টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তানের বিদায়টা এক প্রকার লেখাই হয়ে গেছে। অঙ্কের হিসাব-নিকাশে কেবল নিঃশ্বাসটুকু বেঁচে আছে। ‘যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ’ প্রবাদে বিশ্বাস রেখে পাকিস্তান ক্রিকেট দলও শেষের আগে হাল ছাড়ছে না। ব্যাটিং বিপর্যয় সামলে বড় রান করে এবং বৃষ্টি আইনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩০ রানে হারিয়ে ওই বার্তা দিল বাবর আজমের দল।

বৃহস্পতিবার সিডনিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল না। তবে অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া সম্পর্কে আগ বাড়িয়ে যে কিছু বলার নেই সেটা আরও একবার প্রমাণ হলো। টস জিতে ব্যাট করে পাকিস্তান ৯ উইকেটে তোলে ১৮৫ রান। চার উইকেট হারানো প্রোটিয়ারা দু’বার বৃষ্টির বাধায় ১৪ ওভারে ১৪২ রানের লক্ষ্য পায়। শেষ ৫ ওভারে জয়ের জন্য ৭৩ রান দরকার ছিল প্রোটিয়াদের। ওই রানের কাছেও যেতে পারেনি প্রোটিয়ারা। আটকে যায় ৮ উইকেটে ১০৮ রান তুলে।

এই জয়েও পাকিস্তানের সেমিফাইনালের আশা উজ্জ্বল নয়। চার ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পাকিস্তানের। সমান ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্টও একই। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলেছে পাঁচ পয়েন্ট। প্রোটিয়ারা শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জিতলেই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সেমির আশা একপ্রকার শেষ। প্রোটিয়ারা হারলে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের এক দল উঠবে সেমিতে। আবার ৬ পয়েন্ট পাওয়া ভারত শেষ ম্যাচ খেলবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে ভারত হারলে নেট রান রেটের হিসেবে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সেমিতে যাওয়ার লড়ই হবে।

পাকিস্তানের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার ব্যর্থ হন। রিজওয়ান (৪), বাবর আজম (৬) ও শান মাসুদ (২) রানের দেখা পাননি। তবে ফখর জামানের জায়গায় একাদশে ঢোকা মোহাম্মদ হারিস ১১ বলে তিন ছক্কা ও দুই চারে ২৮ রানের ইনিংস খেলেন। পাকিস্তান ৪৩ রানে হারায় ৪ উইকেট।

ওখান থেকে ইফতিখার ও মোহাম্মদ নওয়াজ দলকে টানেন। তারা ৫২ রানের জুটি গড়েন। স্পিন অলরাউন্ডার নওয়াজ ফিরে যান ২৮ রান করে। ইফতিখার ও শাদাবের পরের জুটি থেকে ৮৩ রান পায় পাকিস্তান। শাদাব ফিরে যাওয়ার আগে ঝড় দেখান। ২২ বলে চারটি ছক্কা  ও দুই চারে ৫২ রান করেন। ইফতিখান খেলেন ৩৫ বলে ৫১ রানের ইনিংস।

জবাব দিতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুতে দুই সেরা ভরসা কুইন্টন ডি কক (০) ও রাইলি রুশোকে (৭) হারায়। তবে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ১৯ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৩৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। এইডেন মার্করাম ফিরে যান ২০ রান করে। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারায় প্রোটিয়া। বৃষ্টির পরে কঠিন লক্ষ্যটা পাড়ি দিতে পারেননি হেনরিক ক্লাসেন (১৫) ও ত্রিস্টান স্টাবসরা (১৮)।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এনরিক নরকিয়া দারুণ বোলিং করেছেন। ৪ ওভারে ৪১ রান দিলেও তিনি তুলে নেন ৪ উইকেট। এছাড়া রাবাদা, এনগিডি, পার্নেল ও শামসি একটি করে উইকেট নেন। পাকিস্তানের হয়ে ৩ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন শাহিন আফ্রিদি। শাদাব খান নেন ২ উইকেট। এছাড়া পেসার নাসিম শাহ, হারিস রউফ ও ওয়াসিম জুনিয়র একটি করে উইকেট নিয়েছেন।