সত্যিকারের পরিবেশবাদী একজন আব্দুল ওয়াহেদ
রফিকুল আলম।।
প্রকৃতি ও বৃক্ষপ্রেমী আব্দুল ওয়াহেদ বয়স ৬০ । স্বেচ্ছাশ্রম ও নিজ উদ্যোগে ভিত্তিতে তিনি সড়ক ও মহাসড়কের গাছের পেরেক অপসারণ করেন । বাড়ি গ্রাম সাড়াপোল, ১০ নং চাচড়া ইউনিয়ন সদর উপজেলা, জেলা যশোর । তিনি এই কাজটি ২০০৬ সাল থেকে বিভিন্ন সড়কে গাছ লাগিয়েছেন ।
২০১৮ সাল থেকে তিনি গাছে যত রকম পেরেক, বিলবোর্ড সহ , যা কিছু আছে তা অপসারন করে বেড়াচ্ছেন । আজ গাংনী-কুষ্টিয়া সড়কে গাংনী হাসপাতাল ও উপজেলার সামনের সড়কে এ কাজটি করে চলেছেন । তিনি খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে এ কাজ করে করে চলেছেন । তিনি জানান, এ এ পর্যন্ত তাঁর সাড়ে ৯ মন পেরেক জমা হয়েছে ।
তিনি এ পেরেক সহ কোন কিছু বিক্রি করেননি । তিনি ঐতিহাসিক মেহেরপুরের মানুষের প্রশংসা করেন । তিনি মুজিবনগর আমকানন সহ সকল সড়কের গাছ থেকে পেরেকসহ এ জাতীয় জিনিস কেউ যাতে গাছের গায়ে না মারেন তার জন্য সবাইকে আহবান জানান । তিনি আরও বলেন গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয় ও গাছ থেকে ফলমুল, কাঠ পাওয়া যায় অথচ সেই গাছ কে আমরা আঘাত করি ও পরিবেশের ক্ষতি করি । কোন রকন সরকারী পৃষ্টপোষকতা ছাড়া তিনি এ কাজ করে চলেছেন ।
তিনি প্রায় ১২ শত কিলোমিটার সাইকেলে চড়ে ২৩ হাজার গাছের পেরেক অবমুক্ত করেন । তিনি শিক্ষিত সমাজের এমন আচরনে ব্যথিত বলে জানান, সাধারনত গাছে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা বা কর্মীর পরিচিতি, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি দিয়ে গাছে সাইনবোর্ড বা বিভিন্ন ধরনের লেখা সম্বলিত টিন, ব্যানার, ফেস্টুন পেরেক দিয়ে গাছে আটকানো হয় যা মোটেই ঠিক নয় ।
তিনি ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক পেয়েছেন এবং নগদ ২৫ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্রীর কাছ থেকে । আমরা বিভিন্ন মিডিয়াতে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের কাজ দেখে থাকি কিন্তু বাস্তবে সত্যিকারের পরিবাদী একজন সাদা মনের মানুষকে দেখলাম যিনি নিজে পরিশ্রম করে, খেয়ে না খেয়ে এ কাজটি করে চলেছেন। সমাজে এ রকম মানুষের খুবই প্রয়োজন ।
আমাদের সমাজের সবার উচিৎ এ রকম ব্যতিক্রমী মানুষের পাশে থেকে তাকে সহযোগিতা করা । তার কাজের জন্য বিভিন্ন সময় পুরস্কার পেয়েছেন । সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি । নির্লোভী ও সাদামাটা পরিশ্রমী আব্দুল ওয়াহেদ পেশায় একজন রাজমিস্রি । তার স্বপ্ন দেশের প্রতি জেলায় আমার মতো কেউ এ কাজটি করুক । এ কাজে তিনি সাইকেলে বিভিন্ন যন্রপাতি বহন করে থাকেন।
কেউ কিছু খাওয়ার ব্যবস্থা করলে খান না হলে প্রয়োজনে না খেয়ে থাকেন তবু ও কারো কাছে সাহায্য চাননা । রাত্রে যে কোন চায়ের দোকানের বেঞ্চে কাটিয়ে দেন । সকাল ৬ টায় তার কাজ শুরু হয় ।