শিক্ষা কর্মকর্তার জন্য টাকা উঠাচ্ছে নতুন শিক্ষকরা
মাগুরাঃ ‘আরটিও (শিক্ষা কর্মকর্তা) সব বিষয়ে আমাদের সাথে খোলামেলা ভাবেই বলছে, অন্য উপজেলায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ দিয়ে কাজ করছে, এটা সবাই জানে, তাই এর নিচে সম্ভব না, আর আমরা যে টাকা তুলবো, তার একটা অংশ আমাদের শিক্ষা অফিসের স্টাফদেরও দিবে স্যার, কারণ তাদের সাথেই আপনাদের সারাজীবন কাজ করতে হবে, তাদের এখন দিলে তারাও খুশি থাকবে আমাদের প্রতি।’
সম্প্রতি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের একটি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের এমন কথাগুলো ফাঁস করেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক।
তারা জানিয়েছেন, ভয় দেখানো হচ্ছে যে, যারা টাকা দেবে না, আমরা তাদের লিস্ট দিবো স্যারের কাছে। তাদের বেতন আটকে থাকবে। এরপর তাদের পারসোনালি এজি অফিসে গিয়ে বেতন বিল পাস করাতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে ওই মেসেঞ্জার গ্রুপের একজন সদস্য, উপজেলার মশাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো: ফখরুজ্জামান মোবাইলফোনে জানান, গ্রুপের কথাগুলো সত্য। আমরা বেতন পেয়েছি। যারা পায়নি তাদের বেতন ছাড়ানোর জন্য এজি অফিসেও টাকা দেয়া লাগবে গ্রুপে এভাবেই মেনশন করা আছে। আমার ব্যাংকে চাকরি হয়েছে। এজন্য এসব নিয়ে আর ভাবছি না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এজি অফিসে দেয়ার জন্য নব্য যোগদান করা শিক্ষকদের থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। ওমর ইবন হাবিব নামে একজন শিক্ষক ০১৫১৫২৯২৮৩৭ বিকাশ নাম্বারে টাকাগুলো নিচ্ছেন। টাকা পাঠানোর ট্রানজেকশন নাম্বারসহ সব স্ক্রিন শর্টগুলো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষকরা ফাঁস করে দিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ওমর ইবনে হাবিবের সাথে কথা বললে তিনি টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, টাকাগুলো আমরা রিইউনিয়ন করার জন্য নিচ্ছি। অনেকে রিইউনিয়নের জন্য টাকা দেবে না, তাই এই কৌশল নিয়েছি।
তবে, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে জানা গেছে, নব্য যোগদান করা ৮০ জন সহকারি শিক্ষকের মধ্যে এখনো তিনজন সহকারি শিক্ষক বেতন পাননি। কিছু জটিলতার কারণে ১০ জন শিক্ষক বিলম্বে গতকাল বেতন পেয়েছে। দু‘জন চাকরি ছেড়ে চলে গেছে। একজন এখনো যোগদান করেননি। বাকিরা ঈদুল ফিতরের আগেই বেতন পেয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো: ওয়াহিদুজ্জামান জানান, নব্য সহকারি শিক্ষক ওমর ইবনে হাবিবকে শোকজ করা হবে।