শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ
মাদারীপুরঃ জেলার একটি মাদরাসায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীদের সঙ্গে একাধিকবার যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। একান্ত সময় কাটানোর জন্য বাসায় যেতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীদের মারধরও করেন ওই অভিযুক্ত শিক্ষক। এ ঘটনার আড়াই মাসেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী।
এদিকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
অভিযোগ ও ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, মাদারীপুরের চরমুগরিয়া নেছারিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক আব্দুর রহিম বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। গত ১৯ মার্চ পাঠাদান করানোর সময় তিনি ৭ম শ্রেণির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ উঠে। এছাড়াও পাঠদান শেষে একান্ত সময় কাটানোর জন্য বাসায় যাওয়ার কু-প্রস্তাবও দেন ওই শিক্ষক। এতে রাজি না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করেন। এ ঘটনায় পরদিন প্রতিষ্ঠানের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় ১৩ শিক্ষার্থী। কিন্তু ঘটনার আড়াই মাসেও কোনো কাঙ্খিত বিচার পায়নি শিক্ষার্থীরা। এতে লোকলজ্জার ভয়ে মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী।
৭ম শ্রেণির বেশ কয়েকজন ছাত্রী জানায়, ওই শিক্ষকের যৌন হয়রানির ঘটনায় একটি মহল বিষয়টি ধাপাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত মাদরাসায় যেতে অনীহা অনেকের। প্রয়োজনে বিক্ষোভ-মানববন্ধনসহ নানা ধরনের আন্দোলন করার ঘোষণাও দেয় শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, আমি এক বছর আগে প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার ও শ্রেণিকক্ষে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। একটি মহল সুনাম ক্ষুন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে এমন নোংরা কথা ছড়াচ্ছে। আমি কোনো ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার কিংবা কাউকে কু-প্রস্তাব দেইনি।
এদিকে চরমুগরিয়া নেছারিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মোহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, কয়েকজন ছাত্রী যৌন হয়রানির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সহকারী শিক্ষক বশির উল্লাহকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজও করা হয়েছে। আর ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষা কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনউদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিখুঁতভাবে তদন্ত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পেলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০২/০৬/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়