মাদারীপুরে দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু
মাদারীপুরঃ জেলার সদর উপজেলার দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বুধবার দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলা কার্যালয়ে ১১ জন শিক্ষকের সাক্ষ্য নেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন। পরে অভিযুক্ত দুই শিক্ষা অফিসারেরও সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
অভিযুক্তরা হলেন মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাসুদ করিম ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপা।
অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাসুদ করিম ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ জন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বরের অভিযোগে বলা হয়, ওই দুই উপজেলা শিক্ষা অফিসার অফিসে কাজের বিনিময়ে বিভিন্ন শিক্ষকের কাছ থেকে ঘুষ নেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, অফিস ফাঁকি দিয়ে নেশায় আসক্ত হন। এমনকি অবৈধভাবে বিলাস বহুল গাড়ি কিনে যাতায়াত করেন। যা সরকারি নিয়মেরপরিপন্থী । বিষয়টি আমলে নিয়ে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরে ৬ মার্চ অভিযোগ দাখিলকারী ১১ জন শিক্ষকের সাক্ষ্য নেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন। তদন্তের স্বার্থে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কমিটির সদস্যরা।
মাদারীপুরের পুলিশ লাইনস্ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘ওই দুই শিক্ষা কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম করেই যাচ্ছেন। এজন্য আমাদের ১১ শিক্ষকের এই প্রতিবাদ। আমরা চাই, সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় দুর্নীতিমুক্ত থাকুক। কোনো অনিয়ম চাই না আমরা।’
সহকারী শিক্ষক মাসুদ সুমন বলেন, ‘আমরা ১১ শিক্ষক মিলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ওই দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছি। পরে আমাদের সাক্ষ্য নিলে সবাই আলাদাভাবে তদন্ত কমিটির কাছে ঘটনার সবকিছু পুরনায় লিখিত দিয়েছি। আশা করছি তদন্ত করে অভিযুক্ত দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে অধিদপ্তর।’
অভিযুক্ত সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাসুদ করিম বলেন, ‘বেনামে কয়েকজন শিক্ষক একটি অভিযোগ দিয়েছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই। যেহেতু তদন্ত হচ্ছে, প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তীতে বিষয়টি বোঝা যাবে।’
আরেক অভিযুক্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপা বলেন, অভিযোগতো যে কেউ দিতেই পারে। তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে সত্য মিথ্যা উঠে আসবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, ‘ইতিমধ্যেই অভিযোগের বিষয়টি জেনেছি। তবে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তর তদারকি করছে। সেখান থেকেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমাদের কাছে কোনো তথ্য চাইলে দেওয়া হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/০৩/২০২৪