শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিন
মনিরুল হক রনি।।
করোনার কারণে প্রায় ১১ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে। এতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানা যাচ্ছে না।
তবে সরকার ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে নিয়ে আসার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে সাধুবাদ জানাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে অনেক সময় লেগে যাবে।
এ অবস্থায় সাধারণ ছুটি আর না বাড়িয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া উচিত। ইতিমধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই এখন আর শ্রেণিকক্ষের বাইরে থাকতে চায় না।
যার প্রতিফলন দেখা গেছে সম্প্রতি গণসাক্ষরতা অভিযানের ‘এডুকেশন ওয়াচ ২০২০-২১’ সমীক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ও ৭৬ শতাংশ অভিভাবক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পক্ষে। সমীক্ষায় এটিও উঠে এসেছে যে, করোনাকালে সরকার দূরশিক্ষণের (সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিও ও মোবাইলফোন) যে ব্যবস্থা করেছে, তাতে ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেনি।
শিক্ষার্থীদের সবার স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা, ইন্টারনেটের গতি কম হওয়া, ডাটা প্যাকেজের মূল্য নাগালের বাইরে থাকা ইত্যাদি কারণে দূরশিক্ষণ ব্যবস্থা ফলপ্রসূ হয়নি। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অপেক্ষাকৃত কম সংক্রমিত এলাকার প্রতিষ্ঠানগুলো ধাপে ধাপে খুলে দেওয়া যেতে পারে।
শিক্ষাক্ষেত্রের অপূরণীয় ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা, অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা, বাত্সরিক ছুটি কমিয়ে আনা, স্কুল পর্যায়ে পরীক্ষা কমিয়ে আনার মতো যত কথাই বলা হোক না কেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
আমরা যত দ্রুত শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে আনতে পারব, তত দ্রুত আমরা শিক্ষাক্ষেত্রের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারব। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।
লেখক-
প্রভাষক, সমাজকর্ম বিভাগ,
সাভার সরকারি কলেজ, ঢাকা