'শিক্ষা দারিদ্র্য' অর্ধেকে নামাতে চায় বিশ্বব্যাংক
শিক্ষা উন্নয়নে বিশ্বজুড়ে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নিয়েছে বিশ্বব্যাংক। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি আগামী ১১ বছরে অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক 'শিক্ষা দারিদ্র্য' অর্ধেকে নামিয়ে আনতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংকের চলমান বার্ষিক সম্মেলনে এ লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ভাষায় 'লার্নিং প্রভার্টি' বা শিক্ষা দারিদ্র্য হলো ১০ বছর বয়সী শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পরও ঠিকমতো পড়তে এবং একটি সাধারণ গল্প বুঝতে না পারার পরিস্থিতি।
জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনেসকোর তথ্যের বরাত দিয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ৫৩ শতাংশ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করলেও ঠিকমতো পড়তে ও বুঝতে পারে না। দরিদ্র দেশে শিক্ষার এ দারিদ্র্য আরও বেশি। বিশ্বব্যাংক বলছে, দরিদ্র দেশগুলোর শিশুদের ক্ষেত্রে এ হার ৮৩ শতাংশ। শিক্ষাক্ষেত্রে এ ধরনের উচ্চমাত্রার দারিদ্র্য বৈশ্বিক শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে বাধা বলে মনে করছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনেও বিপদ সৃষ্টি করবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, শিক্ষা দারিদ্র্য কমানোর এ লক্ষ্য অর্জন অনেক কঠিন। কোনো দেশের সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে সংস্কারের মাধ্যমে শিক্ষার এ মানহীনতা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ জন্য শিক্ষক ও শিক্ষা প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাংকের নতুন এ লক্ষ্য মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ করা দেশগুলোর রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ জন্য সংস্থাটির 'মানব পুঁজি' নামে একটি কর্মসূচি রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট (মানব উন্নয়ন) অ্যানেট ডিক্সন বলেন, মানসম্পন্ন সুযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক দেশ শিক্ষা দারিদ্র্য কমিয়ে ৫ শতাংশের নিচে নিয়ে এসেছে। কিন্তু অনেক দেশেই তা অবিশ্বাস্য রকম বেশি এবং অনেক শিশুকে ভবিষ্যতের ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে, যা নৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
বেশ কিছু উন্নয়নশীল দেশ প্রমাণ করেছে, শিক্ষায় এ ধরনের উন্নয়ন সম্ভব। কেনিয়াতে প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষকদের কোচিং, দিকনির্দেশনা ও প্রতি শিশুর জন্য সহজ সাবলীল একটি বই দেওয়া হয়েছে। মিসরের সরকার তাদের কারিকুলাম ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে।