বাংলাদেশের প্রতি পাঁচজনে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
বাংলাদেশের প্রতি পাঁচজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ) উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। জাতীয় অধ্যাপক বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: আবদুল মালিক উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক বলে অভিহিত করে বলেন, উচ্চ রক্তচাপ এক দিনে হয় না, এটি থেকে মুক্ত থাকতে হলে বাকি জীবনই সচেতন থেকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, শুধু হাসপাতাল বাড়িয়ে এ সমস্যার সমাধান না খুঁজে প্রতিরোধ কর্মসূচিকে জোরদার করতে হবে এবং সবাইকে উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে উচ্চ রক্তচাপবিষয়ক সচেতনতামূলক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) অধ্যাপক আবদুল মালিক উপরিউক্ত বক্তব্য দেন।
বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস ২০২২ উপলক্ষে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের এনসিডিসি প্রোগ্রাম, প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে এই ‘মিট দ্য প্রেস’ আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুস, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ডা: সোহেল রেজা চৌধুরী ও কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা: মীর ইশরাকুজ্জামান ও প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের।
বক্তারা বলেন, উচ্চ রক্তচাপে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। বেশির ভাগ সময় এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ ও উপসর্গ থাকে না। চিকিৎসা করা না হলে বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিয়্যুর ও হার্ট বিট অনিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি ব্রেইন স্ট্রোক হতে পারে। এ ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপে কিডনির ক্ষতি হয়।
নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়। উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগ ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি হ্রাসে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করা, ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা, তামাক ও মদ্যপান পরিহার করা, অতিরিক্ত ওজন কমানো এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার বিষয়ে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
অধ্যাপক রোবেদ আমীন বলেন, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ২০১৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এনসিডি কর্নার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ‘উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং ফলোআপ’ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আগামীতে সারা দেশে ২০০ এনসিডি কর্নার চালু করা হবে।