ফেসবুক-ইউটিউবের অফিস আনার চেষ্টা চলছে
নিউজ ডেস্ক।।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, জন্ম থেকেই বাংলাদেশকে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধীরা এখন চক্রান্তের সহজ পথ হিসেবে বেছে
নিয়েছে ইউটিউব বা ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো। বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেশের বাইরে থেকে বা ফেক আইডি খুলে এগুলো করায় নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন। তবে এ নিয়ে আমরা ফেসবুক ও ইউটিউবের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সমস্যাগুলো জানিয়েছি। চেষ্টা করছি বাংলাদেশে তাদের অফিস আনতে।
তখন সহজেই এগুলো নিয়ন্ত্রণ বা অপরাধীদের শনাক্ত করতে পারব। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মোবাইল ফোনে কথাগুলো বলেন তিনি। মোস্তাফা জব্বার বলেন, এসব অপপ্রচারকারীর কারণে নাসিরনগর বা হাটহাজারীর মতো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে।
আমরা চাইলে ফেসবুক, ইউটিউব দেশে বন্ধ করে দিতে পারি, কিন্তু এখান থেকে নির্দিষ্ট কোনো কন্টেন্ট মুছে দিতে পারি না। শুধু রিপোর্ট করতে পারি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যারা ডিজিটাল নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন তারা সতর্কতার সঙ্গে সার্বক্ষণিক বিষয়গুলো মনিটর করছেন।
বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীবর্গ বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত সম্মানহানি, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস বা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এমন বিষয়গুলো নজরদারি করছেন। যতটা সম্ভব শনাক্ত করছেন। কিন্তু এগুলো সংখ্যায় এত বেশি যে মনিটর করা কঠিন। আবার ইউটিউব-ফেসবুক বন্ধ করে দিলেও সমাধান হবে না।
ভিপিএন ব্যবহার করে সাইটে ঢুকবে। তাই আমরা এ ধরনের বিতর্কিত উপাদান দেখলেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করছি। এ ক্ষেত্রে ২৫-৩০ ভাগ কন্টেন্ট তারা মুছে দিচ্ছে, বাকিটা থাকছে।
এজন্য চেষ্টা করছি ইউটিউব, ফেসবুকের অফিস বাংলাদেশে আনতে। তখন তাদের আমাদের আইন, বিধিবিধানের আওতায় আনতে পারব। তখন অপরাধীকে খুঁজে না পেলেও ফেসবুক-ইউটিউবকে তো পাব। ফেসবুক নিজের স্বার্থেই তখন আমাদের কথা শুনতে বাধ্য হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে এখন তাদের ব্যবহারকারী অনেক, এখান থেকে প্রচুর আয় করছে, সুতরাং এখন আর আমাদের আগের মতো অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। অনেক চেনামুখ দেশের বাইরে বসে দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও কুৎসা রটাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভিন্ন দেশে তাদের ধরা বা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জটিল প্রক্রিয়া।
তা করতে গেলে ওই দেশে মামলা করতে হবে, ওই দেশের সরকার কনভিন্স হলে বা আদালত নির্দেশ দিলে তাকে গ্রেফতার করা যাবে। এরপর হয়তো দেখা যাবে, সেখানকার আইনকানুনের আওতায় সে ছাড়া পেয়ে গেছে। এজন্যই আমরা চাইছি এ প্ল্যাটফরমগুলোর কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করতে। মন্ত্রী বলেন, একসময় ওদের সঙ্গে (ফেসবুক-ইউটিউব) আমাদের সরকারি পর্যায়ের কেউ কথাই বলতে পারত না। ২০১৮ সালে মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে গিয়ে প্রথম আমি ফেসবুকের সঙ্গে অফিশিয়ালি মিটিং করতে সক্ষম হই। সেই মিটিংয়ে সমস্যাগুলো জানাই। এখন আমাদের সঙ্গে ফেসবুকের যোগাযোগ রক্ষার একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়া আছে একজন বাংলাদেশি মেয়েকে। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে যোগাযোগটা এখনো আশানুরূপ নয়।
আমাদের কথাবার্তা শুনবে, আমাদের আইনকানুন মানবে, সে অবস্থায় আসতে পারিনি। আমরা চেষ্টা করছি ফেসবুক, ইউটিউবের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটা ফ্রেমওয়ার্কে আনতে। বাংলাদেশে যাতে তাদের অফিস থাকে। এগুলোর জন্য ধারাবাহিক চেষ্টা অব্যাহত আছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমাদের সমস্যা অনুধাবনের জায়গায় নিতে পারলেই কেবল এ সমস্যার সমাধান হবে।