শুধুই দুঃস্বপ্ন নয়, শিক্ষকদের জন্য আছে ভালো খবরও!
সিমরান জামান।।
সারাদেশে প্রায় ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বেসিক বেতনের পুরো অংশ সরকার দিলেও দুই ঈদে মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা দেয়া হয়। ফলে চাকরিতে প্রবেশের পর একজন শিক্ষক উৎসব ভাতা পান তিন থেকে চার হাজার টাকা।
শিক্ষকরা বলছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি, মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বর্তমান বাজারে এই সামান্য টাকায় কোনোভাবেই প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়। ফলে পাঁচ লাখ শিক্ষকের মনে নেই ঈদের আনন্দ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক সহকারী শিক্ষক লিখেছেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স মাস্টার্স করে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়েছি। আমার অনেক শখের পেশা শিক্ষকতা। কিন্তু বেতন পাই সব মিলিয়ে ১২ হাজার ৭৫০ টাকা পাই। ঈদ বোনাস পাবো মাত্র তিন হাজার ১৫০ টাকা।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে এখন এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩০ হাজারেরও বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ছয় লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর পদ রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষক আছেন প্রায় সাড়ে চার লাখ। কর্মচারী আছেন প্রায় দেড় লাখ।
এসব শিক্ষক মূল বেতনের বাইরে বাড়িভাড়া বাবদ মাসে এক হাজার টাকা এবং চিকিৎসা ভাতা বাবদ ৫০০ টাকা পান। এছাড়া সরকারি বিধি অনুযায়ী মূল বেতনের ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা এবং বার্ষিক ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পান। তবে দুই ঈদের উৎসব ভাতার ক্ষেত্রে রয়ে গেছে জটিলতা। শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ এবং কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ ঈদ বোনাস পান।
তথ্যমতে, ১৯৮০ সাল থেকে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি শুরু করে। শুরুতে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ দেয়া হলেও ২০০৮ সাল থেকে শতভাগ বেতন দেয়া শুরু হয়। শিক্ষকদের আন্দোলন ও দাবির মুখে ২০০৩ সালে তাৎক্ষণিকভাবে থোক বরাদ্দ থেকে শিক্ষকদের ২৫ শতাংশ এবং কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা দেয়া হয়। তখন আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, পরবর্তী অর্থবছরে এ খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রেখে শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়া হবে। কিন্তু গত ২০ বছরেও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।
বেসরকারি শিক্ষকদের আর্থিক- সামাজিক নিরাপত্তা বিধান , শতভাগ বেতন বোনাস ও জাতীয়করণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন স্থানে সভা সমাবেশ, ছুটি নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। এর মধ্যে গতকাল শিক্ষামন্ত্রী
পবিত্র রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি কার্যকর রাখতে আগামী বছর থেকে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী।
রোজায় স্কুল খোলা রাখা নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ করতেই নতুন এই পরিকল্পনার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ৫২ সপ্তাহের মধ্যে ৫২টি শনিবার রয়েছে। সেখানে যদি বিদ্যালয় কিছুটা খোলা রেখে সমন্বয় করা যায়, তাহলে রমজানকে ঘিরে স্কুল খোলা রাখা নিয়ে যারা এই অপপ্রয়াস চালাচ্ছে তাদের সেই অপপ্রয়াস বন্ধ হবে।’ অনেক শিক্ষক ছুটিকে ইতিবাচক দেখলেও কেউকেউ নেতিবাচক মনে করেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৭/০৩/২০২৪