দেশের ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং। তিনি বলেছেন, দুর্বল পরিচালন দক্ষতা ও অভ্যন্তরীণ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং উচ্চ খেলাপি ঋণ নিয়ে চলছে অনুন্নত একটি ব্যাংক খাত। তিনি আরও বলেন, বন্ড মার্কেটের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের বিষয়টিও অনুপস্থিত। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্য আয়ের দেশ হতে আর্থিক খাত শক্তিশালী করা জরুরি। খেলাপি ঋণ কমানোর কৌশল থাকাসহ ব্যাংক খাতে ব্যাপক ও সামগ্রিক সংস্কার দরকার। ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশাসন ও আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে তদারকির ওপরও জোর দেন তিনি।

আজ রোববার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) মধ্যাহ্নভোজ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত ওই সভায় বিশেষ অতিথি ও মূল বক্তা ছিলেন এডিমন গিন্টিং। অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ এতে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহ সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, সাবেক সভাপতি আফতাবুল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কাউন্সেলর স্কট ব্র্যান্ডন প্রমুখ।

এডিমন গিন্টিং বলেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে বেসরকারি খাত। আগামীতে এ খাতের বিকাশের আরও সুযোগ রয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি খাতের ভূমিকা আরও বাড়ানোর দরকার।

তিনি বলেন বলেন, বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভোক্তা গড়ে উঠছে। তাই সরকার সহায়ক নীতি নীতির মাধ্যমে উপযোগী পরিবেশ তৈরি করলে বেসরকারি খাতের আরও বিকশিত হবে। বেসরকারি খাতও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে ডিজিটাল সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবন ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে চালকের আসনে বসতে পারে। অবকাঠামো খাত এবং জলবায়ু অর্থায়নের ক্ষেত্রেও বেসরকারি খাত বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মত দেন তিনি।

এডিমন গিন্টিং বলেন, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হতে মানবসম্পদ উন্নয়নের পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ইতোমধ্যে যেসব দেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে তাদের তুলনায় বাংলাদেশ এ দুই ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অবকাঠামো ও লজিস্টিকস খাতে ১৪১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১১৪তম। এসব সেবার উন্নয়নে যথাযথ পরিকল্পনা দরকার। নানা পদক্ষেপের ফলে ২০২৪ সাল নাগাদ অর্থনীতিতে গতি আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। গিন্টিং বলেন, মুদ্রা বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। বাজারই সিদ্ধান্ত নেবে দর কত হবে। বাজার উন্নয়নে সহযোগিতা চাইলে এডিবি তা দেবে।