লড়াই করে হারল টাইগাররা
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে সোমবার (৫ মার্চ) টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশকে ২০৭ রানের বিশাল লক্ষ দেয় লঙ্কানরা। সফরকারীদের এ বিশাল সংগ্রহে সহায়তা করেছে সামারাবিক্রমা এবং কুশল মেন্ডিসের দুটি অর্ধশতক।
ব্যাট হাতে ৪৮ বলে সর্বোচ্চ ৬১ রানে তুলে অপরাজিত ছিলেন সামারাবিক্রমা। কুশল মেন্ডিস করেন ৫৯ রান। অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হওয়া চারিথ আসালাঙ্কার ব্যাট থেকে এসেছে ৪৪ রান। লঙ্কানদের ২০৭ রানের জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০৩ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। ফলে ৩ রানে ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।
আগামী বুধবার (৬ মার্চ) একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো না হলেও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং অভিষিত জাকের আলী অনিকের সাহসী ব্যাটিংয়ে তীরে এসে তরী ডুবায় টাইগাররা। রিয়াদ ৩১ বলে ৫৪ এবং অনিক ৩৪ বলে ৬৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। ওপেনিংয়ে লিটন দাস এবং সৌম্য সরকার শুরুটা ভাল করতে পারননি। শুরুতেই শুন্য হাতে সাজ ঘরে ফিরতে হয় লিটন দাসকে। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের বলে ক্যাচ উঠে মেন্ডিসের হাতে।
এরপর বিনুরা ফার্নান্ডোর ওভারে দুটি চারে দর্শকদের উল্লাসে মাতান সৌম্য সরকার। শ্রীলঙ্কা বোলার তার প্রথম ওভারে দেন ১১ রান। অবশ্য পরের ওভারে বাংলাদেশের ওপেনারকে ফেরান বাঁহাতি পেসার। ১১ বলে ২ চারে ১২ রান করেন সৌম্য। এরপর ক্রিজে আসেন তাওহীদ হৃদয়। প্রথম বলেই ছক্কা মারেন তিনি।
কিন্তু পরের তিন বলে আর দুটি রান যোগ করেন। পঞ্চম বলে বাজে শট খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। ৩০ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক শান্ত ব্যাট হাতে ২২ বলে ৩ চারে ২০ রান করেন।
মাথিশা পাথিরানার মুখোমুখি হয়ে প্রথম দুই বাউন্সার ব্যাটে লাগাতে পারেননি অধিনায়ক। একটি বল খেলতে গিয়ে ব্যাটে লাগালেন, কিন্তু স্কয়ার লেগে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের ক্যাচ হন অধিনায়ক। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৩৮ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান শান্ত। আকিলা ধনঞ্জয়ার দ্বিতীয় ওভারে মাহমুদউল্লাহ ২৭ রানে থামতে পারতেন।
কিন্তু সাদিরা সামারাবিক্রমা তাকে জীবন দেন। লঙ্কান ফিল্ডারের হাত ফসকে বল বাউন্ডারিও ছাড়িয়ে যায়। ঘুরে দাঁড়িয়ে দলকে আলোর মুখ দেখান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৫৪ রান করে ফিরতে হয় তাকে। থিকসানার বলে ক্যাচ উঠে ফার্নান্দোর হাতে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে চাপেই পড়ে লঙ্কানরা। কিন্তু পরে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। বাংলাদেশের বোলাররাও সময়ের সঙ্গে ধরে রাখতে পারেননি চাপ। কুশল মেন্ডিস-সাদিরা সামারাবিক্রমার জুটির পর শেষটা দারুণ করেন চারিথ আসালঙ্কা। তাই বাংলাদেশের সামনে দাঁড়ায় বড় লক্ষ্য।
সিলেটে শরিফুল ইসলামকে শুরুতে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তার করা প্রথম বলে অবশ্য স্লিপ দিয়ে ক্যাচ ওঠে, কিন্তু তখন ওই জায়গায় কোনো ফিল্ডার ছিলেন না, হয়ে যায় চার। পরের বলেই উইকেট নেন শরিফুল। তার ফুল লেংথের বল ড্রাইভ করতে গেলেও ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি আভিশকা ফার্নান্দোর, ক্যাচ যায় লিটনের কাছে।
পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ এসে দেন ৫ রান, দুই ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ছিল কেবল ৯। পরের ওভারে শরিফুল একটি চার ও ছক্কা হজম করেন, চতুর্থ ওভারে মাহাদী হাসানকে আনেন শান্ত। কিন্তু তিনি দেন ১১ রান। পঞ্চম ওভারে এসে দলকে সাফল্য এনে দেন তাসকিন।
একটু অতিরিক্ত বাউন্স করা বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন কামিন্দু মেন্ডিস। ১৪ বলে ১৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর নতুন সঙ্গী সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন কুশল মেন্ডিস। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৪৫ রান করে শ্রীলঙ্কা।
১১তম ওভারে রিশাদ হোসেন ১৮ ও এর পরের ওভারে শরিফুল ইসলাম ২১ রান হজম করেন। বাংলাদেশকে আবার ম্যাচে ফেরান রিশাদই। তার বলে লং অফে কুশল মেন্ডিসের ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩৬ বলে ৫৯ রান করে ফেরত যান তিনি। ভাঙে সামারাবিক্রমার সঙ্গে ৬১ বলে ৯৬ রানের জুটি।
জুটি ভাঙার পরের ওভারে ৬ রান দেন মাহাদী। কিন্তু পরের চার ওভারে ৬৪ রান হজম করেন বাংলাদেশের বোলাররা। এর মধ্যে শেষ ওভারে ২৪ রান দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৪৮ বলে ৬১ রান করে সামারাবিক্রমা ও আসালঙ্কা অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ৪৪ রানে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/০৫/০৩/২০২৪