প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি সহকারী শিক্ষক, কলেজে প্রভাষক
নিউজ ডেস্ক।।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কানাইয়ের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান। এর পাশাপাশি তিনি চাটমোহর মহিলা ডিগ্রি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষকও। পাঁচ বছর ধরে তিনি সরকারি চাকরি বিধি লঙ্ঘন করে নিয়মবর্হিভুতভাবে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে যাচ্ছেন।
শুধু তাই নয়, সম্প্রতি তিনি করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ ননএমপিও শিক্ষক ও কর্মচারীদের (সাধারণ) অনুকূলে সরকারের বিশেষ অনুদানের ৫ হাজার টাকার চেকও পেয়েছেন! অভিযুক্ত শিক্ষক দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি এবং সরকারি অনুদানের চেক গ্রহণের কথা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে উপজেলার ছাইকোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের ডা. সায়েতুল্লাহ’র ছেলে হাফিজুর রহমান একই ইউনিয়নের কানাইয়ের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। দীর্ঘদিন সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করার পর ২০১৫ সালে চাটমোহর মহিলা ডিগ্রি কলেজে সমাজকর্ম বিভাগে তৃতীয় শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে হাফিজুর রহমান ওই কলেজে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন।
পরবর্তীতে চাটমোহর মহিলা ডিগ্রি কলেজে তিনি সমাজকর্ম বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের অনুদান পাওয়ার জন্য কলেজ থেকে হাফিজুরসহ ৫ জনের নাম পাঠানো হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
এরপর হাফিজুর রহমানের নামে সরকারের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকার অনুদানের চেক আসে (চেক নং-৭৬৫৪৫৩৮)। গত ৮ জুলাই হাফিজুর রহমান ইউএনও অফিসে নিজে সাক্ষর করে ওই চেক নিয়ে যান।
বিষয়টি স্বীকার করে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সাবজেক্ট অনুমোদনের জন্য শিক্ষকের প্রয়োজন ছিল। সে কারণে আমি ওই কলেজে যোগদান করেছিলাম। তবে কলেজ থেকে বেতন নেই না। আমি রিজাইন দিয়ে দেবো।’
চেক গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কলেজে যেহেতু শিক্ষকের তালিকায় আমার নাম আছে তাই নাম পাঠানো হয়েছে। চেক আমি গ্রহণ করেছি, তবে চেকের টাকা উত্তোলন করিনি । চেকটি আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।’
এ ব্যাপারে চাটমোহর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ মাহমুদ সঞ্জু বলেন, ‘একসময় শিক্ষকের বেতনের ব্যাপারে সমস্যা ছিল। উনি (হাফিজুর রহমান) আমাদের হেল্প করেছেন। তবে উনি কলেজে থাকবেন না। আমরা তাকে ডিসচার্জ করে দেবো। ডিসচার্জ লেটার দিয়েও গেছেন সম্ভবত।’ অনুদানের চেক গ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘উনি (হাফিজুর রহমান) চেকটা নিয়ে থাকলে কাজটি সঠিক হয়নি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার কোনো সুযোগ নেই। এটা সুস্পষ্ট চাকরিবিধি লঙ্ঘন। আমি এই উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈকত ইসলাম বলেন, সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি কর্মচারি সরকারের অনুমোদন ব্যতীত অন্য কোনো চাকরি বা ব্যবসায় নিযুক্ত হতে পারবেন না। চেক নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিধি অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। সূত্রঃসমকাল