ভোগান্তি এড়াতে অনলাইন সেবা চায় কুবি শিক্ষার্থীরা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ঃ শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, নম্বরপত্র ও সনদ তুলতে আবেদন ফি, স্বাক্ষর, ফরম তোলাসহ বিভিন্ন কাজে ঘুরতে হয় আটটি দফতর। এছাড়াও ভর্তি কার্যক্রম, পরীক্ষার ফি প্রদানসহ বিভিন্ন কাজেও ঘুরতে হয় দফতর থেকে দফতর। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। এসব ভোগান্তি কমাতে এবার অনলাইনে সেবা চায় শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সনদ উত্তোলনের জন্য প্রথমে জনতা ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে সনদ উত্তোলন ফরম পূরণ করে যেতে হয় বিভাগে। সেখানে টাকা জমার রসিদ দেখিয়ে বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিয়ে যেতে হয় অর্থ ও হিসাব দফতরে। এভাবে একে একে যেতে হয় আইসিটি দফতর, প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়, রেজিস্ট্রার দফতর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে। এসব কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে না পেয়ে অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এ অপেক্ষা কখনও দিন পেরিয়ে সপ্তাহও অতিক্রম করে। ফলে সনদ তুলতে এসে কয়েকগুণ বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।
এদিকে পরীক্ষার আবেদন ও ভর্তি কার্যক্রমেও টাকা জমাদান, প্রাধক্ষ্যের স্বাক্ষর নিয়েও ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষা দফতর শাখায় একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, নম্বরপত্র ও সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উত্তোলন করতে গিয়ে এক দফতর থেকে আরেক দফতরে দৌড়াদৌড়ি করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা। বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি তাদের।
লোক প্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আফজাল হোসাইন বলেন, সনদ উত্তোলন করতে গিয়ে একের পর এক দফতরে ঘুরতে হয় শিক্ষার্থীদের। প্রায় সময় আবার স্বাক্ষরের জন্য কর্তাব্যক্তিদের কার্যালয়ে পাওয়া যায় না। এতে ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। অথচ পুরো প্রক্রিয়াকে অনলাইনে নিয়ে আসলে খুব সহজেই কাজ হয়ে যায়।
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আবুদ দারদাহ রুমী বলেন, সনদ উত্তোলন, সে তো আরেক লাল ফিতার দৌরাত্ম্য। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রায়ই নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আর শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরের জন্য গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। স্মার্ট বাংলাদেশের যুগে এসেও বিশ্ববিদ্যালয় এখনও সনাতন পদ্ধতি থেকে বের হতে পারেনি। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ওবায়দুল্লাহ খাঁন বলেন, পরীক্ষার আগে ফরম ফিল আপ এবং টাকা জমাদান একটি জটিল প্রক্রিয়া। টাকা জমাদানের জন্য ফরম আনতে হয় তিনতলা থেকে। অনেক লেখালেখি করে সেই ফরম পূরণ করার পর টাকা জমা দিতে দাঁড়াতে হয় লাইনে। তারপরে আবার পরীক্ষার আবেদন করার জন্য যেতে হয় ডিপার্টমেন্টে। সেখান থেকে যেতে হয় আবাসিক হলে। প্রাধ্যক্ষ তখন পেলে সরাসরি ডিপার্টমেন্টে জমা দেওয়া যায়, অন্যথায় হয় অপেক্ষা না হয় শিক্ষকের পেছন পেছন ঘোরাঘুরি। অথচ অনলাইনে এই সেবাগুলো চালু করে রাখলে আমাদের এত ভোগান্তি পোহাতে হয় না।
এদিকে সনদ প্রদানের দায়িত্বে থাকা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের নানা অভিযোগ শুনতে শুনতে আমরাও হতাশ। এটা নিয়ে আমরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। একটি নতুন সফটওয়্যারের জন্য টেন্ডার হয়েছে। সনদ উত্তোলনের বিষয়টি সে সফটওয়্যারে সংযুক্ত করার জন্য প্রস্তাব দেব।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, আমরা এটা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। আগামী তিন মাসের মধ্যে আমরা সফটওয়্যারের কাজ শেষ করব। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে সব ধরনের সনদ এবং পরীক্ষা সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২২/০৬/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়