মাধ্যমিকের এক কোটি তিন লাখ শিক্ষার্থী ফিরেছেন পড়ার টেবিলে
নিউজ ডেস্ক।।
দীর্ঘ সাড়ে সাত মাস পর পড়ার টেবিলে ফিরতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ঘরে বসেই অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করছে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। গত ৩০ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর থেকে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে পাঠ তৈরি করতে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর এক কোটি তিন লাখ শিক্ষার্থী এখন পড়ার টেবিলে ফিরেছে।
বিশ^ব্যাপী করোনা শুরু হলে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তখন থেকেই মূলত ঘরে
বন্দী হয়ে পড়ে সব শিক্ষার্থী। করোনার এই সঙ্কট আরো তীব্র হলে ভয়ে আতঙ্কে কোনো শিক্ষার্থীই দীর্ঘ ওই সময়ে ঘরের বাইরে বের হয়নি। তবে চলতি শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে আর দুই মাসেরও কম সময় বাকি। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফেরাতে না পারলে হয়তো শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ ঝরে পড়বে। আর সেই আশঙ্কা থেকেই সঙ্কট কাটাতে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইতোমধ্যে ছয় সপ্তাহের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে অ্যাসাইনমেন্ট গ্রিড প্রকাশ করা হয়েছে। অ্যাসাইনমেন্টের এই গ্রিড অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ের কয়েকটি অনুশীলনী ও প্রশ্নের ধারা শিক্ষার্থীদের জন্য মাউশি তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। প্রত্যেক স্কুল ১ নভেম্বর থেকে এই পাঠধারা ও অ্যাসাইনমেন্টের গ্রিড শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ শুরু করেছে। প্রতি এক সপ্তাহ পর পর ছয়টি অ্যাসাইনমেন্ট আদায়ও করবেন স্কুলশিক্ষকরা।
আর শিক্ষার্থীরাও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে প্রণীত এই অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে পড়ার টেবিলে এখন ব্যস্ত হয়। রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলার বেশ কয়েকটি স্কুলশিক্ষকদের সাথে গতকাল বুধবার যোগাযোগ করলে তারা জানান, মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে টিচার্স মিটিং করে কাজের ধারা ও কাজের সময় বণ্টন করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে অ্যাসাইনমেন্ট বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
অনেক অভিভাবকও নিজ উদ্যোগ ও আনন্দে স্কুলে এসে সন্তানদের অ্যাসাইনমেন্ট বুঝে নিচ্ছেন। সাভারের আশুলিয়া গুমাইল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারেক মোল্লা এই প্রতিবেদককে জানান, মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা টিচার্স মিটিং করেছি। এখন শিক্ষার্থীদের কয়েকটি ভাগে ভাগ করে স্কুলে নিয়ে এসে তাদেরকে অ্যাসাইনমেন্টও বুঝিয়ে দিচ্ছি। দীর্ঘ দিন ঘরে বন্দী থাকার পর অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসার জন্য ব্যাকুল ছিল। তারা এখন স্কুলে এসে অ্যাসাইনমেন্ট পেয়ে আনন্দের সাথেই পাঠকার্যক্রম শুরু করছে।
মাউশির নির্দেশনায় বলা হয়েছে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অর্জিত শিখনফল মূল্যায়ন করা হবে। অভিভাবক বা অন্য কারো মাধ্যমে অথবা অনলাইনে এই অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহণ ও জমা দেয়া যাবে। মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) প্রফেসর ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ওয়েবসাইট থেকে সিলেবাস অর্থাৎ অ্যাসাইনমেন্ট গ্রিড ডাউনলোড করে তা শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দিতে হবে।
আমরা বলেছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান সব শিক্ষককে নিয়ে প্রথমে টিচার্স মিটিং করে কাজের বিস্তারিত পরিকল্পনা করে নিতে হবে। প্রয়োজনে অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করে হলেও অ্যাসাইনমেন্ট পৌঁছে দিয়ে আবার তা আদায় করতে হবে।