দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
শিক্ষক ও একাডেমিক ভবন সংকটে পাঠদান ব্যাহত
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক শ্রেণিকক্ষ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর শিক্ষক স্বল্পতা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। আটটি শ্রেণির ৩টি বিভাগের প্রায় সতেরোশ শিক্ষার্থীর জন্য ২৬টি কক্ষের প্রয়োজন হলেও সেখানে কক্ষ রয়েছে ১২টি। প্রায় শতবর্ষী এই বিদ্যালয়টিতে ৪৯টি পদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৩০ জন।
জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপীঠ পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯০৭ সালে বলেশ^র ও দামোদর নদের তীরে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে এর লেখাপড়ার মান খুব ভালো ছিল। সময়ের ব্যবধানে শিক্ষার্থী অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং একটি অতি পুরনো ভবন ভেঙে ফেলায় সেখানে কক্ষ সংকট সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো শ্রেণিতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। সেখানে দুটি শাখা থাকলেও শ্রেণিকক্ষের অভাবে এক কক্ষেই ঠাসাঠাসি করে বসতে হয়। ফলে লেখাপড়ায় মারাত্মক বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে কক্ষের অভাবে ভাঙা ভবনের টেবিল ও বেঞ্চসহ অন্যান্য ফার্নিচার খোলা আকাশের নিচে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীলিপ কুমার মৃধা বলেন, একাডেমিক ভবন সংকট, শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে বিদ্যালয়ে। নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, বাণিজ্য আর মানবিক শাখা থাকলেও একই কক্ষে তাদের পাঠদান করায় শিক্ষার গুণগত মান রক্ষা হচ্ছে না। আর স্কুলের সীমানা প্রাচীর ভাঙা থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এখানকার শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় বর্ষাকালে মাঠে পানি জমায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্লাস করায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। নেই প্রধান শিক্ষকের বাসভবনও।
প্রধান শিক্ষক বলেন, ইংরেজিতে ৮ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও আছেন ৩ জন। এ ছাড়া গণিতে ৬ জনের স্থলে ৪ জন, ইসলাম শিক্ষায় ৪ জনের স্থলে ৩ জন, ভৌত বিজ্ঞানে ৪ জনের স্থলে ২ জন, জীববিজ্ঞানে ৪ জনের স্থলে ১ জন, ভূগোলে ২ জনের স্থলে ১ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৪ জনের স্থলে ৩ জন শিক্ষক আছেন। সামাজিক বিজ্ঞানে ৪ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও একজনও নাই।
পিরোজপুর শহরের সিআইপাড়া এলাকার বাসিন্দা শেখ হাসান মামুুন জানান, আমার এক নিকটাত্মীয়ের সন্তান এ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তাকে ভর্তি করাতে এসে জানলাম এ বিদ্যালয়ে একডেমিক ভবনের সংকটের কথা।
পিরোজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী আযিযী বলেন, আমি পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলাম। আমি যোগদানের পরে জানতে পারি এ বিদ্যালয়ের একটি ভবন ২০০৭ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। তখন আমি চেষ্টা চালিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগিতায় পরিত্যক্ত ভবনটি দ্রুততম সময়ে অপসারণ করি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য নতুন একটি ভবন খুবই জরুরি। তিনি আরও বলেন, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির এ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের দুরবস্থাসহ অন্য বিষয়টি তুলে ধরা হয়। পিরোজপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বলরাম কুমার মন্ডল জানান, পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভবন সংকটের কারণে পাঠদান বিঘœ হওয়ার বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন। এ বিদ্যালয়ে নতুন একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করার চেষ্টা চলছে। প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ছিল, সারাদেশে লিফটসহ ১০তলা ভবন নির্মাণের। বিদ্যুতের কারণে লিফটে সমস্যা হতে পারে- এ কারণে ভবন ১০তলা হবে না, ৬তলা হবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমও জানেন।
মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, আমি গত ১ জানুয়ারি পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীলিপ কুমার মৃধা একাডেমিক ভবন সংকটসহ অন্যান্য সমস্যার কথা তার বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। চেষ্টা চালাচ্ছি স্বল্প সময়ে সেখানে একটি নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণসহ অন্যান্য সমস্যা দূরীকরণের।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/২২/২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে পেজে লাইক দিয়ে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
এই বিভাগের আরও খবর