র্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীকে মারধর, আত্মহত্যার চেষ্টা
বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ছাত্রী হোস্টেলে র্যাগিংয়ের স্বীকার হয়ে ফিজিওথেরাপী অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আমেনা আক্তার নামের এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর, শুক্রবার দিবাগত রাতে আইএইচটি ক্যাম্পাসে র্যাগিংয়ের এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, হোস্টেলের ফিজিওথেরাপী অনুষদের তৃতীয় বর্ষের জ্যেষ্ঠ কিছু ছাত্রীরা দ্বিতীয় ও প্রথম বর্ষের ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে র্যাগিং করে আসছিল। এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি ফেসবুক গ্রুপে স্ট্যাটাস দেয় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আমেনা আক্তার। যা সিনিয়রদের চোখে পড়লে তারা ক্ষুব্ধ হয়। এর জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যার পরে ফিজিওথেরাপী অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী লামমিমের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রী আমেনাকে ডেকে মারধর এবং গালাগাল করে।
এ ঘটনার জের ধরে নির্যাতনের শিকার আমেনা অতিরিক্ত পরিমাণ ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। রুমমেটরা বিষয়টি বুঝতে পেরে রাত ১০টার দিকে তাকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে।
অভিযুক্ত ছাত্রীদের বরাত দিয়ে আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, আমেনা আইএইচটি ক্যাম্পাসের বদনাম করে ওই স্ট্যাটাসটি পোস্ট করে। এজন্য লামমিমের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রী তাকে ডেকে নিজ ক্যাম্পাসের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কারণ জানতে চায় এবং এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে অভিমান করে আমেনা নাপা ট্যাবলেট সেবন করে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
আইএইচটি ছাত্রী হোস্টেলের সহকারী সুপার সুবোধ রঞ্জন মন্ডল জানান, একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে অসুস্থ হয়ে পড়া ছাত্রী সুস্থ হয়ে ক্যাম্পাসে না ফেরা পর্যন্ত বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। অসুস্থ হয়ে পড়া ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযুক্ত ছাত্রীরা অধ্যক্ষ বরাবর একটি পাল্টা অভিযোগ দিয়েছে বলেও জানান সুবোধ রঞ্জন মন্ডল।
এদিকে র্যাগিং এবং আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ ডা. শুভাঙ্কর বাড়ৈকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা. সাইফুল ইসলাম ও তদন্ত কমিটির সদস্য এবং সহকারী হোস্টেল সুপার সুবোধ রঞ্জন মন্ডল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনা কী ঘটেছে সেটা আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত নই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আমেনা নামের ওই ছাত্রী এখন সুস্থ আছে। ২/১ দিনের মধ্যে সে ক্যাম্পাসে ফিরবে। সে সুস্থ হলে এ বিষয়ে তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।’ অভিযুক্ত যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।