শিক্ষককে লাঞ্চিত করার অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে হাতিয়া আজও উত্তাল
হাতিয়া প্রতিনিধি তাজুল ইসলাম তছলিম:
হাতিয়া দ্বীপ সরকারী কলেজের এক শিক্ষককে লাঞ্চিত করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যাহার দাবীতে দ্বিতীয় দিনেও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার উপজেলা পরিষদ চত্তরে এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়ে গত বুধবার থেকে রাস্তায় বিক্ষোভ করছে হাতিয়া দ্বীপ সরকারী কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীরা। অব্যাহত আন্দোলনের অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে বিক্ষোভ করে ছাত্র-ছাত্রীরা।
এতে অংশগ্রহন করে হাতিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা প্রায় সহশ্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী। আন্দোলনের অংশ হিসাবে সকালে দ্বীপ সরকারী কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে পরিষদ চত্তরে এসে শেষ হয়।
পরে প্রায় ঘন্টা ব্যাপি মানববন্ধন করে ছাত্র-ছাত্রীরা। এতে বক্তব্য রাখেন সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নজরুল ইসলাম রাজু, জহির উদ্দিন স্বপন, সাজেদ উদ্দিন, শাকিল শামীম সহ অনেকে। বক্তারা তাদের দাবী মানা না হলে আরো কঠোর কর্মসূচী দেওয়ার ঘোষনা দেন।
জানাযায়, একটি জন্ম সনদের আবেদনে সত্যায়ীত করার অপরাধে হাতিয়া দ্বীপ সরকারী কলেজের প্রভাষক আজগর হোসেনকে গত মঙ্গলবার বিকালে নিজ অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাাহী কর্মকর্তা মো: ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষককে একরকম অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
পরে কলেজের উপাধ্যক্ষ তোফায়েল আহম্মেদ গিয়ে কলেজের শিক্ষক আজগর হোসেনকে ইউএনওর কার্যালয় থেকে ছাড়িয়ে আনেন। বিষয়টি জানাযানি হওয়ার পর কলেজেরে ছাত্র-ছাত্রীরা মঙ্গলবার রাতেই সোশাল মিডিয়াতে ইউএনওর বিরুদ্বে বিভিন্ন পোষ্ট দিতে থাকেন । পরদিন বুধবার সকাল থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়ে আন্দোলন শুরু করেন।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে লাঞ্চিত কলেজ প্রভাষক আজগর হোসেন বলেন, কিছুদিন পূর্বে আমার এলাকার একটি ছেলে এসে আমার কাছ থেকে একটি জন্ম সনদের আবেদন সত্যায়িত করে নেয়।
তাতে বয়সের একটি গরমিল ছিল বলে পরে আমি জানতে পারি। এই বিষয়ে গত মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন আমাকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নেন। সত্যায়িত করার বিষয়টি আমার ভুল হয়েছে বলার পর তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গাল মন্ধ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি তাঁর অফিসের কর্তব্যরত আনসারকে দিয়ে আমার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্ঠা করেন।
সবশেষে তিনি আমাকে দিয়ে জোর পূর্বক আমার ভুলের জন্য একটি লিখিত মুছলেখা নিয়ে নেন। খবর পেয়ে আমার কলেজের উপাধক্ষ্য তোফায়েল আহম্মেদ গিয়ে আমাকে তাঁর কার্যালয় থেকে ছাড়িয়ে আনেন। এই ঘটনায় আমি খুবই অপমানিত হয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, কলেজের শিক্ষক আজগর হোসেন একটি ভুয়া জন্মসনদের আবেদনে সত্যায়িত করেছে। এই বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে আরো উত্তেজিত হয়ে যায়।
পরে তাঁর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে আমি ডেকে এনে বিষয়টি দেখায়। সেও বিষয়টি দেখে জন্ম সনদের আবেদনে সত্যায়িত করা টা ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন। পরে তারা চলে যান। এখানে কাউকে লাঞ্চিত করা হয়নি।
এদিকে সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন চলাকালীন বিপুল সংখ্যক পুলিশ রাস্তায় উপস্থিত ছিলেন। এ রিপোট লেখা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।