২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (২৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
উপাচার্য বলেন, এ বছর ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে কোন কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কারণ পরিদর্শনে গেলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে। অথচ এ সময়ে শিক্ষার্থীরা আরও কিছু প্রশ্ন বেশি উত্তর দেয়ার সুযোগ পাবে। তাই এবছর কোন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবে না প্রশাসন।
বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা এই বিষয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। আমরা পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও ভর্তি পরীক্ষা কমিটিতে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবো।
ভর্তিযুদ্ধে ১৫ স্তরের নিরাপত্তা ঃ-
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দাসহ ১৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে প্রশাসন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবছর ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিকভাবে সচেষ্ট রয়েছে। তাই ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক নিরাপত্তায় রয়েছে- কমিটি ও উপ - কমিটিসমূহ , ইউনিটভিত্তিক কমিটিসমূহ , পুলিশ প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত আইন - শৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটিসমূহ, র্যাব ও সকল গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, প্রক্টর দপ্তর, ছাত্র - উপদেষ্টা দপ্তর, জনসংযোগ দপ্তর , আইসিটি সেন্টার, পরিবহণ দপ্তর, হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশিং ফোরাম, স্কাউট ও বিএনসিসি, সেচ্ছাসেবী সংগঠন। যারা ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ক্যাম্পাসের ভিতরে এবং বাহিরে সার্বিক তৎপরতা চারু রাখবে।
পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের নির্দেশনার বিষয়ে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কক্ষের প্রবেশগেট খুলে দেয়া হবে। পরীক্ষা চলাকালে কোন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষা কক্ষের বাইরে যেতে পারবে না এবং পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন ও ক্যালকুলেটরসহ মেমোরিযুক্ত অন্য কোন ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা যাবে না।
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সুযোগ নেইঃ
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় কোন ধরণের জালিয়াতি কিংবা কারসাজির সুযোগ নেই। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন - শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বদা সদা সজাগ রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি এবং অসদুপায় অবলম্বন একটি আলোচিত বিষয়। তবে এ বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে থাকি। ফলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ।এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন - শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদা সজাগ রয়েছেন।
উপাচার্য আরও বলেন, অতীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যে অসাধুচক্র ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী কিংবা তাদের অভিভাবকের নিকট থেকে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ নেয়। এমনকি কখনও জালিয়াতচক্র শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় কাগজপত্র জমাও রাখে এবং রেজাল্ট শিটে নাম দেখেই অর্থ দাবি করে। প্রকৃতপক্ষে ঐ সকল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী নিজ যোগ্যতায় ভর্তির সুযোগ পেয়েও প্রতারণার শিকার হয়। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে এমন প্রতারণার খপ্পরে না পড়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন উপাচার্য।
এমন অপতৎপরতা রোধে সকলের সহযোগিতা কামনা করে উপাচার্য বলেন, কোন প্রকার জালিয়াতি, কারসাজি বা অশুভ তৎপরতা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে দ্রুত প্রক্টর দপ্তরকে অবহিত করার আহ্বান জানান তিনি। সকলের সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড ও সহযোগিতায় এই ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপাচার্য।
অতিরিক্ত টাকা নিলে ব্যবস্থা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে (২৫-২৭ জুলাই) ক্যাম্পাস অভ্যন্তরের কোন দোকানে খাবারের অতিরিক্ত দাম কিংবা যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজ শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
প্রক্টর বলেন, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দেয়া আমাদের দায়িত্ব। তাই এবিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনোরূপ হয়রানি ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড এবং যানবাহন ও দোকানগুলোতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও খাদ্যের অতিরিক্ত মূল্য আদায় থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি এসংক্রান্ত কোন নির্দেশনা ভঙ্গের অভিযোগ উঠে, তাহলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৫-২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। এবছর ১ লাখ ৭৮ হাজার ভর্তিচ্ছু পরীক্ষায় অংশ নিবে। ৮০ টি বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তরে নেয়া পরীক্ষার পূর্ণমান ১০০। ১ ঘণ্টার ভর্তি পরীক্ষার পাশ নম্বর ৪০।