মেডিকেল ছুটি নিয়ে প্রধান শিক্ষক তিন বছর ধরে অনুপস্থিত
ময়মনসিংহঃ প্রায় তিন বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও লাগাতার এক বছর প্রাপ্য বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক। বর্তমান অবস্থায় এখনো তিনি মেডিকেল ছুটির অজুহাতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। এমন অভিযোগ রয়েছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শিমরাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের শিমরাইল গ্রামে উপস্থিত শিমরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে সাতজন শিক্ষকের বিপরীতে ১৫১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ২০০৪ সালের ২৪ জানুয়ারি বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন প্রধান শিক্ষক মমতা ইয়াসমিন। দীর্ঘ সময়ের মধ্যে তিনি কার্যক্রম চালালেও করোনার পর থেকে তিনি অনিয়মিত হয়ে উঠেন। এঅবস্থায় হঠাৎ বিদ্যালয়ে লাগাতার অনুপস্থিত থাকেন তিনি। পরে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল তিনি অসুস্থ্যতার আবেদন দিয়ে অনুপস্থিত থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে অক্টোবর মাসে সিনিয়র একজন সহকারী শিক্ষিকাকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় প্রধান শিক্ষক মমতা ইয়াসমিন বাদে সকলেই বিদ্যালয়ে উপস্থিত। তাঁর মধ্যে ভারপ্রাপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিয়া সুলতানা জানান, প্রধান শিক্ষক মমতা ইয়াসমিন ছুটিতে থাকায় তাঁকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে এর মধ্যে ২ থেকে ৩ বার প্রধান শিক্ষক মমতা ইয়াসিমন বিদ্যালয়ে এসেছেন। তবে কোনো দায়িত্ব বা কোনো কার্যক্রমে অংশ নেননি। এখন আর আসছেন না।
এ নিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, মমতা ইয়াসমিন ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল ছুটির আবেদন করেও এর মধ্যে কয়েক দফায় কমপক্ষে ৬ বার বিভিন্ন তারিখে ছুটি নিয়েছেন। তার মধ্যে এখনো তিনি কিভাবে ছুটিতে আছেন তা অধিক খোঁজ খবর নেওয়া হবে।
অন্যদিকে জানা যায়, মমতা ইয়াসমিন বেতন উত্তোলন করেন স্থানীয় রূপালী ব্যাংক শাখা থেকে। তাঁর ব্যাংক হিসাব নাম্বার ৭০৬৩। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনি ছুটির আবেদনের (১৭ এপ্রিল ২০২২) পর থেকে ২০২৩ মার্চ পর্যন্ত তাঁর প্রাপ্য বেতন প্রায় ৩০ হাজার টাকা নিয়মিত উত্তোলন করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মমতার মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নীলুফার হাকীম জানান, তিনি এখানে নতুন যোগ দিয়েছেন। তারপরও শিক্ষক মমতার ফাইলপত্র ঘেঁটে দেখেছেন মমতা দীর্ঘ দিন ধরে মেডিকেল ছুটিতে আছেন। এ অবস্থায় মমতাকে ডেকে এনে চাকুরিতে যোগ দিতে বললে তিনি চাকুরি ছেড়ে দিবেন বলে জানান। তবে এখনো তাঁর কাছ থেকে চাকুরী ছেড়ে দেওয়ার কোন আবেদন পাননি। অন্যদিকে ছুুটিতে থাকা অবস্থায় কিভাবে কোন আইনে বেতন উত্তোলন করেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৬/০৩/২০২৪