শিক্ষককে শারিরীক লাঞ্ছনা: সভাপতি বললেন, আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে!
রাজশাহীঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উর্দু বিভাগের এক শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে বিভাগীয় সভাপতির বিরুদ্ধে। সভাকক্ষ পরিবর্তন করতে বলায় তাকে লাঞ্ছিত করেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান। তবে অভিযুক্তের দাবি মিথ্যা অভিযোগে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। গতকাল এ বিষয়ে ভুক্তভোগী উর্দু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিউল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষক সামিউল ইসলাম উল্লেখ করেন, গতকাল ২৫ জুলাই সকাল ৯টায় ২০২২ সালের এম.এ পরীক্ষা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়। সভাটি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক হোছাইন আহমদ কামালীর ব্যক্তিগত চেম্বারে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান তার কক্ষে সভা করাতে চান। ভুক্তভোগী শিক্ষক পরীক্ষা কমিটির সভাপতিকে পূর্ব নির্ধারিত কক্ষে সভা করার কথা বললে বিভাগীয় সভাপতি তাকে ধমক দেন এবং বলেন, পরীক্ষা কমিটির সভা বিভাগের সভাপতির কক্ষেই হবে। পরে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষকের হাতে আঘাত করেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান। সেসময় হাতে থাকা চায়ের কাপসহ তিনি টেবিলে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এতে তার আঙ্গুল কেটে রক্ত ঝরতে থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষক সামিউল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা কমিটির সভার গোপনীয়তা রক্ষার জন্য আমি পরীক্ষা কমিটির সভাপতিকে তার ব্যাক্তিগত কক্ষে সভা করতে বলি। এতে বিভাগের সভাপতি আমার উপর চড়াও হন। পরে আমাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনি আমার হাতে আঘাত করলে আমি টেবিলে আঘাত পাই। তখন আমার হাতে চায়ের কাপ ছিল। কাপটি ভেঙে আমার হাত কেটে যায়।
অভিযোগের বিষয়ে উর্দু বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান বলেন, নিজেকে বাঁচানোর জন্য উনি এই অভিযোগটি করেছেন। আমাকে আঘাত করতে এসে টেবিলে আঘাত করে। ফলে তার হাতে থাকা চায়ের কাপ ভেঙে তার হাত কেটে যায়। এখন আমার বিরুদ্ধে দুরভিসন্ধি ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ আনা হচ্ছে। তারা নিজেরাই খারাপ আচরণ করেছে।
পরীক্ষা কমিটির কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের বিষয়ে অধ্যাপক আতাউর রহমান বলেন, ২০২২ সালের এম.এ পরীক্ষা কমিটির যে সভাকে নিয়ে এ ঘটনা সেই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন কামালী স্যার। আর যিনি অভিযোগ করেছে তিনিসহ আরো দুইজন ছিলেন সদস্য। কামালী স্যার আমাকে জানান তিনি তার রুমে মিটিং করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই সভাপতির রুমে মিটিং করতে চান। তারপর সেখানে আমি তাদের মিটিং করতে দিয়ে পাশের অফিস রুমে অপেক্ষা করতে থাকি। এর মধ্যে একসময় আমাকে সামিউল বলে এখানে কেন সভা হবে। তখন আমি বলি তুমি পরীক্ষা কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলো। আমি পরীক্ষা কমিটির কেউ না। তারা নিজেরা গণ্ডগোল করে এখন আমাকে ফাঁসাতে চাচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবির বলেন, উর্দু বিভাগের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই তিনদিনের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৬/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়