রায়হান স্কুল অ্যান্ড কলেজ: অধ্যক্ষ-সভাপতি দ্বন্দ্বে অচলাবস্থা
ঢাকাঃ রাজধানীর আজিমপুরে রায়হান স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঐ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগ করেছেন কলেজটির চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান। গত ১৬ মার্চ সকালে লালবাগ থানার পুলিশের একটি টিম কলেজে গিয়ে সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রহিমা আফরোজকে জোরপূর্বক অধ্যক্ষের চেয়ারে বসিয়ে দেয়। পুলিশ রহিমা আফরোজকে তার দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এ সময় কলেজটির চেয়ারম্যান ও শিক্ষকবৃন্দ এর প্রতিবাদ করেন। এরপরও ঐ দিন সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ পুলিশি শেল্টারে অফিস করেন।
এ বিষয়ে লালবাগ থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, বুধবারও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রহিমা আফরোজ তার দাপ্তরিক কাজ করেছেন। কিন্তু বিকালে ঐ কলেজের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান তার দলবল নিয়ে রহিমা আফরোজের অফিস ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রহিমা আফরোজকে উদ্ধার করে। আর মো. হাফিজুর রহমানকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। পুলিশের কাছে তিনি তার পক্ষে আদালতের কোনো আদেশ দেখাতে পারেননি। বরং আদালত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী পুলিশ কাজ করছে। এখানে কারো পক্ষ অবলম্বন করার সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩৭/৬-এ আজিমপুর রোডে রায়হান স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২৯ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন রহিমা আফরোজ। গত বছর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি তদন্ত করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গত ১ নভেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রায়হান স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান অভিযোগ করেছেন, কলেজের নামে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এক একর জমি কেনার কথা কিস্তিতে। কয়েক দফা কিস্তি দিয়ে সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার নামে ১২ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করিয়ে নেন। এছাড়া তিনি বিভিন্নভাবে তাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। এরই মধ্যে তিনি (সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। এখন মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে গত ১৬ মার্চ তিনি লালবাগ থানা পুলিশের একটি টিমকে সঙ্গে নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে পুলিশ সাময়িক বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দাপ্তরিক কাজ করার আদেশ দেয়। তখন লালবাগ থানার ওসির কাছে ফোন করে পুলিশের সাহায্য চাইলে ওসি বলেন, ‘ইমিডিয়েটলি রহিমা আফরোজকে দপ্তরে বসতে না দিলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে এবং প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।’সুত্র ইত্তেফাক
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২২/০৩/২০২৪