সব শর্ত পূরণ করেও এমপিভুক্ত হয়নি কলেজটি
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রামঃ এমপিওভুক্ত যোগ্যতার সব শর্ত পূরণ হলেও এখনো হয়নি এমপিওভুক্ত উলিপুরের নামাজের চর মহাবিদ্যালয়। ২০২১ সালের ১৯শে অক্টোবর শর্ত পূরণসহ সকল কাগজপত্র দিয়ে এমপিওভুক্ত আবেদন করা হয়েছিল। পাশাপাশি ২০২২ সালের সকল শর্ত পূরণসহ আবারো এমপিওভুক্তকরণের জন্য আপিল আবেদন করা হয়। এমপিওভুক্ত না হওয়া কলেজটি হলো কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের নামাজের চর মহাবিদ্যালয়।
জানা গেছে, উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নাধীন নামাজের চর মহাবিদ্যালয়টির অবস্থান। এ বিদ্যালয়ের অধীনস্থ ইউনিয়নটি ৩০ হাজারের মানুষের বসবাস আর তাদের সন্তানদের পড়াশোনা করার একটি মাত্র কলেজ। ইউনিয়নটি ব্রহ্মপুত্র নদ ও চর দ্বারা বেষ্টিত আয়তন ১০১. ১৩ বর্গ কিলোমিটার। ১ একর ২৬ শতাংশ ওপর এ মহাবিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টি ২০১১ সালে স্থাপিত হয়। পাঠদান পেয়েছিল ২০১৩ সালের ২২শে এপ্রিল এবং ২০১৭ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর প্রথম স্বীকৃতি পেয়ে সুনামের সঙ্গে চলছে কলেজটি। কলেজে বর্তমানে শিক্ষক ১৪ জন ও কর্মচারী ৭ জন।
ভর্তির রেকর্ড (রেজিস্ট্রেশনকৃত) অনুযায়ী ২০১৮ সালে ১৫০ জন, ২০১৯ সালে ১৯৮ জন, ২০২০ সালে ৩১৪ জন শিক্ষার্থী ছিল। পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক। ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ২৪৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে একাডেমিক বহুতল ভবন রয়েছে একটি। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির নিকট বিশেষ বরাদ্দে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়েছে শিক্ষক-কর্মচারী-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী। শিক্ষার্থী জাকিয়া তারা, আরিফা, মোজাম্মেল হকসহ অনেকই বলেন, স্যাররা (শিক্ষক) প্রতিনিয়ত আমাদের শিক্ষাদান করছেন। নদী ও দুর্গম চরে আমাদের বসবাস। দিনমজুর পরিবারে আমাদের জন্ম। শিক্ষকরা বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে আমাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করান। কোনো ভর্তি ফি নেননি। মাঝে মধ্যে পরীক্ষার ফি ফ্রি করে দেন।
তারা আরও বলেন, স্যার না খেয়ে পরিবার পরিজন ছেড়ে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আমাদের মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লেখাপড়া করিয়ে যাচ্ছেন তারা। তাদের নেই বেতন-ভাতা। আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
নামাজের চর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবু তালেব বলেন, শিক্ষক-কর্মচারী বেতন ভাতা ছাড়াই কয়েক বছর ধরে সুনামের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করিয়ে যাচ্ছি। নদী ও দুর্গম চর হলেও শিক্ষার্থীদের পরিবারের কাছে গিয়ে অনুনয় বিনয় করে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ামুখী করার জন্য এবং উচ্চ শিক্ষায় জ্ঞান ও সনদ অর্জনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, সকল শর্ত পূরণ হলেও কলেজটি এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি।
এমপিওভুক্ত বিষয়ে উলিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, নিয়ম ও শর্তপূরণ হলেই এমপিওভুক্ত করার জন্য প্রত্যয়ন দেয়া হয়। বিদ্যালয়ের খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা গেছে বর্তমান সকল শর্তপূরণ করেছেন। তাই বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করা যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের ৩ আসনের (উলিপুর) এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মতিন জানান, দুর্গমচর হিসেবে এবং ইউনিয়নজুড়ে একটি উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। এবার বিশেষ কোটায় বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করার জন্য সুপারিশ করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়