বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নির্বাচন আজ
অনলাইন ডেস্ক।।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির বহু প্রতীক্ষিত নির্বাচন আজ। দুই বছর মেয়াদে সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালের জুনে। সর্বশেষ নির্বাচিত কমিটির সভাপতির সাথে সমিতির অপর অংশের নেতাদের মতানৈক্য এবং করোনার কারণে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এ নিয়ে দু'পক্ষই একে অপরকে দায়ী করেন। তিন বছর সমিতির নির্বাচিত নেতৃত্ব না থাকায় ক্যাডারের সব দাবি-দাওয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে মনে করেন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা।
১২৩ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাহী কমিটির নেতা নির্বাচিত করতে সমিতির ১৫ হাজারের বেশি সদস্য তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের নির্বাচনে অতীতের মতো তেমন একটা উত্তাপ না থাকলেও সরকার সমর্থক শিক্ষা ক্যাডারের একাধিক প্যানেলের প্রার্থীরা নানা ধরনের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ করে যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। এদিকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি জেলা পর্যায়ের ভোট কেন্দ্রসমূহ। এবারের নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসলিমা বেগম শনিবার যায়যায়দিনকে বলেন, 'ভোট গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।'
কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে, সারাদেশে প্রায় ৩শ' কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। সারা দেশের ৯টি শিক্ষা অঞ্চলে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাসহ সরকারি কলেজ শিক্ষক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), শিক্ষাবোর্ড, নায়েম, টিটি কলেজ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কর্মরত ক্যাডার কর্মকর্তারা সকাল ১০টা থেকে বিরতি ছাড়া বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট প্রদান করবেন। স্থানীয়ভাবেই ভোট গণনা শেষে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন কমিশন ফল ঘোষণা করবেন পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন পরে অনুষ্ঠেয় এবারের নির্বাচনে সর্বোচ্চ ছয়টি প্যানেল অংশ নিচ্ছে। তবে, নির্বাচনে আজমতগীর-জাফর প্যানেল, শাহেদ-রেহানা প্যানেল, তৌফিক-মাসুদ রানা প্যানেল ছাড়া অন্য প্যানেলগুলোতে সব পদে প্রার্থিতা নিশ্চিত হয়নি। অন্য প্যানেলগুলোর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের একতরফা সিদ্ধান্তে ও ঠুনকো অভিযোগে প্যানেলের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন। তারা বলেছেন, সমিতিতে দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় প্রার্থিতার ব্যাপারে প্যানেলগুলো শক্ত অবস্থান নেয়নি। সবাই চাচ্ছেন মোটামুটি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সমিতির নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক। আর সবাই যেহেতু প্রকারান্তরে সরকার সমর্থক তাই বাড়াবাড়ি করেনি কেউ।
এবারের নির্বাচনে আজমতগীর-জাফর প্যানেল, শাহেদ-রেহানা প্যানেল, তৌফিক-মাসুদ রানা প্যানেল, সরফরাজ-বাশার প্যানেল, নোমানি-শওকত প্যানেল, লাল-সবুজ প্যানেল এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও রয়েছেন। তবে সরফরাজ-বাশার প্যানেলের বেশিরভাগ সদস্যের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় তারা ভোটের মাঠে নেই বললেই চলে।
সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক দপ্তর প্রধান ও শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের সঙ্গে গত কয়েকদিন আলোচনা করে জানা গেছে, ভোটের মাঠে অনেকখানি এগিয়ে আছেন আজমতগীর-জাফর প্যানেল। এমনকি একাধিক জরিপেও এই প্যানেলের এগিয়ে থাকার খবর পাওয়া গেছে। এই প্যানেলে সভাপতি পদে রয়েছেন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক অলিউলস্নাহ, মো. আজমতগীর ও মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন সৈয়দ জাফর আলী।
অপরদিকে শাহেদ-রেহানা প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী। যিনি সমিতির বিদায় মহাসচিব। আর ইডেন মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোছা. রেহেনা পারভীন এই প্যানেলের মহাসচিব প্রার্থী।
অন্যদিকে শিক্ষা ক্যাডারের তরুণ সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে লাল-সবুজ প্যানেল। তারা অল্পসংখ্যক পদে প্রার্থী দিয়েছেন। সভাপতি ও মহাসচিব পদে তাদের কোনো প্রার্থী নেই। তবে এই প্যানেলের জনপ্রিয় প্রার্থী মাউশি অধিদপ্তরের শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক) চন্দ্র শেখর হালদার। যিনি কোষাধ্যক্ষ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আজমতগীর-জাফর প্যানেলের মহাসচিব প্রার্থী সৈয়দ জাফর আলী বলেন, 'বিভিন্ন কলেজে আমাদের নির্বাচনী কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় অনেক প্রার্থী প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। যা নির্বাচনী বিধি লংঘন। তবে ভোটাররা সবাই সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার অধিকারী, তারা যোগ্য ব্যক্তিকেই বেছে নেবেন।'
লাল-সবুজ প্যানেলের কোষাধ্যক্ষ প্রার্থী চন্দ্র শেখর হালদার বলেন, 'আমরা পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়েই আমাদের প্যানেল ঘোষণা করেছি। যেহেতু আমাদের প্রার্থী বেশিরভাগই নবীন তাই সভাপতি-মহাসচিবের মতো পদে আমরা প্রার্থী দেইনি। যেসব পদে আমরা প্রার্থী দিয়েছি সেখানে জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী