ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ পাঠালেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সংগঠন 'ছবিঘর'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী 'মোহাম্মদ র্যালি'র দেখানো নির্দেশনা অনুসরণ করে বড় বড় সমাজ সেবী, মহল্লায়-মহল্লায়, বাড়ি-বাড়ি ধর্না দিয়ে এবং নিজ তহবিল থেকে অর্থ সংগ্রহ করে প্রায় শতাধিক ফিলিস্তিনি'র জন্য ওষুধ-পথ্য ও খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে 'ছবিঘর'র সংগঠনের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৩ মে) 'ছবিঘর'র শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতে তাদের কষ্টার্জিত টাকা 'মোহাম্মদ র্যালি'র মাধ্যমে হস্তান্তর করেন। সংগঠনটি তাদের খাদ্য ও ত্রাণ সহায়তার উদ্দেশ্যে দেওয়া নগদ টাকাকে 'ভালোবাসা পাঠিয়েছি' বলে অভিহিত করছেন।
বাংলাদেশের প্রথম কোনো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছবিঘর যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাতে সরাসরি ত্রাণ বিতরণের উদ্দেশ্যে নগদ অর্থ পাঠালো।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্য এখন যে সংঘাত চলছে তা ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে বড় আকারের। এবারের সংঘাতে নিহত হয়েছে প্রায় ২০০ জন ফিলিস্তিনি। সংঘাতে ইজরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিলো ব্যবসায়িক ভবন সহ আরও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ফিলিস্তিনকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্যই ইসরায়েল এ হামলা চালিয়েছে।
জানা যায়, ইসরায়েল যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করলেও এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানুষ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ফিলিস্তিনি দূতাবাসে সাহায্য পাঠিয়েছেন।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'ছবিঘর' সরাসরি তাদের ত্রাণ বিতরণের নিমিত্তে নগদ অর্থ পৌঁছে দিয়েছেন ফিলিস্তিনের গাজাতে। ছবিঘরের পক্ষ থেকে প্রায় ২০টি পরিবারের জন্য প্রথমে প্রায় ২০ হাজার টাকা সাহায্য পাঠানো হয়।
সেখানে ছবিঘরের পক্ষ থেকে 'মোহাম্মদ র্যালি' নামের এক ফিলিস্তিনি এই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
এ ব্যাপারে 'ছবিঘর'র সাধারণ সম্পাদক রাতুল ঘোষ জানান, 'তারা প্রথমেই চেষ্টা করে ফিলিস্তিনের গাজাতে সরাসরি ত্রাণ পাঠাবে। এ ব্যাপারে প্রথমে ছবিঘরের সদস্য ইরফান মাসুদ জারিফ তাদের সাহায্য করে এক ফিলিস্তিনি নাগরিক এর সাথে যোগাযোগ করতে কিন্তু পরবর্তীতে যোগাযোগ করার পর ফিলিস্তিনি সেই নাগরিক তা পাঠানোয় অসমর্থ হলে সবাই ভেঙে পরে। পরবর্তীতে আমরা আরোও একজনের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হই এবং আমাদের কার্যক্রম সফল করি।
ছবিঘর'র প্রতিষ্ঠিতা সভাপতি প্রিন্স ঘোষ জানান, তারা সকলে মিলে চেষ্টা করে ত্রাণের জন্য টাকা সংগ্রহ করতে এবং তা ফিলিস্তিনে প্রেরণ করতে।
তিনি আরোও বলেন, 'তারা তাদের ভালবাসা ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য পাঠিয়েছেন এবং তারা সব সময় তাদের সাথেই আছেন।
এই কার্যক্রমে সাহায্য করা ফিলিস্তিনি নাগরিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী 'মোহাম্মদ র্যালী' জানান, সাধারণ ফিলিস্তিনিদের এখন সাহায্য দরকার, গাজাবাসী কেউ ভাল নেই, বাংলাদেশ ও ছবিঘর'র এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার জন্য তারা হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাদের আঘাতে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের ছ'বিঘর'র সাহায্য পাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানায়, ইসরায়েলের বর্বরতায় গাজা এখন এক ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়েছে, খাবার নেই, বাড়ি নেই। মাথার ওপরের ছাদটুকুও কেড়ে নিয়েছে এই ইসরায়েল। বাংলাদেশের এই ভালবাসা কখনো ভোলা সম্ভব নয়।
উল্ল্যেখ্য ছবিঘর'র পক্ষ থেকে লিডাররা জানিয়েছেন, কিছুদিনের মধ্যে তারা আরোও প্রায় ১০০ পরিবারের জন্য নগদ অর্থ ও ঔষুধ পথ্য সাহায্য পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।