বহিষ্কার হলো ইবির সেই ছাত্রলীগ কর্মী
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য দেশীয় অস্ত্রসহ আটক হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে সাংবাদিকদের মারতে গেলে থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এ দিকে গতকাল বুধবার কাব্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। কাব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার ঘোষগাতি গ্রামের ইয়াকুব হোসেনের ছেলে। জানা যায়, গত সোমবার রাতে প্রধান ফটকে মাদকাসক্ত অবস্থায় ট্রাকচালকের টাকা ছিনতাই করেন ছাত্রলীগ কর্মী কাব্য ও আল আমিন। পরে এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ক্ষিপ্ত হয়ে রামদা হাতে বিকেলে ক্যাম্পাসে মহড়া দেন কাব্য। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি অফিসার আবদুস সালাম সেলিম ও সাংবাদিকদের খুঁজতে থাকেন।
এ সময় তার সাথে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মাহবুব, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাসিন আজাদ ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আসাদকে দেখা যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রামদা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে আসেন কাব্য ও তার সহযোগীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম, ড. মুর্শিদ আলম, ড. আমজাদ হোসেন ও শরিফুল ইসলাম জুয়েল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে ইবি থানা পুলিশ কাব্যকে রামদাসহ আটক করে। এ ঘটনায় বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাব্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে। একই সাথে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলমকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান ও উপরেজিস্ট্রার আলিবর্দী খান।
এ ছাড়া এ ঘটনায় মামলা গ্রহণের জন্য ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে আবেদন পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি অফিসার আবদুস সালাম সেলিমকে ছুরি মারার হুমকি দিয়েছিলেন কাব্য। এ ছাড়াও নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে কয়েকবার মাদকাসক্ত অবস্থায় ধরলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, কাব্যসহ তার সহযোগীরা শাহজালাল সোহাগের অনুসারী তারা বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবনসহ চাঁদাবাজি ও নানা অপকর্ম করে বেড়ান। ইবি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আটকের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় মামলা দায়ের করে কুষ্টিয়া আদালতে পাঠানো হয়েছে।