক বিষয়ে জ্ঞানার্জন এবং কুরআন পাঠ শিক্ষা করে বেরিয়ে আসুক। এতে দ্বীন ও দুনিয়াদারির উভয় অঙ্গনে ওরা সহাবস্থানে বসবাস করতে পারবে।
প্রচলিত দ্বিমুখী শিক্ষাপদ্ধতিতে উচ্চশিক্ষিত হয়েও পেশা ও কর্মজীবনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছে। অর্থ, শ্রম ও সময় খাটিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণ করেও এক শ্রেণীর শিক্ষিত ব্যক্তি বেশির ভাগ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে, পক্ষান্তরে অপর শ্রেণী দয়া-দাক্ষিণ্যের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
শিক্ষিত সমাজের মধ্যে এই বৈষম্য বেদনাদায়ক। সুষম ঐক্য, সহমর্মিতা, সহাবস্থান, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বসুলভ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মেরুকরণ নয়, শিক্ষাব্যবস্থায় সমন্বয় সাধনের জোর দাবি এবং প্রচলিত দ্বিবিধ শিক্ষাপদ্ধতির মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে পর্যায়ক্রমে শূন্য দূরত্বে আনার জন্য বিনীত প্রস্তাব পেশ করছি। আল্লাহতায়ালা আমদের প্রচেষ্টাকে সফল করুন।
লেখক : চিকিৎসক