মনোহরগঞ্জে দুই গ্রামে নেই কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়
কুমিল্লাঃ জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার ইউনিয়নের পাটিয়ালা-বিহড়া দু’গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শত শত কোমলমতি শিশু। বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব বেশি হওয়ায় শিশুরা স্কুলে যেতে চায় না বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। ফলে এসব শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা। অথচ এ দু’গ্রামের মানুষের জন্য রয়েছে একটি ভোটকেন্দ্র। ভোটের সময় আসলে অস্থায়ী বুথ বসেন মসজিদের মক্তব ঘরে। গ্রাম দুটির কোমলমতি শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। জানা যায়, পাটিয়ালা-বিহড়া গ্রাম দুটিতে প্রায় ১ হাজার পরিবার বসবাস করে আসছেন। সে অনুযায়ী দু’গ্রামে ৫-১০ বছর বয়সী প্রায় ৫ শতাধিক শিশু রয়েছে। এ গ্রাম দুটি থেকে আশপাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৪-৫ কিলোমিটার হওয়ায় শিশুরা স্কুলে যেতে চায় না।
এতে করে নিরক্ষরতা ও শিশু শ্রম বেড়েই চলেছে। অপরদিকে এ দু’গ্রামের মানুষের জন্য রয়েছে একটি ভোটকেন্দ্র।
জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ইউপি নির্বাচনেও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় একটি মসজিদের মক্তব ঘরে। অস্থায়ী কয়েকটি বুথ বানিয়ে ভোট নেয়া হয়। পাটিয়ালা গ্রামের মাকসুদুর রহমান বলেন, এ দু’গ্রামে বিদ্যালয় না থাকায় পার্শ্ববর্তী গ্রামে ৩-৪ মাইল পায়ে হেঁটে ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে হয়। তাদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ভয়ে থাকতে হয় কখন কী খবর আসে। তাই তিনি একটি বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান। বয়োবৃদ্ধ নোয়াব আলী বলেন, এ দু’গ্রামের মানুষের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটের সময় আসলে ভোট হয় মসজিদের মক্তব ঘরে। সরকারিভাবে গ্রাম দুটি নিয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি। বিপুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিটি খাতের উন্নয়নে অধিকতর গুরুত্ব দিচ্ছে।
গ্রাম দুটি নিয়ে সরকারিভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রয়োজন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কাজী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। সরজমিন পরিদর্শন করে যদি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা পাওয়া যায় তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারিভাবে বিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মো. জাকির হোসেন বলেন, পাটিয়ালা-বিহড়া গ্রাম দুটিতে অনেক পরিবারের বসবাস হলেও কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকার কারণে অনেক শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জায়গা নিয়ে। প্রথমে এক লোক জায়গা দান করে পরে ফেরত নেয়। কেউ জায়গা দিলে এ দু’গ্রামে সরকারিভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো।
এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম কমল বলেন, বিষয়টি জেনেছি। কেউ জায়গা দান করলে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২০/০৫/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তা’য়