মাত্র ২০ দিনের প্রস্তুতিতেই মেডিকেলে চান্স!
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রামঃ রংপুর সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার মাত্র ২০ দিন আগে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী নন্দীরকুটি গ্রামের রাজ মিস্ত্রি জয়নাল আবেদীনের অদম্য মেধাবী সন্তান আব্দুল্লাহ আল নোমান।
নোমানের এই অদম্যতা এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এলাকাবাসী আব্দুল্লাহ আল নোমানকে অভিনন্দন জানানোসহ তার বাবা-মাকে জানাচ্ছেন অভিনন্দন। এ খবরে নোমানের স্বজনরা মিষ্টি নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে জানাচ্ছেন অভিবাদন।
ছেলে ডাক্তার হওয়ার সুযোগ পেয়েছে এই খবরে রাজ মিস্ত্রি জয়নাল আবেদীন ও তার স্ত্রী নূরানী বেগমসহ তাদের পুরো পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা। তাদের পরিবারের ডাক্তার হবে। সে মানুষের স্বাস্থ্য সেবার কাজ করবে। এই ভাবনায় নোমানের পরিবার আবেগাপ্লুত হয়ে আছে।
মেধাবী নোমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অদম্য মেধাবী সন্তান আব্দুল্লাহ আল নোমানের এই সাফল্যে গর্বিত। তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান এখন ডাক্তার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে এই খবরেই শিক্ষকরা খুশি।
এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মৌলভী শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রশিদ জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান রংপুর সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ অর্জন করায় আমরা গর্বিত হয়েছি। আব্দুল্লাহ আল নোমান আমাদের গর্ব। তার জীবনের সফলতা কামনা করছি।
আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্বজন পল্লী চিকিৎসক শামছুল আলম পলাশ বলেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান আমার সম্পর্কে পুত্রা হয়। সে অদম্য মেধার অধিকারী। মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে সে রংপুর সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করায় খুশি হয়েছি। তাকে ও তার পরিবারকে অভিনন্দন জানাতে মিষ্টি নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়েছি।
আব্দুল্লাহ আল নোমানের বড়ভাই ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অনার্স পড়ুয়াছাত্র নুরন্নবী মিয়া বলেন, আমার ছোটভাই আব্দুল্লাহ আল নোমান ছোট থেকেই মেধাবী। সে স্কুল কলেজে বরাবরেই ভালো ছাত্র ছিল।
মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার মাত্র ২০ দিন আগে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। সে আমাদের পরিবারকে গর্বিত করেছে।
নোমানের বাবা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমার দুই মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে সবার ছোট আব্দুল্লাহ আল নোমান। সে ছোট্ট থেকেই মেধার অধিকারী। সে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম ছিল।
সে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপি-এ গোল্ডেন ও এইচএসসিতে জিপি-এ গোল্ডেন প্লাস অর্জন করে। এবার মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সহিত ভালো ফলাফল করে ভর্তির সুযোগ পেল।
নোমানের বাবা জয়নাল আবেদীন আরো বলেন, নোমানকে লেখাপড়ার খরচ আমি রাজ মিস্ত্রির উপার্জনে করেছি। তবে ছেলেটা মেধাবী হওয়ায় বিভিন্ন বৃত্তির টাকায় সে নিজের অন্যান্য খরচগুলো চালিয়েছে।
তিনি বলেন, নোমান যেহেতু মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। সে কারণে তাকে আগামী ২৭ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিলের মধ্যে রংপুর সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো ও ছেলেকে মেডিকেল কলেজের ক্লাস করার ব্যবস্থা করা হবে।
জয়নাল আবেদীন তার মেধাবী ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমানের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া ও সরকারি বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য আমার পুরোপুরী প্রস্তুতি তেমন ছিল না। তবুও অল্প সময়েরে মধ্যে চেষ্টা চালিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। আমার এই ফলাফলে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটেছে। সামনের দিনে আমার মেধাকে কাজে লাগিয়ে দেশ জাতির কল্যাণের জন্য আপন লক্ষে পৌছতে চাই। এজন্য সরকারি, বেসরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা ও এলাকাবাসী তথা দেশবাসীর কাছে আমার জন্য দোয়া কামনা করছি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৫/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়