রচনামূলক ও নৈর্ব্যক্তিকে থাকছে কয়েক গুণ বিকল্প
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সহজতর মান বণ্টন ঘোষণা করেছে শিক্ষা বোর্ড। এর আগে পরীক্ষার নম্বর ১০০ থেকে কমিয়ে ৫০ করা হলেও এখন তা আরো কমানো হয়েছে। প্রশ্নপত্রেও রাখা হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি বিকল্প প্রশ্ন। এমনকি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নেও রাখা হচ্ছে দ্বিগুণ বিকল্প। গতকাল সোমবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড পরীক্ষার সময় ও মান বণ্টনের এই নির্দেশনা প্রকাশ করেছে।
সূত্র জানায়, আগামী ১৪ নভেম্বর চলতি বছরের এসএসসি ও ২ ডিসেম্বর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার সূচি প্রকাশের পরই পরীক্ষা কত নম্বরে ও কত সময়ের হবে, তা জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবার পাবলিক এই দুই পরীক্ষার নম্বর বিভাজন কিভাবে হবে, তা জানিয়ে দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
পরীক্ষায় কোন কোন বিষয়ে কত নম্বরের পরীক্ষা, রচনামূলক ও নৈর্ব্যক্তিক অংশে কত নম্বর থাকবে এবং কিভাবে নম্বর ভাগ হবে, তা উল্লেখ করেছে শিক্ষা বোর্ড। সূত্র জানায়, করোনার কারণে চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সব বিষয়ে না নিয়ে কেবল গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে নেয়া হবে। তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টায়।
কত নম্বরে পরীক্ষা : এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার যে নম্বর বিভাজন করা হয়েছে তাতে দেখা গেছে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীরা প্রতি বিষয়ে ৩২ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নেবে। এর মধ্যে রচনামূলক ২০ নম্বর ও এমসিকিউতে (নৈর্ব্যক্তিক) থাকবে ১২ নম্বর। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিষয়গুলোয় শিক্ষার্থীরা ৪৫ নম্বরের পরীক্ষা দেবে। এর মধ্যে ৩০ নম্বর রচনামূলক ও ১৫ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা হবে। রচনামূলক ও নৈর্ব্যক্তিকের নম্বরকে ১০০ নম্বরে রূপান্তর করে মোট প্রাপ্ত নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
এসএসসির বিজ্ঞানে নম্বর বিভাজন : ঢাকা বোর্ড প্রকাশিত এসএসসির নম্বর বিভাজনে বলা হয়েছে, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উচ্চতর গণিত ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে ৩২ নম্বরের ওপর পরীক্ষা দিতে হবে। এর মধ্যে রচনামূলক ২০ আর নৈর্ব্যক্তিক অংশে ১২ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। এ ছাড়া বিজ্ঞান বিভাগের রচনামূলক অংশে ৮টি প্রশ্ন থাকলেও যেকোনো দু’টির উত্তর দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। ১০ করে ২০ নম্বর। আর নৈর্ব্যক্তিক অংশে ২৫টি প্রশ্নের মধ্যে ১২টির উত্তর দিতে হবে। এখানে নম্বর ১২। প্রতিটি বিষয়ে মোট ৩২ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের। শিক্ষা বোর্ড বলছে, বিজ্ঞানে শিক্ষার্থীদের ২০ নম্বরকে ৫০ ও নৈর্ব্যক্তিকের ১২ নম্বরকে ২৫ নম্বরে রূপান্তর করে মোট প্রাপ্ত নম্বর নির্ধারণ করা হবে।
এসএসসির মানবিক ও ব্যবসায় নম্বর বিভাজন : এসএসসির মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ৪৫ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। রচনামূলকে ৩০ নম্বর ও নৈর্ব্যক্তিকে ১৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে রচনামূলক অংশে ১১টি প্রশ্ন থাকলেও উত্তর দিতে হবে যেকোনো তিনটির। প্রতিটির মান ১০। নৈর্ব্যক্তিকে ৩০টি প্রশ্ন থাকলেও উত্তর দিতে হবে ১৫টির। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১ নম্বর করে মোট ১৫। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ৩০ নম্বরকে ৭০ ও নৈর্ব্যক্তিকের ১৫ নম্বরকে ৩০ নম্বরে রূপান্তর করে শিক্ষার্থীদের মোট নম্বর নির্ধারণ করবে বোর্ড। প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে হবে। রচনামূলক ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ও নৈর্ব্যক্তিকে সময় ১৫ মিনিট।
এইচএসসি বিজ্ঞানের নম্বর বিভাজন : এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষা হবে ৩২ নম্বরে। রচনামূলকে ২০ ও নৈর্ব্যক্তিকে ১২ নম্বর। রচনামূলক অংশে প্রতিটি পত্রে ৮টি প্রশ্নের মধ্যে উত্তর দিতে হবে দু’টির। এ ক্ষেত্রে প্রতিটির মান ১০ নম্বর। নৈর্ব্যক্তিক অংশে ২৫টি প্রশ্ন থাকবে। উত্তর দিতে হবে ১২টির। প্রতিটির মান ১ নম্বর। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ২০ নম্বরকে ৫০ ও নৈর্ব্যক্তিকের ১২ নম্বরকে ২৫ নম্বরে রূপান্তর করে শিক্ষার্থীদের মোট প্রাপ্ত নম্বর নির্ধারণ করা হবে। বাকি ২৫ নম্বর ব্যবহারিক হবে।
এইচএসসির মানবিক ও ব্যবসায় নম্বর বিভাজন : এইচএসসির মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার পরীক্ষার্থীদের প্রতিটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে ৪৫ নম্বরে। এর মধ্যে রচনামূলকে থাকবে ৩০ আর নৈর্ব্যক্তিকে ১৫ নম্বর। রচনামূলক অংশে ১১টি প্রশ্নের মধ্যে উত্তর দিতে হবে তিনটির। প্রতিটির নম্বর ১০। আর নৈর্ব্যক্তিকে ৩০টি প্রশ্নের মধ্যে উত্তর দিতে হবে ১৫টির। প্রতিটির মান ১ নম্বর। পরীক্ষার্থীদের ৩০ নম্বরকে ৭০ নম্বরে ও নৈর্ব্যক্তিকের ১৫ নম্বরকে ৩০ নম্বরে রূপান্তর করে মোট প্রাপ্ত নম্বর নির্ধারণ করা হবে।