ভর্তি জালিয়াতি, শিক্ষার্থীকে আটকে চাঁদা দাবির অভিযোগ
রাজশাহীঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হতে আসে আহসান হাবীব নামের এক শিক্ষার্থী। এসময় তাকে আটক করে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভর্তি ইচ্ছুকের মা প্রক্টর দপ্তরে ছেলে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ জানালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
চাঁদা দাবি করার অভিযুক্তরা হলেন- শের-ই- বাংলা হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মহিবুল মমিন সনেট ও শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকোয়ান সিদ্দিক ওরফে প্রাঙ্গণ।
আটক ভর্তিচ্ছু আহসান হাবীন। গত ২৯ মে বিজ্ঞান ইউনিটের ৩য় শিফটের পরীক্ষায় তার হয়ে অন্যজন পরীক্ষা দেন ও উত্তীর্ণ হন। হাবীব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত পপুলেশনস সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগে ভর্তি হতে আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তবে ওই শিক্ষার্থীর প্রক্সির জন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে ৪ লাখ টাকার চুক্তি করেন। রাজশাহীতে এসে গতকাল ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। বাকি ৬০ হাজার টাকার জন্য আজ দুপুরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের দিকে ডেকে নিয়ে যান ওই গ্রুপের সদস্যরা। সেসময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে শের-ই-বাংলা হলে এনে আটক রেখে তার বাবার কাছে ফোন করে আরও ৩ লাখ টাকা দাবি করে।
আটক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মা বলেন, ছেলেকে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে রাজশাহী আসেন। তার ছেলে তাকে বসিয়ে রেখে ভর্তি হতে যায়। কিন্তু বিকাল ৫টা বাজলেও ছেলে না আসলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার ছেলেকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা রাজু আহমেদ। তিনি বলেন, সনেট ও প্রাঙ্গণ এঘটনার মূল কারিগর। ওই শিক্ষার্থী প্রক্সির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছেন। তাদের সঙ্গে চুক্তিতে কিছু টাকা বাকি থাকায় আমার পাশের রুমে নিয়ে আসে। ঘটনা জানার পরে আমি তাদেরকে হল থেকে বের করে দেই। পরে প্রভোস্ট স্যার ফোন দিয়ে বলে তাদের ডেকে আনতে। এরপর তাদের ফোন দিয়ে প্রভোস্ট স্যারের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীকে প্রশাসনের কাছে তুলে দেই।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আটকের ঘটনায় রাজু সম্পৃক্ত ছিল না। যেহেতু সে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, ঘটনা জানার পর সে ওই শিক্ষার্থীকে প্রশাসনের কাছে তুলে দিতে গিয়েছিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, শিক্ষার্থী আহসান হাবীন ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হয়েছেন বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি মামলা করা হবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক করে চাদা দাবি বা আদায়ের কোনো সম্পৃক্ততা থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মহিবুল মমিন সনেটের প্রক্সিকান্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। সম্পাদনা: অনিক কর্মকার
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৮/০৮/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়